Friday, July 31, 2015

অবাক সোনার বাংলা



আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমেরিকার ভিসা পাইলে বাপে ভিটা বেছি
মেয়েটার জন্য ফরেন ডলার ওলা জামাই খুঁজি ,

ইন্টার নেটে লন্ডন ক্যানাডার বুড়ি সুন্দরি দেখি ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
এই দেশে কামাই করে বিদেশে জমি বাড়ি কিনি
ছেলে মেয়ে কে হাই হ্যালো ইংলিশ সেখাই
ঘরে বসে স্টার জলসা স্টার প্লাস দেখি ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমার ছেলে মরে নেতার পিছে, নেতার ছেলে বিদেশে
আমার ভাই তোমার ভাই নেতারা সব ভাই ভাই
গরীব মানুষের ঘরের খবর নেয়ার কেউ নাই ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
ঝুপ বুঝে কুপ মারি সেবার নামে নেতা সেজে ব্যবসা করি
নেতা ছেলে নেতা হয় রাজার ছেলে রাজা
গরীবের ট্যাক্সের টাকায় দিন রাত এয়ার কন্ডিশন চালায় ।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
রক্ত দিয়েছি রক্ত আরও দিব তবে জনতা নেতারা না
হরতাল দিয়েছি , অবরোধ দিয়েছি আরও দিব
নেতারা প্রেস কনফারেন্স করবে , আম জনতা পুরবে মরবে !!
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমলা নেতা আর সুবিধাবাদীরা যাবে প্রাইভেট কারে
কিছু রাস্তা আছে শুধু ভি আই পি চলে টক বগীয়ে
আমজনতা লক্কড় ঝক্কর লোকাল বাসে আটকা ট্রাফিক জ্যামে ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার নাই ,আছে সব প্রাইভেটে
টেস্টের নামে গরীব ঘুরে ডাক্তারের পছন্দের ল্যাবে
আমজনতার স্বাধীনতা লাল ফিতায় নিরবে কাদে ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি

