Saturday, December 19, 2015

রহস্য গল্প-- নীলার নীল ডায়রি

শীতের সকাল বেশ কুয়াশা পড়ছে অরন্য কুয়াশার জন্য ঠিক মতে গাড়ি চালাতে পারছে না । এমনিতে সারারাত ঘুমাই নি। রাত ৮ টায় রাঙ্গামাটি থেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছে রাস্তার অবস্তা ভাল না সস্কারের কাজ চলছে । অরন্যের চোখের বাতি নিভু নিভু করছে। কিন্তু এখন আর ঘুমিয়ে কাজ নেই। ভাবছে নাস্তাটা করে নিবে রাস্তার কোন হোটেল থেকে । মানি ব্যাগ টা পকেটে নিয়ে গাড়ি থামালো কুমিল্লার ময়না মতির কাছে একটা হোটেলে । শীতের সকাল। রাস্তা ঘাটে লোক জন তেমন নেই। দোকান গুলো এখনো খোলেনি।অরন্য আলী হোটেলের দিকে হাঁটছিল । ঘুমের কারনে চোখ খোলা রাখতে পারছি না। ভাল করে চোখে মুখে পানি দিয়ে নাস্তা করে তিন কাপ চা গ্লাসে ঢেলে নীল । চা শেষ করে আবার গাড়ি ছাড়লো । ভোর তখন প্রায় ছয়টা । কুয়াশার মধ্য কিছু বুঝে উঠার মনে হল গাড়িতে কেউ ধাক্কা খেয়েছে । গাড়িটা থামালো । পিছনে একটু দূর হাঁটার পর দেখলো ফুপিয়ে কাঁদছে। যাক বাবা বেঁচে আছে । নীল রঙের শাড়ি পরা একজন মহিলা । --কি খুব বেশি ব্যথা পেয়েছেন / - না সাইড গ্লাসের বারি ছিল । -- রাস্তা দেখে পার হবেন না । -- আরে রাস্তা পার হতে চাই নাই । বাস মনে করে হাত দেখিয়ে ছিলাম । অরন্যের গা দিয়ে যেন ৪৪০ ভোল্ট এর বিদ্যুৎ ছুঁয়ে গেলও। অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।এ তো আকাশ থেকে নেমে আসা নীল পরী । মনে মনে বললো পরী তোমার ডানা গুলো কোথায় ? মেয়েটি কান্না ভেজা চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটির চোখে কিছু একটা আছে। অদ্ভুত এক মায়া যা দেখলে মনে হয় বুকের ভেতর কোথায় যেন এক আদ্ভুত শূন্যতা সৃষ্টি হয়। মেয়েটিকে আবার জিজ্ঞাস করলো ঃ- কাঁদছেন কেন? ব্যথা তো পান নাই মেয়েটি কিছু বলল না। ভীতু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। অরন্য দাড়িয়ে আছে । মনে হচ্ছে মেয়েটি ভয় পাচ্ছে। অবশ্য ভয় পাবারই কথা। সারা রাত ঘুমাই নি। চোখ লাল টমেটো হয়ে আছে। চেহারার ১২ টা বেজে আছে। অরন্য বলল - আপনি কি কোনো সমস্যায় পরেছেন ? এখনে বসে এভাবে কাঁদছেন না মেয়েটি অরন্য অবাক করে দিয়ে বললঃ আমাকে একটু আপনার সাথে নিতে পারবেন? অরন্য ভ্যবচেকা খেয়ে গেল । মনে মনে এটাই ভাবছিল । অরন্য বলল--- পারব। আপনার সাথে কি কেউ নেই? ঃ না। ঃ ঠিক আছে আপনি একটু সামনে আসেন ওই খানে আমার গাড়ি আছে। মেয়েটি উঠে বসলো গাড়িতে । অরন্য নীরবতা ভেঙ্গে মেয়েটিকে জিজ্ঞাস করলো ? ঃ আপনার নাম কি? মেয়েটি মুখ তুলে তাকালো। কিন্তু কিছু বলল না। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো। হঠাৎ মেয়েটি বলে উঠলঃ আমি নীলা । আমার বাসা ঢাকা । বান্ধবির সাথে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম এখানে বাস থেকে নেমেছিলাম। কারন আমার এক বন্ধু এখানে থাকবে বলেছিল । অরন্যঃ আপনার সাথে মোবাইল নেই। ঃ না। আমি মোবাইল ব্যবহার করি না। ঃ আপনার বাবার মা কারো ফোন নাম্বার আছে? ঃ আমি নম্বর মনে রাখতে পারি না। ঃ তো এখন কি করবেন? ঃ জানি না। মেয়েটি আবার ফুপিয়ে কান্না শুরু করল। ঃ আচ্ছা আপনি কান্না থামান। আপনি কাঁদবেন না। প্লীজ। আপনার বাসার ঠিকানা জানেন? ঃ জানি। ঃ ঠিক আছে আমি আপনাকে ওখানে পৌছে দিয়ে আসব। আপনি চিন্তা করবেন না। ঃ আপনি কিছু খেয়েছেন? ঃ না। ঠিক আছে সামনে থেকে নাস্তা করেন। তার পর আমার রওনা দিব। মেয়েটি বলল থাক নাস্তা করবো না। আমার একটা উপকার করবেন । ঃ- হ্যা কেন করবো না। আপনি যে বেঁচে আছেন । মরে গেলে তো সারা জীবন আপনার জন্য দুঃখ পেতাম ঃ- আসলে এক সময় আমরা সবাই মরা যাব । কেউ আগে কেউ পরে । ঃ- আপনার কি উপকার করবো বলুন । যে কুয়াশা সামনে গাড়িতে কিছুই দেখা যায় না। ঃ- আমি আসলে বাসা থেকে না বলে চলে আসছিলাম । আমার