Sunday, August 9, 2015

ব্লগার হত্যা : নেপথ্য কারণ কি ?


-------------------------------------------
বিশ্ব শান্তির জন্য ইসলামে শান্তি বিঘ্নিত হোক এমন কোন কাজ মহানবী সঃ কখনও চাননি, আমরা তার অনুসারী হিসাবেও তা চাই না ।
কোনো ধর্মকে কটাক্ষ, অপমান ও ব্যঙ্গ করা ইসলাম অনুমোদন করে না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপসনালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ইসলামে জায়েজ নেই। কোনো ইমানদার ব্যক্তি অমুসলিমদের উপাসনালয়ে হামলা করতে পারে না। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা ও সদ্ব্যবহার ইসলামের অনুপম শিক্ষা। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা আমাদের প্রতিবেশী। আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণ ও সৌহার্দ প্রতিষ্ঠা পবিত্র কোরআনের নির্দেশ। মূর্তি ও প্রতিমা ভাংচুর করা তো দূরের কথা, তাদের গালি ও কটাক্ষ না করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম রয়েছে। মহানবীর (সা.) ২৩ বছরের নবুয়তি জীবনে অমুসলিমদের উপসনালয়ে আক্রমণ বা তাদের বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুকুম দিয়েছেন—এমন কোনো নজির ইতিহাসে নেই
সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম ইসলামে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করে ইহুদি-খ্রিস্টানদের নিয়ে যে চুক্তি করেন, তা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান। ‘মদিনা সনদ’ নামে খ্যাত এ সংবিধানে স্পষ্টই উল্লেখ আছে, ‘প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না। অপরাধের জন্য ব্যক্তি দায়ী হবে, সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
ব্লগার নিলয় নীলকে কারা হত্যা নিয়ে ব্লগে অনেক রকম কথা বলা হচ্ছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে সবারই। তিনিও তার মত প্রকাশ করেছেন। তিনি কেন নিহত হয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদিও একটি সংগঠন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এভাবে হত্যার দায় স্বীকার করার মধ্যে কতখানি সত্যতা আছে? আসলেই কি যারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে তারাই হত্যা করেছে নাকি অন্য কেউ সুযোগ নিয়েছে! তবে যে কোনটিই হতে পারে। কারন নিলয় নীল এর প্রোফাইল থেকে জানা যায় তিনি নিজেকে, রাজনৈতিক মতাদর্শ-সেকুলারিজম বলেছেন। আর তার লেখায়ও বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে সমালোচনা আছে।-Niloy Nil in Istition তাই এখানে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যদি ব্লগে লেখার কারনে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকে তবে কেউ সুযোগটা নিয়েছে কিনা? তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশ পুলিশ অবশ্যই সত্য খুঁজে বের করবে বলে আশা করি। ব্লগার নিজ বাসায় দিনে দুপুরে খুন হলো। আহমেদ রাজিব হায়দার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫ জন ব্লগার বিভিন্ন সময়ে খুন হলো। এ হত্যাকান্ডের পেছনে ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীকে দায়ি করা হয়। কখনো আনসারুল্লা বাংলা টিম কিংবা কখনো আনসার আল ইসলাম নামে কোন সংগঠন এসব হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে কিংবা গণমাধ্যমে মেইল পাঠিয়েছে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত একটা হত্যাকান্ডেরও ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। মূলত নিহত এ পাঁচজন ব্লগারই মুক্তচিন্তার লেখক। তারা ধর্মকে নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ্যপূর্ণ যুক্তি উপস্থাপন করে লেখালেখি করে। আর মূলত সমস্যাটি সেখানেই। কারণ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে থাকে তাদের প্রায় ৯৯ ভাগেরও বেশি লোক তাদের ধর্মের বিষয়ে একটা সফট কর্ণার ধারন করে থাকে। তখন ১ভাগের ও কম সংখ্যক লোক যদি ধর্ম নিয়ে এমন অগ্রহণযোগ্য কটাক্ষ্যপূর্ণ সমালোচনা করে লেখালেখি করে তখন সেটা কেউই সহজভাবে নেবেনা। আমি এ ধরনের হত্যাকান্ডকে কখনো সমর্থন করিনা। এখন মানুষ ব্লগার শুনলেই মনে করে লোকটি নাস্তিক। অর্থাৎ ব্লগার আর নাস্তিক এখন সমার্থক করে ফেলা হয়েছে। এভাবে হত্যাকারীর অবশ্যই বিচার হোক কিন্তু যারা ধর্ম নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ লেখালেখি করে ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠীকে আরো উগ্র করে তুলছে তাদেরকে অপরাধ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে সে জন্য কি উক্ত ব্লগারের কোন দায় নেই? গতকালকে যে ব্লগার নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় খুন হলো তারও লেখালেখির বিষয় ছিলো ধর্ম ও যুক্তি। তার লেখায়ও ইসলাম ধর্ম ও পবিত্রগ্রন্থ আল কুরআনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকবারই তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। ইসলাম ধর্বিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের প্রতিও তীব্রভাবে কটাক্ষ্য করা হয়েছে। তার বিভিন্ন লেখায় ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত দেয়ার মতো যথেষ্ট আলামত পাওয়া যায়। সুতরাং মুক্তচিন্তার মানেই ধর্মীয় সমালোচনা এমন বিকৃত চিন্তার ক্ষেত্র থেকে বের হয়েই ব্লগারদের লেখালেখি করা উচিৎ। লেখার যদি সীমা নির্ধারন করা না যায়, তবে মানুষের আক্রোষেরও সীমা সম্ভব নয়। মুক্তবুদ্ধি আর মুক্ত হতিয়ার হয়তো উভয়ই মানুষের “মৌলিক অধিকার”
প্রথমে বলি মত বিরোধের জের ধরে কাউকে হত্যা করা মোটেই কোন ধর্মই সমর্থন করে না। তাই সুস্থ মস্তিক্যে বলছি নিলয় এর হত্যাকারীরা যে আদৌ ইসলামকে অনুসরন করছে না। অবশ্যই এর সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের ধরা হউক। কারন এদের দারা শান্তির ধর্ম ইসলাম বদনাম হচ্ছে তাতে সন্ধেহ নেই।
আপনার মত প্রকাশ করুন তবে সীমার মধ্যে , দেখুন তখন আপনাদের প্রতি জনসমর্থন বাড়ে কি না। আর যদি মত প্রকাশের অপব্যবহার করেই যান তাহরে ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের পক্ষে সেই হাত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে জনসমর্থন বাড়বেই বাড়ছে- আর এর জন্য একমাত্র আপনারা মুক্তমনারাই দায়ী।