Monday, July 27, 2015

স্বপ্নের চিরকুট


গতকাল রাতের অসম্পূর্ন কল্পনায়
ইনবক্সে অচেনা এক চিরকুট!
অনেকগুলো দিন পেরিয়ে তোমার চিরকুট !
ভেবেই আমার চোখ জুড়ে দুর্দান্ত উচ্ছাসের ঢেউ!
মেঘালয়ের সাদা মেঘ আর সরছে না
চিরকুট পড়বার পর মনে হলো সব ঠিকঠাক চলছে
তোমার পাঠানো চিরকুট
যেন ছোট একটা চিঠির
জানতে পারলাম ঘর-সংসার,
নতুন অথিতি, বাড়ির ছাদ আর
তোমার সোনালী দিন গুলো
তুমি স্বনির্ভর হবার স্বপ্ন দেখছ
ভুলে থাকার আরেক নাম অভিমান!
সেই অভিমানকেই ভেবে জড়িয়ে আছে তুমি।
তোমার মতো-মেঘালয়ের পাহাড় গুলোও
যেন আজকাল অভিমান করে আছে,
তার গায়ে জমে থাকা মেঘগুলো, অবচিত।
তিলতিল করে জমে থাকা অভিমান,
তোমাকে ছেড়ে আমাকেও গ্রাস করে নিচ্ছে ক্রমশ,
তাই বোধ হয়- সম্পর্ক গুলোতে ছড়াচ্ছে ম্লান হবার পূর্বাভাস।
তুমি জানতে চেয়েছ ভালো আছি কিনা?
ভালো থাকা এখন ততটাই কঠিন-যতটা কঠিন ভুলে থাকা!
ভালো থাকার আশায় সিগারেট ছেড়েছি,
জায়গা বদলেছি, ঘর-দুয়ার, সঙ্গ সব ছেড়েছি
নিজেকে রুটিন মাফিক বেঁধে ধরেও
ভালো থাকতে পারিনি; হয়ত পারবো না।
মেমসাহেব আমারও মাটি সরে যায় পা থেকে,
যন্ত্রনা আরো বেড়ে যায় লাভ স্টোরি পড়লে।
মসজিদ গির্জা, রামকৃষ্ণ মঠ সব কিছুর সামনেই
মিথ্যে অভিনয় করে ভালো থাকার চেষ্টা করি।
অক্ষরজীবীদের চোখে অশ্মরী জন্ম নেয়
আর জানতে ইচ্ছে হয় তুমি ভালো আছো তো?
তুমি হয়ত বলবে ভালো-খারাপ থাকাটা নিজের কাছে,
হয়তোবা তাই!
কিন্তু নিজেকে কার কাছে রাখবো বলতে পারো?
আমার ভালো থাকা আর আকাশ দেখা এখন সমান কথা।
সূর্যের মতো সত্যি এই যে,
কেউ হয়ত জানবেনা কোনদিন,হয়ত আমি আর-
খোলা আকাশ জানবে মন খারাপের কথা।
জানবে আমার ভাবনাতেও বিরহের তুলির আঁচর পড়ে,
সোনালী সে সময়কার সব স্মৃতির পাতায় আজ বন্দি।
আজকাল তোমার মতো কারো মুখায়ব দেখলেই ছুটে যাই,
সেই খরগোসের মতো দাঁত, সেই হাসি
এই বুঝি তুমি! পাথর
প্রতি মুহূর্তেই সময়ের দাসত্বের অনুবর হয়ে যাচ্ছি
ভালো কিংবা ভুলে থাকার চেষ্টায় ক্রমাগত পরাজিত
হবার শঙ্কায় ভুগছি।
তুমি ভেবে নিও মুদ্রার এ পিঠের মতো জীবন হলেও
আমি ভালো নেই;
একটু একটু করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি সময়ের কাছে।
জানিনা কেন তোমাকে-
খুব গভীরে, খুব গোপনে লোকচক্ষুর আড়াল করেছিলাম;
তবে মনে হতো তুমি যেন আমার রুবি পাথর
এ আলো শুধু আমার একার।
তোমাকে নিয়ে কোনদিন কিছু লেখা হয়ে উঠেনি
শুধু অচল পয়সার মতো করে লুকিয়ে রেখেছি
বুকের পাশ পকেটে
আজ শুধু বলবো,
যা আছে সুখ আমার তোমাতে মিশে যাক,
তুমি আলো হয়ে থেকো,
তোমার পৃথিবীতে,
তোমার গহীনে।

Thursday, July 23, 2015

অরন্যের পুস্প বন




তুমি অবাক হবে বলে কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল
আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল সাদা-কালো মেঘের ভেলা
ভাললাগার হাতছানি-শুধু তুমি আসবে বলেই নামছিল বৃষ্টি
কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো ফুটেছি-শুধু তোমারই তরে অরন্য ।
মিষ্টি আম, জাম,লিচু, কাঁঠাল তুলে রেখেছিলাম ডালিতে
মনের ছোট আয়োজন- শুধু তুমি আসবে বলেই আমি অবাক
সন্ধার তারাভরা আকাশ দেখে সেজেছিলাম আমি বাসন্তী রানি
পিঠা-পায়েস রেধেছিলাম পরম মমতায় তোমার জন্য অরন্য
আলতা, টিপ, কাঁচের চুড়ি আর নীল শাড়ী স্মিত হেসে ছিলাম
তোমায় দেখাব নীল পরী আর পরীরা পালাবে লজ্জায় আকাশে ।
চোখে-মুখে ভাললাগার মেঘ ছেয়ে থাকবে তোমার হাতের ছোঁয়ায়
শাড়ী,চুড়ি পরেছি, আলতা দিয়েছি পায়ে আর কপালে পরেছি টিপ
বেনীতে জড়িয়েছি বকুল ফুলের মালা, কাজল এঁকে দিয়েছি মায়া চোখে
বুকভরা আশা, কিছু সাজসজ্জা- শুধু তুমি আসবে বলেই আমার অরন্য
তুমি অবাক হবে বলে কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল পুস্পের
আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল সাদা-কালো মেঘের ভেলা অন্য রকম
সকালের কচি রোদ শুন্যে মিলায়, শালিকের ডানায় ভর করে আসে দুপুর
দুপুরটাকে তাড়িয়ে নেয় সাদা-কালো মেঘ, রাখলের সুরে আসে বিকাল
তাকিয়ে থাকি মেঠো পথ পানে- এইতো তুমি আসবে অরন্য এই পথে
অভিমান ভর করেছে নীল পরীর আকাশে! পুস্প ঝরে যায় অপেক্ষায়
গোধূলী বেলায় ব্যাথা জাগে মনে, সন্ধা তারায় আসে ভেসে বৃষ্টি
কাজল টানা চোখে ঝর্ণা বয়ে যায়, অভিমান জমে ভালবাসায়
সব আশাগুলো শূন্যে মিলায়, একাকীত্ব নামে অরন্যের পুস্প বনে ।