বান্ধবির বাড়িতে । আপনি ঃ- আমার আব্বু কে বলবেন আমাদের ঘরে পুরাত বুক সেলফে আমার একটা নীল রঙের ডাইরি আছে । ডাইরি টা পরে যদি আমাকে ক্ষমা করে তাহালে আপনি বলবেন - আমার ঠিকানা মতে চলে আসতে । আমার ঠিকানা লিখা আছে বুক সেলফের ১১৩ নং বইয়ের ১১৩নং পাতায় । ঃ- না আমি সামনে নেমে যাব । যদি আপনি আমার এ কাজ করে দেন তাহালে আপনি আব্বুর সাথে চলে আসবেন । আমাকে মেঘ নার টুল প্লাজায় নামিয়ে দিয়েন । আব্বু আসলেই ঢাকা যাব অরন্য ভাবছে ভালই হোল জীবনে এমন একটা মেয়ে সে খুজছিল শান্ত ও নরম । মেয়েটি আরামে ঘুমাচ্ছে। অরন্য তাকিয়ে আছে নীলা মেয়েটি দিকে। কি নিস্পাপ মুখ। ঘুমন্ত মানুষ কে দেখতে নিস্পাপ লাগে। মেয়েটি দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে আদ্ভুত এক মায়ার জালে আটকা পরে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এই মেয়েটির প্রেমে পরে গেছে। জানি না এমন কেন মনে হচ্ছে। মেয়েটি হতাৎ বলল থাক আমাকে ঐ বাসস্টপে নামিয়ে দিন । আমার বাসার ঠিকানা লিখে নিন । অরন্য মেয়েটিকে তার মোবাইল নাম্বার লিখে দিল । ঠিকানা লিখে নীল । মেয়েটি নেমে গেল । অরন্যের ঘুম হাড়িয়ে গেল ।পাক্কা দু ঘণ্টা । এর মধ্য কত কি ? যাই হোক বিকেলে একটা লম্বা ঘুম দিয়ে উঠে বিকেল ৪ টায় । নীলার বাসার সামনে দাড়িয়ে কলিং বেল বাজালো । এটা মাঝ বয়সী মহিলা দরজা খুলে দিলো। চেহারা একদম নীলার মত। অরন্য বলল -আপনি নিশ্চয় নীলার মা । মহিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কয়েক মুহূর্ত পর উনি বলল “তুমি নীলা কে কী ভাবে চেন? অরন্য বলল নীলার সাথে কি ভাবে দেখা হয়েছে । উনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমাকে কিছু না বলে উনি ভিতরে চলে গেলেন। অরন্য বোকার মত দাড়িয়ে রইলো । এর মধ্য অরন্য কে ডাক দিলেন। অরন্য কে একটি ছবি দেখালো । ছবিটি নীলার । ঃ তুমি কি ওর কথা বলছ? ঃ জি ওর কথা বলছি ঃ- ঠিক আছে বাবা ভিতরে এসো । নীলার মা কাঁদছে আর বলছে তাহালে আমার মেয়ে বেঁচে আছে । তুমি তাকে দেখেছ । নীলার বাবা কি বোকার মত কান্না করছ । কে বাবা তুমি । আমার মেয়ে মারা গেছে ৭ বছর হল । আমি তাকে নিজের হাতে লালমাই পাহারের পাশে এক গ্রামে মাটি দিয়ে এসেছি । কে বা কারা জানি ওকে মেরে রাস্তায় ফেলে গেছে । আমরা টা জানি না। মামলা টা সি আই ডি তে আছে । অরন্যের সারা শরীর আবার যেন ৪৪০ ভোল্ট এর বিদ্যুৎ ছুঁয়ে গেলও। বলেন কি ? আমি যে আজ ভোরে আমার সাথে ঢাকা আসতে চাইলো । নীলার বাবা বলল তোমার মত একজন বছর খানেক আগে একবার তোমার মত বলেছিল । যখন শুনল সে মারা গেছে তখনেই সে তাড়াতাড়ি চলে গেল । আমাকে কি জানি বলতে চেয়ে আর বলল না । না বলেই চলে গেল । অরন্য বলল - আপনি জানেন না নীলা কিভাবে মারা গেল । কার সাথে চলে গেল । নীলার বাবা বলল - নিনা খুব কম কথা বলত । ও ছিল শান্ত স্বভাবের । আমরা জানতেই পারি নাই কে তাকে নিয়ে গেল । তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে । অরন্য বলল- আপনার ঘরে পুরাতন বুক সেলফ টা কোথায় । আমাকে নিয়ে জান । অরন্য চেয়ে আছে শত শত বই। একটা একটা করে খুঁজে লাগলো নীল রঙের ডাইরি । পেয়ে গেল । নীলার বাবাকে ডাইরি টা দিল । আবার সে খুঁজতে লাগলো ১১৩ নং বই । পেয়ে গেল । ১১৩ নং পাতায় দেখতে পেল একটা চিঠি ,ঠিকানা ও ফোন নাম্বার সব দেয়া আছে । নীলার বাবা ডাইরি পড়ছে আর কাঁদছে । নীলার মা ফোন করে সি আই ডি কে জানালো । তিন মাস পরে সেই ঘাতক পুলিশে ধরা পড়লো । মাঝে মধ্য অরন্য আসে নীলার বাসায় । আজ অরন্য নীলার বাবাকে নিয়ে সেই লাল মাই পাহারের কাছে গেল । নীলার কবরে একটা বকুল ফুলের গাছ লাগালো । চারা বকুল গাছ কিন্তু কয়েকটা বকুল ফুল আছে । বেশ কিছু দিন পরের কথা অরন্য ঘুম থেকে উঠে দেখে তার বিছানার বালিশের পাশে কিছু বকুল ফুল ..............................।।