Wednesday, July 22, 2015

চন্দ্রবিজয়ী তিন নভোচারীর ঢাকা ভ্রমণ



ষাট দশকের শেষার্ধ, তখন সময়টা এমন ছিল যে পূর্ব পাকিস্তানীদের জীবনে খুব কম সময়ই উৎসবের উপলক্ষ্য আসতো। সব সময় এক আতংকে সময় কাটতো সবার, এই বুঝি পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের অধিকার, আমাদের দাবী ছিনিয়ে নিয়ে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দিবে আমাদের মুখ। তারপরও এ সময় কিছু ব্যাপার এদেশবাসীর উৎসবের উপলক্ষ্য নিয়ে এসেছিল তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চন্দ্র বিজয়ী তিন নভোচারীর স্বস্ত্রীক ঢাকা ভ্রমণ। নভোচারীত্রয় বিশ্বভ্রমনের ১৭ টি দেশের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে আগমন করেন।
১৯৬৯ সালের ২৭শে অক্টোবর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা নগরী এক উৎসবমুখর বেশ ধারন করে। সারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল নামে ঢাকায়। তৎকালীন কুর্মিটোলা বিমান বন্দর ও ঢাকায় প্রবেশের মুল রাস্তায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। রাস্তার দু-পাশে নারী-পুরুষ, ছেলে, বুড়ো সমানে ভিড় করতে থাকে।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের সময় মার্কিন বিশেষ বিমানটি এ্যাপোলো-১১ মিশনের নভোচারী ও চন্দ্রবিজয়ী বীর নেইল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স এবং তাঁদের স্ত্রীদের নিয়ে যখন বিমান বন্দরে অবতরণ করেন,তখন প্রতিরক্ষা বাহিনীর আবেষ্টনী ভেদ করে জনতা বিমানের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। তিন চন্দ্র বিজয়ী ও তাঁদের স্ত্রীরা বিমান থেকে বেরিয়ে আসলে জনতা তুমুল ও মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে তাঁদের অভিনন্দন জানায়। নভোচারীরাও হাত তুলে এ অভিবাদনের জবাব দেন। বিমান বন্দরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রঙীন পোষাক পরিধান করে তাঁদের ফুলের তোড়া দ্বারা বরণ করে নেয়। বিমান বন্দরে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তি, উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বহু সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানরত বহু মার্কিন নাগরিকও বিমান বন্দরে এসে উপস্থিত হন।
বিমান বন্দরটিকে নভোচারীদের ছবি ও প্রতিকৃ্তি এবং পাকিস্তান ও মার্কিন পতাকায় সুসজ্জিত করা হয়। একটি বিরাট ব্যানারে লেখা ছিল, “আপনাদের এ সাফল্যে সমগ্র মানবজাতি গৌরবান্বিত।” বিমান বন্দর হতে একখানা খোলা সেভ্রোলেট গাড়ীতে নভোচারীত্রয় এবং অপর একখানা গাড়ীতে মিসেস কলিন্স ও মিসেস অলড্রিনকে নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে শহরের প্রায় ন’মাইল রাস্তা পরিভ্রমণ করা হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছেলেরা ঢোল বাজিয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানায়। কেউ ফুলের তোড়া, কেউ ফুলের পাপড়ি, কেউবা অভিনন্দন লিখিত শব্দমালা চলন্ত গাড়ীর প্রতি নিক্ষেপ করে তাঁদের অভিনন্দন জানায়।