Tuesday, December 8, 2015

কুয়াশার প্রথম রোদ

---------------------------- সেলিনা জাহান প্রিয়া ১ আজ প্রথম রোদ দেখলাম কুয়াশার ডুব দিয়েছে জানালা খুলে শীতল বাতাসে রোদ উকি দেয় ঘুমে প্রেম নয়, নতুন বউ লাজুক চাহনিতে সূর্যদয় আজ আলোর অভাব পড়েছে কুয়াশার উম চাদরের গায়ে । ২ তুমি এলে না! অভিমানী মন আমার আমিও যাব না এক পা দু পা করে বাড়ির সামনে দিয়ে পথিক যায় নিদারুণ সত্যি যে তুমি আজও আসলে না পথ ভুলে কাজল আঁখি পথ চেয়ে থাকে কুয়াশার অন্ধকারে ! ৩ আমি আজ খুব ভোরে শিউলি ফুলের মালা বানাবো কোন উষ্ণতা নয়,একমুঠো ভালবাসায় এ পথে এসো আমার মালায় থাকবে কিছু শিশির আর কুয়াশার রঙ সত্যি,যদি রোদ উঠে শিশির হাসবে কুয়াশা পালাবে ।। ৪ তুমি আসবে কি না জানি না তবুও শীত আসে শিমুল বনে কত ফুল ঝরে পথিকের পায়ে পায়ে আমি হয়ত তেমন ফুল পথিক তুমি যদি এই বন ফুল না চেন টা কি আমার ভুল তুমি আসবে ভেবে কত দিন আমি ঝরেছি বকুল হয়ে । ৫ আমার চুল আমার আলতা রাঙা পা মেহেদী মাখা হাত ধীর ধীরে কুয়সায় ঝরে পড়ে কিছু রেশমি চুড়ির শব্দ নুপুরের নিক্কনে ময়ূরীর পথ চলা কুয়াশার নীল চাদরে পথিক তুমি রোদ হয়ে এসো আমার বকুল তলের ছায়াতে । ৬ আমি দেখি পথিক তোমার পদ চিহ্ন ধুলায় মেখে থাকে সেই পথে চেয়ে থাকি কত মায়া সুধা চোখের কাজল পড়ে অনুরাগী প্রেমিক তুমি অনুরাগে ছুয়াও তোমার মায়া আমি না হয় ঘর কোনে লুকিয়ে দেখি রোদের পথ চলা । ৭ পথিক সময় চলে যায় সময়ের নিয়মে মহাকালে পথে তুমিও চলে যাও কিছু না বলে একটু আঁখির পলক দিয়ে চোখের ভাষায় তুমি আলো জ্বেলে দেখে নাও কুয়াশার প্রান যে পথে শিমুল বকুল ঝরে তাতে লিখা আছে কত মনের গান । ৮ তুমি যত বার স্পর্শ করো শীতের ঝরে পরা কুয়াশার শিশির তাতে মিশে আছে ঘর কোনে কিশোরী মেয়েটির আঁখি জল ঠোঁটে তাঁর লাজুক হাসি নাকে তাঁর লবণাক্ত জল ছবির বিন্দু ভাগ্যিস প্রেম হৃদয়ে গভীর হয় তাই ঠোঁট মুছে চুপ থাকা যায় । ৯ “ভালোবাসি” তোমার জন্য বরাদ্দ আছে গভীরতম বিশ্বাস ভালোবাসি” আত্মসমর্পণ করলাম তোমার কাছে বিশ্বাসে “ভালোবাসি” চাইলে ভালোবাসা নিতে পারো সবটুকু বিশ্বাসে “ভালোবাসি” আজ প্রথম রোদ দেখলাম কুয়াশার পথিক হৃদয়ে ।

Friday, December 4, 2015

মানুষ জন্মত যাযাবর ---------------------

------------ shelina jahan priya অচেনা পথে হেঁটে যাওয়া অজানার মাঝে আমিও একজন কত শত ফালং পথ দিয়েছি পারি জাফলং থেকে নিঝুম দ্বীপ। শুধু দু পায়ে হেঁটে চলেছি ছুটে, এক অজানা মায়ার বাঁধনে , গ্রীষ্ম থেকে শীত বর্ষার জলে পথ একলা পাড়ি দিয়েছি আমি। শুধু একটা নক্ষত্র আমি দেখছি কপ্তাইয়ের শীতল নীল জলে পাহারের চূড়ার উপর সে ডাহুকের গানে তাঁর সুর ছড়িয়েছে আমি দখিনের বাতাসে ছেড়েছি সাম্পানের তরী তাঁর ঘাটে শান্ত জলে ঢিল ছোড়ার আগে বুঝিনি তরঙ্গ আছে অনুভূতে । খেয়ালীপনায় অস্তিত্বের যোগ বিয়োগে অপ্রাপ্তির খোলসে মুড়ে তৃণ লতার নির্জনতার বাউলের গানে মাঝে আমিও একজন জলহীন খরায় শুষ্ক দু-নেত্রের ছদ্মবেশী সময়ের পথিক আমি মন সুখে ডুব দেই তিরতির কাঁপা শ্যাওলার আয়নার জলে। পথিকের উল্লাসের উনুনে ধোঁয়া জোটেনা, উড় শুধু ছাই বনফুল,থরে থরে আলোর সোপানে কিছু ভেজা জোৎস্না আমি গৃহত্যাগী,সন্ন্যাসী হয়ে নয়,পৃথিবীর একজন পথিক হয়ে আমি স্তব্ধ মৃত্তিকার সুপ্তানলে জেগে উঠি চিৎকারে পস্প কানুনে । ঘুড়ির শোকে আকাশ খেলেনা পুড়ছে যে নাটায়ের । আমি খেয়ালী, হেঁয়ালি, পৌষালী ঝরা পাতার গল্প হয়ে ঘুরে বেড়াই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বদলেছি যত অন্ধকারের জীবনের জন্য আমার পৃথিবীর খুব অল্প সময়ের অতিথি হয়ে জন্মত যাযাবর মানব জীবন শিমুলের মত সুন্দর হয়ে সবাই ফুটে সময় শেষে ঝরে পারে মাটিতে ।

Thursday, October 8, 2015

নিঝুম দ্বীপ


-----------------------------------
তোমাদের সমুদ্র সম হৃদয়ে আমি নিঝুম দ্বীপের প্রেম
যেখানে শান্ত জলরাশি নিবিড় মায়ায় ডাকে প্রাণের তরে ।
হিমালয়ের বিন্দু বিন্দু জলের পলি কনায় ভেসে আসে মমতা
ক্ষণকাল নদী মোহনা পেরিয়ে জল সমুদ্রে বাঁধে নিয়মের সংসার ।
ধ্যানের সুরভি মেখে হাঁটি সবুজ কেওরা বনে বলগা হরিণের সাথে
খুঁজে পাই তোমার সমুদ্র বুকে বিস্তৃত শাখা-প্রশাখার ডুবচর প্রেম!
আমি রাধা নই শ্যাম কেউ চাইনা শুধু বিবিধ নিয়মে সমুদ্রের দ্বীপ বালিকা
আমার চার দিক থই থই জল রাশি আমি যেন তোমার বুকেই সেই দ্বীপ
প্রেমময় প্রতিটি পলিমাটিতে লিখে যাই জীবনের বহমান সূত্রমালা
ভাঙ্গা গড়া জীবনে ভরসা শুধু বিধানের নিয়ম ভেঙে গড়ি নিঝুম দ্বীপ ।
জিবনের তোমাকে ভেবে ভেবে সূত্রের বিন্যাসে লাগে অসীমের ঢেউ
তোমার প্রেমে সমুদ্র বালিকার মন দুলে ওঠে অবেগর সাথে ব্যাকুলতায়
হয়ত বাতাসে পাল হয়ে বেসামাল নৌকায় লাগে দোলা আমার
শসমুদ্র বিশাল লোনা খেলা জলে জেগে ওঠে অপার মহিমায় নিঝুম দ্বীপ ।
সমুদ্র মন্থনের পর উঠে আসা যতো সুন্দর তার সব চেয়ে দেখ এ দ্বীপে
শুধু প্রগাঢ় নীল আমি সমুদ্রের সেই নীল পানে নীলকণ্ঠ নিঝুম বালিকা
আলোর আধারে সমুদ্রের মাঝে নক্ষত্রের রাতে মাতাল ঘোরে চেয়ে থাকি
অচেনা হয় যদি, তোমারে চিনিতে চিনিতে আবার শীতল জলে ভাসি
সমুদ্র তোমার জন্য সমস্ত গোলাপের পাপড়ি আমার আচলে রাখি তোমার জন্য
বেলা যায় জীবনের ঢেউ তোলে দ্বীপ বালিকা কিছুই জানে নাকো কেউ !
যে শিশির চলে গেছে সিঁদুর-সূর্য নিয়ে নিদারুণ মাহা কালের পথে সমুদ্র পথে
তার তরে অচেনা জনপদের নিঝুম দ্বীপ কেন জাগে অচেনা ঢেউ !