দীর্ঘ শোভাযাত্রা শেষে অতিথীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (বর্তমান শেরাটন) পৌছেন। সেখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা ভাষণ দেন। গভীর আনন্দের সহিত তাঁরা সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। মহাশূন্যচারীদের আগমন উপলক্ষে তাঁদের চাঁদে অবতরণ এবং পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ সময় নভোচারীদের স্ত্রীরাও স্থানীয় বিশিষ্ট মহিলা ও মহিলা সাংবাদিকদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন।
ঢাকা টেলিভিশন (বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশন) সাধারনত সোমাবার বন্ধ থাকলেও এদিন মহাশূন্যচারীদের আগমনের দৃশ্য সরাসরি প্রচারের জন্য বিশেষ অধিবেশনের ব্যবস্থা করে। বিকেলে পূর্ব পাকিস্তান সরকার নভোচারীদের এক সম্বর্ধনা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করে। গভর্ণমেন্ট হাউসে ৬জন বিউগল বাদকের নিনাদের মধ্য দিয়ে মহাশূন্যচারীদের আগমনীবার্তা ঘোষনা করা হয়। অনুষ্টানে উপ-মহাদেশের ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীবৃন্দ ছাড়াও শ্রমিক ও ছাত্রনেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মহাশূণ্যচারীগণ তৎকালীন গভর্নর জনাব আহসানের সাথে উপহার ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জনাব আহসান এ অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানেরও প্রতিনিধিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে অন্যতম আকর্ষন ছিল এ্যাপোলো-১১ রকেটের মডেল সন্নিবেশিত বিরাটকার একটি কেক। চন্দ্রবিজয়ী নভোচারী ও তাঁদের স্ত্রীদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে গভর্ণর আহসান বলেন, “এ বিরাট সাফল্য বিজ্ঞান ও কারিগরী বিজ্ঞানের বিজয় এবং একটি মহান সমাজের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বিপুল আকারে মানবিক ও বৈষয়িক সম্পদের সমুন্নয় সাধনেরই ফলশ্রুতি।” গভর্ণর পূর্ব পাকিস্তান ভূগোল সমিতির পক্ষ হতে মহাশূণ্যচারীদের একটি স্বর্ণপদক প্রদান করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রদানদের বাণী সম্বলিত যে ফলকটি মহাশূণ্যচারীগণ চন্দ্রতরীতে করে চাঁদে নিয়ে গিয়েছিলেন, তার একটি রেপ্লিকা তারা গভর্ণরের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে উপহার দেন। পাকিস্তানের জনগণের জন্য ফেলে আসা ফলকের একটি প্রতিকৃতিও তারা আহসানের নিকট প্রদান করেন।
মাত্র একুশ ঘন্টা ঢাকায় অবস্থানের পর চন্দ্রমানবরা পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় তাঁদের বিশেষ বিমানযোগে ব্যাংককের পথে ঢাকা ত্যাগ করেন। বিমান বন্দরে বহু লোকজন ও সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ তাঁদের বিদায় অভিবাদন জানান। এ সময় অনেকের চোখের কোণে জলের চিলিক দেখা যায়। স্বল্পসময়েই তারা এদেশের জনগণের হৃদয়ের মণি কোঠায় স্থান করে নেন।
তথ্যসূত্র-১৯৭০ সালে প্রকাশিত গাজীউর রহমান লিখিত ‘ রকেট ও চন্দ্র বিজয়ের।
উইকিপিডিয়ারও

Tuesday, July 21, 2015

ভয়ে মরি না হে সভ্যতা


আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
প্রতিনিয়ত নগ্ন করছো তোমারা সভ্যতা কে সভ্য হয়ে ,
সভ্যতা দিয়ে তার গলায় দিয়েছো ফাঁস দিবালোকে
কত দিন,আর কত দিন সভ্যতার পাঁয়ে থাকবে শেকল ?