Thursday, October 1, 2015

হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি
---------------------------------------------
চলো হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি ময়ূরাক্ষী নদী’র তীর ধরে
হিম-হিম রাতের লজ্জা উষ্ণতায় ঢেকে দিয়ে আমরা দু’জন
এক টুকরো সবুজ উষ্ণতায় স্বপ্নের ভেতরে যেন ঠিকানা খুঁজি,
ঐ নদী আমার চোখের দিকে তাকাতে পারে না প্রেমের আলিঙ্গনে ।

আকাশ কাঁদুক অনিমেষে অথবা- চন্দ্র বিঁছিয়ে যাক আলগোছে
রুপোলী মায়ার জালে চলো হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি এ পথে
ভারী অদ্ভুত তবু অদম্য আলোর ঝলক স্পর্শ করে মায়াবী মন
শরীরে রেশমি কাপড় চড়ায়ে উষ্ণ অনুভূতি,সমুদ্রের জলে ভেজা ।
পূর্ণ-পূর্ণিমা রাতে জোছনার মেলায় চলো হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি
তক্ষক হয়তো ডেকেই যাবে; প্রহরে-প্রহরে তবুও রাত হবে ধীরে- ধীরে
হৃদয় গহনে ঘোরে স্মৃতির স্রোত। হায় যৌবন, ভালোবাসার কাঙালি হয়
চারদিকে বয়ে গেছে শুনশান প্রাচীনতম ময়ূরাক্ষী নদ-নদী প্রেমের জোয়ারে ।
ইথারের দুর শব্দে বাতাসে বাঁজে তার ধ্বনি রিনরিনে এক সুমধুর সুর শুনি
আমি কান পেতে শুনি ভালবাসায় আর ভাললাগার পরম আবেগে সময়
শেষ রাতের শিশির ঝকমক করে উত্তরের ঝিরিঝিরি হিমেল হাওয়ায় এ পথ
কাঁপন ধরায় আমার শরীরে ,লাজুক হেসে বলে চলো হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি ।
সরু অলি-গলি- মাকড়সার জাল ছোট্ট ছোট্ট নীল কুটির,জোছনা করে হেলাফেলা-
তলিয়ে যাই আমি, ভালবাসার ময়ূরাক্ষী নদী’র শীতল জলে বাতাসে ভাসে যেথা,
রজনী গন্ধার সুবাশ গায়ে মাখি আলতো হেসে আমার আমি’র নিজস্ব পৃথিবীতে
চলো হাতে-হাত রেখে একটু হাঁটি ময়ূরাক্ষী নদী’র তীর ধরে স্বপ্নের অরন্যের সাথে ।

Sunday, August 9, 2015

ব্লগার হত্যা : নেপথ্য কারণ কি ?


-------------------------------------------
বিশ্ব শান্তির জন্য ইসলামে শান্তি বিঘ্নিত হোক এমন কোন কাজ মহানবী সঃ কখনও চাননি, আমরা তার অনুসারী হিসাবেও তা চাই না ।
কোনো ধর্মকে কটাক্ষ, অপমান ও ব্যঙ্গ করা ইসলাম অনুমোদন করে না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপসনালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ইসলামে জায়েজ নেই। কোনো ইমানদার ব্যক্তি অমুসলিমদের উপাসনালয়ে হামলা করতে পারে না। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা ও সদ্ব্যবহার ইসলামের অনুপম শিক্ষা। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা আমাদের প্রতিবেশী। আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণ ও সৌহার্দ প্রতিষ্ঠা পবিত্র কোরআনের নির্দেশ। মূর্তি ও প্রতিমা ভাংচুর করা তো দূরের কথা, তাদের গালি ও কটাক্ষ না করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম রয়েছে। মহানবীর (সা.) ২৩ বছরের নবুয়তি জীবনে অমুসলিমদের উপসনালয়ে আক্রমণ বা তাদের বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুকুম দিয়েছেন—এমন কোনো নজির ইতিহাসে নেই
সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম ইসলামে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করে ইহুদি-খ্রিস্টানদের নিয়ে যে চুক্তি করেন, তা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান। ‘মদিনা সনদ’ নামে খ্যাত এ সংবিধানে স্পষ্টই উল্লেখ আছে, ‘প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না। অপরাধের জন্য ব্যক্তি দায়ী হবে, সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
ব্লগার নিলয় নীলকে কারা হত্যা নিয়ে ব্লগে অনেক রকম কথা বলা হচ্ছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে সবারই। তিনিও তার মত প্রকাশ করেছেন। তিনি কেন নিহত হয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদিও একটি সংগঠন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এভাবে হত্যার দায় স্বীকার করার মধ্যে কতখানি সত্যতা আছে? আসলেই কি যারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে তারাই হত্যা করেছে নাকি অন্য কেউ সুযোগ নিয়েছে! তবে যে কোনটিই হতে পারে। কারন নিলয় নীল এর প্রোফাইল থেকে জানা যায় তিনি নিজেকে, রাজনৈতিক মতাদর্শ-সেকুলারিজম বলেছেন। আর তার লেখায়ও বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে সমালোচনা আছে।-Niloy Nil in Istition তাই এখানে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যদি ব্লগে লেখার কারনে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকে তবে কেউ সুযোগটা নিয়েছে কিনা? তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশ পুলিশ অবশ্যই সত্য খুঁজে বের করবে বলে আশা করি। ব্লগার নিজ বাসায় দিনে দুপুরে খুন হলো। আহমেদ রাজিব হায়দার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫ জন ব্লগার বিভিন্ন সময়ে খুন হলো। এ হত্যাকান্ডের পেছনে ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীকে দায়ি করা হয়। কখনো আনসারুল্লা বাংলা টিম কিংবা কখনো আনসার আল ইসলাম নামে কোন সংগঠন এসব হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে কিংবা গণমাধ্যমে মেইল পাঠিয়েছে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত একটা হত্যাকান্ডেরও ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। মূলত নিহত এ পাঁচজন ব্লগারই মুক্তচিন্তার লেখক। তারা ধর্মকে নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ্যপূর্ণ যুক্তি উপস্থাপন করে লেখালেখি করে। আর মূলত সমস্যাটি সেখানেই। কারণ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে থাকে তাদের প্রায় ৯৯ ভাগেরও বেশি লোক তাদের ধর্মের বিষয়ে একটা সফট কর্ণার ধারন করে থাকে। তখন ১ভাগের ও কম সংখ্যক লোক যদি ধর্ম নিয়ে এমন অগ্রহণযোগ্য কটাক্ষ্যপূর্ণ সমালোচনা করে লেখালেখি করে তখন সেটা কেউই সহজভাবে নেবেনা। আমি এ ধরনের হত্যাকান্ডকে কখনো সমর্থন করিনা। এখন মানুষ ব্লগার শুনলেই মনে করে লোকটি নাস্তিক। অর্থাৎ ব্লগার আর নাস্তিক এখন সমার্থক করে ফেলা হয়েছে। এভাবে হত্যাকারীর অবশ্যই বিচার হোক কিন্তু যারা ধর্ম নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ লেখালেখি করে ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠীকে আরো উগ্র করে তুলছে তাদেরকে অপরাধ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে সে জন্য কি উক্ত ব্লগারের কোন দায় নেই? গতকালকে যে ব্লগার নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় খুন হলো তারও লেখালেখির বিষয় ছিলো ধর্ম ও যুক্তি। তার লেখায়ও ইসলাম ধর্ম ও পবিত্রগ্রন্থ আল কুরআনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকবারই তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। ইসলাম ধর্বিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের প্রতিও তীব্রভাবে কটাক্ষ্য করা হয়েছে। তার বিভিন্ন লেখায় ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত দেয়ার মতো যথেষ্ট আলামত পাওয়া যায়। সুতরাং মুক্তচিন্তার মানেই ধর্মীয় সমালোচনা এমন বিকৃত চিন্তার ক্ষেত্র থেকে বের হয়েই ব্লগারদের লেখালেখি করা উচিৎ। লেখার যদি সীমা নির্ধারন করা না যায়, তবে মানুষের আক্রোষেরও সীমা সম্ভব নয়। মুক্তবুদ্ধি আর মুক্ত হতিয়ার হয়তো উভয়ই মানুষের “মৌলিক অধিকার”
প্রথমে বলি মত বিরোধের জের ধরে কাউকে হত্যা করা মোটেই কোন ধর্মই সমর্থন করে না। তাই সুস্থ মস্তিক্যে বলছি নিলয় এর হত্যাকারীরা যে আদৌ ইসলামকে অনুসরন করছে না। অবশ্যই এর সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের ধরা হউক। কারন এদের দারা শান্তির ধর্ম ইসলাম বদনাম হচ্ছে তাতে সন্ধেহ নেই।
আপনার মত প্রকাশ করুন তবে সীমার মধ্যে , দেখুন তখন আপনাদের প্রতি জনসমর্থন বাড়ে কি না। আর যদি মত প্রকাশের অপব্যবহার করেই যান তাহরে ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের পক্ষে সেই হাত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে জনসমর্থন বাড়বেই বাড়ছে- আর এর জন্য একমাত্র আপনারা মুক্তমনারাই দায়ী।

Friday, July 31, 2015

অবাক সোনার বাংলা



আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমেরিকার ভিসা পাইলে বাপে ভিটা বেছি
মেয়েটার জন্য ফরেন ডলার ওলা জামাই খুঁজি ,

ইন্টার নেটে লন্ডন ক্যানাডার বুড়ি সুন্দরি দেখি ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
এই দেশে কামাই করে বিদেশে জমি বাড়ি কিনি
ছেলে মেয়ে কে হাই হ্যালো ইংলিশ সেখাই
ঘরে বসে স্টার জলসা স্টার প্লাস দেখি ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমার ছেলে মরে নেতার পিছে, নেতার ছেলে বিদেশে
আমার ভাই তোমার ভাই নেতারা সব ভাই ভাই
গরীব মানুষের ঘরের খবর নেয়ার কেউ নাই ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
ঝুপ বুঝে কুপ মারি সেবার নামে নেতা সেজে ব্যবসা করি
নেতা ছেলে নেতা হয় রাজার ছেলে রাজা
গরীবের ট্যাক্সের টাকায় দিন রাত এয়ার কন্ডিশন চালায় ।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
রক্ত দিয়েছি রক্ত আরও দিব তবে জনতা নেতারা না
হরতাল দিয়েছি , অবরোধ দিয়েছি আরও দিব
নেতারা প্রেস কনফারেন্স করবে , আম জনতা পুরবে মরবে !!
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
আমলা নেতা আর সুবিধাবাদীরা যাবে প্রাইভেট কারে
কিছু রাস্তা আছে শুধু ভি আই পি চলে টক বগীয়ে
আমজনতা লক্কড় ঝক্কর লোকাল বাসে আটকা ট্রাফিক জ্যামে ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার নাই ,আছে সব প্রাইভেটে
টেস্টের নামে গরীব ঘুরে ডাক্তারের পছন্দের ল্যাবে
আমজনতার স্বাধীনতা লাল ফিতায় নিরবে কাদে ।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভাল বাসি