মানা যায় না সভ্যতার কোন বিধান সভ্যতার অন্তরালে
অসভ্য নিবিড়তার তৃষ্ণায় জ্বলে পরকীয়ায় মাতনে প্রেম
কারুণিক ভালবাসার উষ্ণতায় আজও পথ চেয়ে দিক ভ্রান্তে
কিছুতেই চাপা দিয়ে রাখা যায়না দীর্ঘশ্বাস কাঁপা ঠোটে চুম্বনে !
আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
মানা যায় না সভ্যতার কোন বিধান অসভ্য সমাজে
ক্ষুধা নিয়ে খেয়ে ফেলি ইতিহাসের মানচিত্র বিবেকের দায়ে
অসভ্য নিবিড়তার তৃষ্ণায় জ্বলছে বুকের মধ্য মরূদ্যান।
সহস্র মৃত্যুর সমাবেশ থেকে অবশেষে জেগে উঠে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি
মনুষ্যত্বের বিলুপ্ত চেতনায় ক্ষুধার্ত শ্মশানের পাশেই তৃষ্ণার্ত প্রেতাত্মা!
অক্ষম দেবতার চারণে ঠুকছে মাথা প্রতিনিয়ত নগ্ন বিবেকের সভ্যতা
তোমরা মানুষ বলেই মনুষ্যত্বের বিলুপ্ত নির্মমতা,যত্তো অহংকার ধুকছ ।
আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
খুঁজে খুঁজে যেই জবাব আজ অবধি পাইনি ভাবতে ভাবতে
বিস্তীর্ণ বেদনা বয়ে যায় তনুতে অণুতে আঁতুড় ঘর থেকে
সমাজের রন্ধ্রে রান্ধ্রে যেই বর্বরতার আর্তনাদ সেই স্রোতে প্রবাহিত ।
সভ্য হলাম অসভ্য সব বসনের আধুনিক সংস্করণের মানুষ গুলো
তোমাদের মনুষ্য সভ্যতার আদর্শলিপিতে শেখা অক্ষর গুলো দেখি
নীতিবাক্যের নিকুচি করনের মধ্যদিয়ে আজ আমি সভ্য হলাম সমাজে
এছাড়া আমার আর কিছু করার সাধ্য ছিলোনা কখনোই হয়ত আমার