Monday, July 27, 2015

স্বপ্নের চিরকুট


গতকাল রাতের অসম্পূর্ন কল্পনায়
ইনবক্সে অচেনা এক চিরকুট!
অনেকগুলো দিন পেরিয়ে তোমার চিরকুট !
ভেবেই আমার চোখ জুড়ে দুর্দান্ত উচ্ছাসের ঢেউ!
মেঘালয়ের সাদা মেঘ আর সরছে না
চিরকুট পড়বার পর মনে হলো সব ঠিকঠাক চলছে
তোমার পাঠানো চিরকুট
যেন ছোট একটা চিঠির
জানতে পারলাম ঘর-সংসার,
নতুন অথিতি, বাড়ির ছাদ আর
তোমার সোনালী দিন গুলো
তুমি স্বনির্ভর হবার স্বপ্ন দেখছ
ভুলে থাকার আরেক নাম অভিমান!
সেই অভিমানকেই ভেবে জড়িয়ে আছে তুমি।
তোমার মতো-মেঘালয়ের পাহাড় গুলোও
যেন আজকাল অভিমান করে আছে,
তার গায়ে জমে থাকা মেঘগুলো, অবচিত।
তিলতিল করে জমে থাকা অভিমান,
তোমাকে ছেড়ে আমাকেও গ্রাস করে নিচ্ছে ক্রমশ,
তাই বোধ হয়- সম্পর্ক গুলোতে ছড়াচ্ছে ম্লান হবার পূর্বাভাস।
তুমি জানতে চেয়েছ ভালো আছি কিনা?
ভালো থাকা এখন ততটাই কঠিন-যতটা কঠিন ভুলে থাকা!
ভালো থাকার আশায় সিগারেট ছেড়েছি,
জায়গা বদলেছি, ঘর-দুয়ার, সঙ্গ সব ছেড়েছি
নিজেকে রুটিন মাফিক বেঁধে ধরেও
ভালো থাকতে পারিনি; হয়ত পারবো না।
মেমসাহেব আমারও মাটি সরে যায় পা থেকে,
যন্ত্রনা আরো বেড়ে যায় লাভ স্টোরি পড়লে।
মসজিদ গির্জা, রামকৃষ্ণ মঠ সব কিছুর সামনেই
মিথ্যে অভিনয় করে ভালো থাকার চেষ্টা করি।
অক্ষরজীবীদের চোখে অশ্মরী জন্ম নেয়
আর জানতে ইচ্ছে হয় তুমি ভালো আছো তো?
তুমি হয়ত বলবে ভালো-খারাপ থাকাটা নিজের কাছে,
হয়তোবা তাই!
কিন্তু নিজেকে কার কাছে রাখবো বলতে পারো?
আমার ভালো থাকা আর আকাশ দেখা এখন সমান কথা।
সূর্যের মতো সত্যি এই যে,
কেউ হয়ত জানবেনা কোনদিন,হয়ত আমি আর-
খোলা আকাশ জানবে মন খারাপের কথা।
জানবে আমার ভাবনাতেও বিরহের তুলির আঁচর পড়ে,
সোনালী সে সময়কার সব স্মৃতির পাতায় আজ বন্দি।
আজকাল তোমার মতো কারো মুখায়ব দেখলেই ছুটে যাই,
সেই খরগোসের মতো দাঁত, সেই হাসি
এই বুঝি তুমি! পাথর
প্রতি মুহূর্তেই সময়ের দাসত্বের অনুবর হয়ে যাচ্ছি
ভালো কিংবা ভুলে থাকার চেষ্টায় ক্রমাগত পরাজিত
হবার শঙ্কায় ভুগছি।
তুমি ভেবে নিও মুদ্রার এ পিঠের মতো জীবন হলেও
আমি ভালো নেই;
একটু একটু করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি সময়ের কাছে।
জানিনা কেন তোমাকে-
খুব গভীরে, খুব গোপনে লোকচক্ষুর আড়াল করেছিলাম;
তবে মনে হতো তুমি যেন আমার রুবি পাথর
এ আলো শুধু আমার একার।
তোমাকে নিয়ে কোনদিন কিছু লেখা হয়ে উঠেনি
শুধু অচল পয়সার মতো করে লুকিয়ে রেখেছি
বুকের পাশ পকেটে
আজ শুধু বলবো,
যা আছে সুখ আমার তোমাতে মিশে যাক,
তুমি আলো হয়ে থেকো,
তোমার পৃথিবীতে,
তোমার গহীনে।

Thursday, July 23, 2015

অরন্যের পুস্প বন




তুমি অবাক হবে বলে কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল
আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল সাদা-কালো মেঘের ভেলা
ভাললাগার হাতছানি-শুধু তুমি আসবে বলেই নামছিল বৃষ্টি
কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো ফুটেছি-শুধু তোমারই তরে অরন্য ।
মিষ্টি আম, জাম,লিচু, কাঁঠাল তুলে রেখেছিলাম ডালিতে
মনের ছোট আয়োজন- শুধু তুমি আসবে বলেই আমি অবাক
সন্ধার তারাভরা আকাশ দেখে সেজেছিলাম আমি বাসন্তী রানি
পিঠা-পায়েস রেধেছিলাম পরম মমতায় তোমার জন্য অরন্য
আলতা, টিপ, কাঁচের চুড়ি আর নীল শাড়ী স্মিত হেসে ছিলাম
তোমায় দেখাব নীল পরী আর পরীরা পালাবে লজ্জায় আকাশে ।
চোখে-মুখে ভাললাগার মেঘ ছেয়ে থাকবে তোমার হাতের ছোঁয়ায়
শাড়ী,চুড়ি পরেছি, আলতা দিয়েছি পায়ে আর কপালে পরেছি টিপ
বেনীতে জড়িয়েছি বকুল ফুলের মালা, কাজল এঁকে দিয়েছি মায়া চোখে
বুকভরা আশা, কিছু সাজসজ্জা- শুধু তুমি আসবে বলেই আমার অরন্য
তুমি অবাক হবে বলে কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল পুস্পের
আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল সাদা-কালো মেঘের ভেলা অন্য রকম
সকালের কচি রোদ শুন্যে মিলায়, শালিকের ডানায় ভর করে আসে দুপুর
দুপুরটাকে তাড়িয়ে নেয় সাদা-কালো মেঘ, রাখলের সুরে আসে বিকাল
তাকিয়ে থাকি মেঠো পথ পানে- এইতো তুমি আসবে অরন্য এই পথে
অভিমান ভর করেছে নীল পরীর আকাশে! পুস্প ঝরে যায় অপেক্ষায়
গোধূলী বেলায় ব্যাথা জাগে মনে, সন্ধা তারায় আসে ভেসে বৃষ্টি
কাজল টানা চোখে ঝর্ণা বয়ে যায়, অভিমান জমে ভালবাসায়
সব আশাগুলো শূন্যে মিলায়, একাকীত্ব নামে অরন্যের পুস্প বনে ।