Monday, July 20, 2015

বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া


বৃষ্টির খেলা সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে
অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা কোন ছন্দ তুলে মাতাল সুরে
বৃষ্টি নাচে তোমার তনুমন ঢেউ তুলে যাও কি ঝংকারে ?
আমি বৃষ্টি চাই আমি বৃষ্টি চাই বার বার শ্যামল ছায়া তলে ।
বৃষ্টি কি আমার বন্ধু? বৃষ্টি কি আমার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা দেখি বার বার ,
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার আমায় কাদিয়ে
মনের কোণে জমাটবাঁধা মেঘই কি জটলা করে আকাশ জুড়ে?
ঝরে পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায় সব বেদনা নিংড়ে নিয়ে পথিকের পথে
বৃষ্টি মানে কথা ,বৃষ্টি মানে কোনও ব্যথা, বৃষ্টি মানে যন্ত্রণা, বৃষ্টিই সুখে?
আকাশে ভিড় জমাচ্ছে ঘন কালো মেঘের দল। বৃষ্টিরা আসছে হাওয়ার আঁচল উড়িয়ে।
একের পর এক স্বপ্ন বোনা হয়ে যাচ্ছে জলছবির আড়ালে বৃষ্টির মাতাল প্রকৃতিরই ছন্দে
কোথা হতে আসে এই কালো মেঘের দল?একটু একা হওয়ার জন্য ছটফট করে মন ,
কেন মনের জানালা খুলে সংসারী মনটাকে উথাল পাতাল করে তোলে?
ওগো মেঘ, আমি তোমার সঙ্গে একলা হতে চাই।
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলো দূরে, দূরে—আরও দূরে নিঝুম দ্বীপে
ঘরসংসারের যেন পুতুল খেলা ঘর সে শুধু আমার নিভৃত ক্ষণ, ওগো মেঘ,
আমি ঝরে ঝরে পরতে চাই বৃষ্টি হয়ে মোহনার চরে অরন্যের বুকে ।
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা আর স্বপ্ন হারাই সেই জলে ?
মেঘলা আকাশ বৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় আদিগন্ত ধানখেতের ওপর মেঘের ছায়া।
ধূসর হয়ে আসা বৃষ্টিজলে ভিজছে তালগাছের সারি, কুঁড়েঘর সংসার
অবিশ্রান্ত জলের ধারাস্নানে সে যেন এক জলজ ছায়াছবি আমারই মতন !
চিত্রকর বসেছে রং ছোপাতে বর্ষামোহিনীর ধানি-রং ঘাগরা আর মেঘ-রং ওড়নায়
যত বার তুলি বোলায়, তত বার সে মোহিনী খিলখিল হেসে জল ঢালে বৃষ্টি।
জল শুধু জল প্রিয়ার দু’নয়নে বৃথা রাঙিও না, সব রং ধুয়ে যাবে অপেক্ষার জলে
বরং রাখো আমায় তোমার রঙের পাত্রে আমি কেমন সবুজে সবুজ, নীলিমায় নীল।
চিত্রকর ভাবে, এ কে? কোন মোহিনী প্রিয়ার মায়া? বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া ডাকে তাকে— বলে,
এসো আমায় গ্রহণ করো সমর্পণের সুরের রঙ বেরঙের মেলায় তোমার কাছে চাওয়ার ছিল
বৃষ্টিতে ভিজবো, শুধু ভিজবো সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে ।।

Sunday, July 19, 2015

অনু গল্প - মতিঝিলের রিক্সা ওয়ালা


------------------------------------------------------
মতিঝিলের ব্যস্ত রাস্তায় একজন ভদ্রলোক
হারামজাদা !! চোখে দেখোস না রিকশা চালানোর সময় !!"
রিকশাচালকের উপরে চড়াও হয়ে গেলেন !!স্যুট টাই পরে অফিস থেকে ফিরছিলেন .এমন সময় এক রিকশার চাকা তার দামি প্যান্টে সামান্য চাকা দিয়ে ধূলা লাগিয়ে দেয় !!
কুত্তার বাচ্চা !! তোর রিকশা চালানো ছুটাবো আজকে !!"
"স্যার !! আমি দেখি নাই, স্যার !!"
স্যুট টাই পরিহিত একজন ভদ্রলোক একজন রিকশাওয়ালা প্রচন্ড জোরে চড় মারছেন, কিল ঘুষি মারছেন ... খুবই ইন্টারেস্টিং দৃশ্য ... অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছে, কেউ ঠেকাতে যাচ্ছে না !!
ব্যস্ত রাস্তায় অনেক আওয়াজ ...রিকশাওয়ালার গায়ের রং কালো ... তাই আকবর ভদ্র লোকের হাতের ছাপ পড়ে নি গালে !!
"যা এইখান থেকে ... এই এলাকা ছাইড়া যা শু*** বাচ্চা !!"
রিকশাওয়ালা দ্রুত রিকশা নিয়ে চলে গেলেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর সামনে সেখান থেকে ..
ভদ্র লোক গরম মাথায় যখন রাস্তা পার হতে লাগলো এমন সময় একটা একটা মটর সাইকেল ধাক্কা দেয় ছিতকে পাশের ড্রেনে পরে একদম পা ভেঙে জায় । মটর সাইকেল খুব দ্রত চলে যায়।
লোক জন ধরা ধরি করে ঐ আগের রিক্সায় তুলে দেয় । ভদ্র লোক তার বউ কে ইসলামি ব্যাংক হাস পাতালে বলে । সাজান পুর থেকে বউ হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে এমন সময় । রিক্সা ওলা তাকে খুব যত্ন করে নাময় । কুলে করে
জরুরী বিভাগে নেয় ।
ভদ্র লোক অবাক হয়ে দেখে সেই রিক্সা ওয়ালা । ভাড়া না নিয়ে চলে গেল ।
যাওয়ার সময় বলল , স্যার স্যুট টাই পড়লে মানুষ মানুষ হয় না । মানুষ হতে হলে মন বড় হতে হয় ।

বিঃ দ্রঃ- একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে..................।

বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া



বৃষ্টির খেলা সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে
অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা কোন ছন্দ তুলে মাতাল সুরে
বৃষ্টি নাচে তোমার তনুমন ঢেউ তুলে যাও কি ঝংকারে ?
আমি বৃষ্টি চাই আমি বৃষ্টি চাই বার বার শ্যামল ছায়া তলে ।
বৃষ্টি কি আমার বন্ধু? বৃষ্টি কি আমার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা দেখি বার বার ,
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার আমায় কাদিয়ে
মনের কোণে জমাটবাঁধা মেঘই কি জটলা করে আকাশ জুড়ে?
ঝরে পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায় সব বেদনা নিংড়ে নিয়ে পথিকের পথে
বৃষ্টি মানে কথা ,বৃষ্টি মানে কোনও ব্যথা, বৃষ্টি মানে যন্ত্রণা, বৃষ্টিই সুখে?
আকাশে ভিড় জমাচ্ছে ঘন কালো মেঘের দল। বৃষ্টিরা আসছে হাওয়ার আঁচল উড়িয়ে।
একের পর এক স্বপ্ন বোনা হয়ে যাচ্ছে জলছবির আড়ালে বৃষ্টির মাতাল প্রকৃতিরই ছন্দে
কোথা হতে আসে এই কালো মেঘের দল?একটু একা হওয়ার জন্য ছটফট করে মন ,
কেন মনের জানালা খুলে সংসারী মনটাকে উথাল পাতাল করে তোলে?
ওগো মেঘ, আমি তোমার সঙ্গে একলা হতে চাই।
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলো দূরে, দূরে—আরও দূরে নিঝুম দ্বীপে
ঘরসংসারের যেন পুতুল খেলা ঘর সে শুধু আমার নিভৃত ক্ষণ, ওগো মেঘ,
আমি ঝরে ঝরে পরতে চাই বৃষ্টি হয়ে মোহনার চরে অরন্যের বুকে ।
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা আর স্বপ্ন হারাই সেই জলে ?
মেঘলা আকাশ বৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় আদিগন্ত ধানখেতের ওপর মেঘের ছায়া।
ধূসর হয়ে আসা বৃষ্টিজলে ভিজছে তালগাছের সারি, কুঁড়েঘর সংসার
অবিশ্রান্ত জলের ধারাস্নানে সে যেন এক জলজ ছায়াছবি আমারই মতন !
চিত্রকর বসেছে রং ছোপাতে বর্ষামোহিনীর ধানি-রং ঘাগরা আর মেঘ-রং ওড়নায়
যত বার তুলি বোলায়, তত বার সে মোহিনী খিলখিল হেসে জল ঢালে বৃষ্টি।
জল শুধু জল প্রিয়ার দু’নয়নে বৃথা রাঙিও না, সব রং ধুয়ে যাবে অপেক্ষার জলে
বরং রাখো আমায় তোমার রঙের পাত্রে আমি কেমন সবুজে সবুজ, নীলিমায় নীল।
চিত্রকর ভাবে, এ কে? কোন মোহিনী প্রিয়ার মায়া? বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া ডাকে তাকে— বলে,
এসো আমায় গ্রহণ করো সমর্পণের সুরের রঙ বেরঙের মেলায় তোমার কাছে চাওয়ার ছিল
বৃষ্টিতে ভিজবো, শুধু ভিজবো সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে ।।