Wednesday, July 22, 2015

চন্দ্রবিজয়ী তিন নভোচারীর ঢাকা ভ্রমণ



ষাট দশকের শেষার্ধ, তখন সময়টা এমন ছিল যে পূর্ব পাকিস্তানীদের জীবনে খুব কম সময়ই উৎসবের উপলক্ষ্য আসতো। সব সময় এক আতংকে সময় কাটতো সবার, এই বুঝি পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের অধিকার, আমাদের দাবী ছিনিয়ে নিয়ে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দিবে আমাদের মুখ। তারপরও এ সময় কিছু ব্যাপার এদেশবাসীর উৎসবের উপলক্ষ্য নিয়ে এসেছিল তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চন্দ্র বিজয়ী তিন নভোচারীর স্বস্ত্রীক ঢাকা ভ্রমণ। নভোচারীত্রয় বিশ্বভ্রমনের ১৭ টি দেশের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে আগমন করেন।
১৯৬৯ সালের ২৭শে অক্টোবর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা নগরী এক উৎসবমুখর বেশ ধারন করে। সারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল নামে ঢাকায়। তৎকালীন কুর্মিটোলা বিমান বন্দর ও ঢাকায় প্রবেশের মুল রাস্তায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। রাস্তার দু-পাশে নারী-পুরুষ, ছেলে, বুড়ো সমানে ভিড় করতে থাকে।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের সময় মার্কিন বিশেষ বিমানটি এ্যাপোলো-১১ মিশনের নভোচারী ও চন্দ্রবিজয়ী বীর নেইল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স এবং তাঁদের স্ত্রীদের নিয়ে যখন বিমান বন্দরে অবতরণ করেন,তখন প্রতিরক্ষা বাহিনীর আবেষ্টনী ভেদ করে জনতা বিমানের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। তিন চন্দ্র বিজয়ী ও তাঁদের স্ত্রীরা বিমান থেকে বেরিয়ে আসলে জনতা তুমুল ও মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে তাঁদের অভিনন্দন জানায়। নভোচারীরাও হাত তুলে এ অভিবাদনের জবাব দেন। বিমান বন্দরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রঙীন পোষাক পরিধান করে তাঁদের ফুলের তোড়া দ্বারা বরণ করে নেয়। বিমান বন্দরে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তি, উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বহু সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানরত বহু মার্কিন নাগরিকও বিমান বন্দরে এসে উপস্থিত হন।
বিমান বন্দরটিকে নভোচারীদের ছবি ও প্রতিকৃ্তি এবং পাকিস্তান ও মার্কিন পতাকায় সুসজ্জিত করা হয়। একটি বিরাট ব্যানারে লেখা ছিল, “আপনাদের এ সাফল্যে সমগ্র মানবজাতি গৌরবান্বিত।” বিমান বন্দর হতে একখানা খোলা সেভ্রোলেট গাড়ীতে নভোচারীত্রয় এবং অপর একখানা গাড়ীতে মিসেস কলিন্স ও মিসেস অলড্রিনকে নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে শহরের প্রায় ন’মাইল রাস্তা পরিভ্রমণ করা হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছেলেরা ঢোল বাজিয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানায়। কেউ ফুলের তোড়া, কেউ ফুলের পাপড়ি, কেউবা অভিনন্দন লিখিত শব্দমালা চলন্ত গাড়ীর প্রতি নিক্ষেপ করে তাঁদের অভিনন্দন জানায়।
দীর্ঘ শোভাযাত্রা শেষে অতিথীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (বর্তমান শেরাটন) পৌছেন। সেখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা ভাষণ দেন। গভীর আনন্দের সহিত তাঁরা সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। মহাশূন্যচারীদের আগমন উপলক্ষে তাঁদের চাঁদে অবতরণ এবং পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ সময় নভোচারীদের স্ত্রীরাও স্থানীয় বিশিষ্ট মহিলা ও মহিলা সাংবাদিকদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন।
ঢাকা টেলিভিশন (বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশন) সাধারনত সোমাবার বন্ধ থাকলেও এদিন মহাশূন্যচারীদের আগমনের দৃশ্য সরাসরি প্রচারের জন্য বিশেষ অধিবেশনের ব্যবস্থা করে। বিকেলে পূর্ব পাকিস্তান সরকার নভোচারীদের এক সম্বর্ধনা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করে। গভর্ণমেন্ট হাউসে ৬জন বিউগল বাদকের নিনাদের মধ্য দিয়ে মহাশূন্যচারীদের আগমনীবার্তা ঘোষনা করা হয়। অনুষ্টানে উপ-মহাদেশের ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীবৃন্দ ছাড়াও শ্রমিক ও ছাত্রনেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মহাশূণ্যচারীগণ তৎকালীন গভর্নর জনাব আহসানের সাথে উপহার ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জনাব আহসান এ অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানেরও প্রতিনিধিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে অন্যতম আকর্ষন ছিল এ্যাপোলো-১১ রকেটের মডেল সন্নিবেশিত বিরাটকার একটি কেক। চন্দ্রবিজয়ী নভোচারী ও তাঁদের স্ত্রীদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে গভর্ণর আহসান বলেন, “এ বিরাট সাফল্য বিজ্ঞান ও কারিগরী বিজ্ঞানের বিজয় এবং একটি মহান সমাজের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বিপুল আকারে মানবিক ও বৈষয়িক সম্পদের সমুন্নয় সাধনেরই ফলশ্রুতি।” গভর্ণর পূর্ব পাকিস্তান ভূগোল সমিতির পক্ষ হতে মহাশূণ্যচারীদের একটি স্বর্ণপদক প্রদান করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রদানদের বাণী সম্বলিত যে ফলকটি মহাশূণ্যচারীগণ চন্দ্রতরীতে করে চাঁদে নিয়ে গিয়েছিলেন, তার একটি রেপ্লিকা তারা গভর্ণরের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে উপহার দেন। পাকিস্তানের জনগণের জন্য ফেলে আসা ফলকের একটি প্রতিকৃতিও তারা আহসানের নিকট প্রদান করেন।
মাত্র একুশ ঘন্টা ঢাকায় অবস্থানের পর চন্দ্রমানবরা পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় তাঁদের বিশেষ বিমানযোগে ব্যাংককের পথে ঢাকা ত্যাগ করেন। বিমান বন্দরে বহু লোকজন ও সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ তাঁদের বিদায় অভিবাদন জানান। এ সময় অনেকের চোখের কোণে জলের চিলিক দেখা যায়। স্বল্পসময়েই তারা এদেশের জনগণের হৃদয়ের মণি কোঠায় স্থান করে নেন।
তথ্যসূত্র-১৯৭০ সালে প্রকাশিত গাজীউর রহমান লিখিত ‘ রকেট ও চন্দ্র বিজয়ের।
উইকিপিডিয়ারও

Tuesday, July 21, 2015

ভয়ে মরি না হে সভ্যতা


আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
প্রতিনিয়ত নগ্ন করছো তোমারা সভ্যতা কে সভ্য হয়ে ,
সভ্যতা দিয়ে তার গলায় দিয়েছো ফাঁস দিবালোকে
কত দিন,আর কত দিন সভ্যতার পাঁয়ে থাকবে শেকল ?