Friday, July 10, 2015

স্বর্ণহৃদয় দিয়ে শুধু তোমাকেই চাই


একদিন হারিয়ে ছিলাম আমি গভীর রাতে নিঝুম অরণ্যে
এক অদ্ভূত অনুভূতিতে জোনাকি আমাকে আলো দিল ,
যে অনুভূতির আমি হয়েছিলাম সম্পূর্ণ অন্য কেউ হয়ত !
যে অনুভূতি ক্ষণে ক্ষণে বিস্ফোরিত করছিল আমাকে,
সুপারনোভা মহাবিস্ফোরণের মত
আমার হৃদয় আলো পড়ছিল যেন চতুর্দিকে;
আকাশের অসংখ্য তারার সাথে
একাত্ম হয়েছিলাম সেই রাতে আমি,
যেন পুরো আকাশভর্তি তারা হঠাৎ খসে পড়ে
সরাসরি হয়েছিল পতিত, আমার হৃদয়ে!
এক আলোকবর্ষ পর, এক মুহূর্ত পর,
মনুষ্যজীবনের সব উচ্চারণে হয়ে উঠে প্রকাশিত,
আবার পরমুহূর্তে এক প্রচন্ড চাপে
সেই একই হৃদয় পরিণত হচ্ছিল এক কৃষ্ণগহ্বরে।
সরল কণিকা থেকে প্রচন্ড আবেগে পরিণত হচ্ছিলাম
ভারী কোন মৌলে,
আবার নিউট্রনীয় আবেগে
হৃদয় পরমাণুর ভাঙ্গনও হচ্ছিল অবিরত।
তাই অবশিষ্ট নেই কোন কৌতূহল;
এখন তাই আলোকে হত্যা করি প্রচন্ড নির্মমতায়,
আর আমার গৃহকোণ ভরে উঠে অন্ধকার আলোয়।
কিন্তু নৈঃশব্দের অন্ধকারেও আমার দু’চোখ থাকে জেগে, অপলক,
তারা অসম্ভব তীব্রতায় তাদের চারপাশ দেখে যায়,
যেন অন্ধকারেই শুধু সমস্ত পৃথিবী তাদের কাছে হয়ে উঠে সুস্পষ্ট!
অবশ্য তারপরও মুক্তি পাই আমি কিছুতেই;
রূদ্ধ নিঃশ্বাসে অপেক্ষা করতে থাকি
রাত নেমে আসার পর এই আদিগন্ত বিশাল প্রান্তরে
অনুভব করে এক প্রাচীন মানবীয় শিহরণের প্রহার,
আমি চিৎকার করে উঠি-
আর কিছুই না চাইনা আজ,
তোমার ওই স্বর্ণহৃদয় দিয়ে শুধু তোমাকেই চাই
শুধু একটিবার তাকাও হে প্রভু দয়া করে ।

Tuesday, July 7, 2015

ভাবতে হয়


হাসতে গেলেও ভাবতে হয়
কাদতে গেলেও ভাবতে হয়
বলতে গেলেও ভাবতে হয়
শুনতে গেলেও ভাবতে হয়
পড়তে গেলেও ভাবতে হয়
লিখতে গেলেও ভাবতে হয়
রানতে গেলেও ভাবতে হয়
বারতে গেলেও ভাবতে হয়
আনতে গেলেও ভাবতে হয়
দিতে গেলেও ভাবতে হয়
জানতে গেলেও ভাবতে হয়
জানাতে গেলেও ভাবতে হয়
খাইতে গেলেও ভাবতে হয়
খাওয়াতে গেলেও ভাবতে হয়
ভাবনার দুনিয়াই শুধু ভাবতে হয়