মানা যায় না সভ্যতার কোন বিধান সভ্যতার অন্তরালে
অসভ্য নিবিড়তার তৃষ্ণায় জ্বলে পরকীয়ায় মাতনে প্রেম
কারুণিক ভালবাসার উষ্ণতায় আজও পথ চেয়ে দিক ভ্রান্তে
কিছুতেই চাপা দিয়ে রাখা যায়না দীর্ঘশ্বাস কাঁপা ঠোটে চুম্বনে !
আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
মানা যায় না সভ্যতার কোন বিধান অসভ্য সমাজে
ক্ষুধা নিয়ে খেয়ে ফেলি ইতিহাসের মানচিত্র বিবেকের দায়ে
অসভ্য নিবিড়তার তৃষ্ণায় জ্বলছে বুকের মধ্য মরূদ্যান।
সহস্র মৃত্যুর সমাবেশ থেকে অবশেষে জেগে উঠে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি
মনুষ্যত্বের বিলুপ্ত চেতনায় ক্ষুধার্ত শ্মশানের পাশেই তৃষ্ণার্ত প্রেতাত্মা!
অক্ষম দেবতার চারণে ঠুকছে মাথা প্রতিনিয়ত নগ্ন বিবেকের সভ্যতা
তোমরা মানুষ বলেই মনুষ্যত্বের বিলুপ্ত নির্মমতা,যত্তো অহংকার ধুকছ ।
আমি ভয়ে মরি না, ভয় আমার মৃত্যুর কাছে পরাজিত
খুঁজে খুঁজে যেই জবাব আজ অবধি পাইনি ভাবতে ভাবতে
বিস্তীর্ণ বেদনা বয়ে যায় তনুতে অণুতে আঁতুড় ঘর থেকে
সমাজের রন্ধ্রে রান্ধ্রে যেই বর্বরতার আর্তনাদ সেই স্রোতে প্রবাহিত ।
সভ্য হলাম অসভ্য সব বসনের আধুনিক সংস্করণের মানুষ গুলো
তোমাদের মনুষ্য সভ্যতার আদর্শলিপিতে শেখা অক্ষর গুলো দেখি
নীতিবাক্যের নিকুচি করনের মধ্যদিয়ে আজ আমি সভ্য হলাম সমাজে
এছাড়া আমার আর কিছু করার সাধ্য ছিলোনা কখনোই হয়ত আমার

Monday, July 20, 2015

বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া


বৃষ্টির খেলা সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে
অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা কোন ছন্দ তুলে মাতাল সুরে
বৃষ্টি নাচে তোমার তনুমন ঢেউ তুলে যাও কি ঝংকারে ?
আমি বৃষ্টি চাই আমি বৃষ্টি চাই বার বার শ্যামল ছায়া তলে ।
বৃষ্টি কি আমার বন্ধু? বৃষ্টি কি আমার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা দেখি বার বার ,
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার আমায় কাদিয়ে
মনের কোণে জমাটবাঁধা মেঘই কি জটলা করে আকাশ জুড়ে?
ঝরে পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায় সব বেদনা নিংড়ে নিয়ে পথিকের পথে
বৃষ্টি মানে কথা ,বৃষ্টি মানে কোনও ব্যথা, বৃষ্টি মানে যন্ত্রণা, বৃষ্টিই সুখে?
আকাশে ভিড় জমাচ্ছে ঘন কালো মেঘের দল। বৃষ্টিরা আসছে হাওয়ার আঁচল উড়িয়ে।
একের পর এক স্বপ্ন বোনা হয়ে যাচ্ছে জলছবির আড়ালে বৃষ্টির মাতাল প্রকৃতিরই ছন্দে
কোথা হতে আসে এই কালো মেঘের দল?একটু একা হওয়ার জন্য ছটফট করে মন ,
কেন মনের জানালা খুলে সংসারী মনটাকে উথাল পাতাল করে তোলে?
ওগো মেঘ, আমি তোমার সঙ্গে একলা হতে চাই।
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলো দূরে, দূরে—আরও দূরে নিঝুম দ্বীপে
ঘরসংসারের যেন পুতুল খেলা ঘর সে শুধু আমার নিভৃত ক্ষণ, ওগো মেঘ,
আমি ঝরে ঝরে পরতে চাই বৃষ্টি হয়ে মোহনার চরে অরন্যের বুকে ।
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা আর স্বপ্ন হারাই সেই জলে ?
মেঘলা আকাশ বৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় আদিগন্ত ধানখেতের ওপর মেঘের ছায়া।
ধূসর হয়ে আসা বৃষ্টিজলে ভিজছে তালগাছের সারি, কুঁড়েঘর সংসার
অবিশ্রান্ত জলের ধারাস্নানে সে যেন এক জলজ ছায়াছবি আমারই মতন !
চিত্রকর বসেছে রং ছোপাতে বর্ষামোহিনীর ধানি-রং ঘাগরা আর মেঘ-রং ওড়নায়
যত বার তুলি বোলায়, তত বার সে মোহিনী খিলখিল হেসে জল ঢালে বৃষ্টি।
জল শুধু জল প্রিয়ার দু’নয়নে বৃথা রাঙিও না, সব রং ধুয়ে যাবে অপেক্ষার জলে
বরং রাখো আমায় তোমার রঙের পাত্রে আমি কেমন সবুজে সবুজ, নীলিমায় নীল।
চিত্রকর ভাবে, এ কে? কোন মোহিনী প্রিয়ার মায়া? বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া ডাকে তাকে— বলে,
এসো আমায় গ্রহণ করো সমর্পণের সুরের রঙ বেরঙের মেলায় তোমার কাছে চাওয়ার ছিল
বৃষ্টিতে ভিজবো, শুধু ভিজবো সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে ।।

Sunday, July 19, 2015

অনু গল্প - মতিঝিলের রিক্সা ওয়ালা


------------------------------------------------------
মতিঝিলের ব্যস্ত রাস্তায় একজন ভদ্রলোক
হারামজাদা !! চোখে দেখোস না রিকশা চালানোর সময় !!"
রিকশাচালকের উপরে চড়াও হয়ে গেলেন !!স্যুট টাই পরে অফিস থেকে ফিরছিলেন .এমন সময় এক রিকশার চাকা তার দামি প্যান্টে সামান্য চাকা দিয়ে ধূলা লাগিয়ে দেয় !!
কুত্তার বাচ্চা !! তোর রিকশা চালানো ছুটাবো আজকে !!"
"স্যার !! আমি দেখি নাই, স্যার !!"
স্যুট টাই পরিহিত একজন ভদ্রলোক একজন রিকশাওয়ালা প্রচন্ড জোরে চড় মারছেন, কিল ঘুষি মারছেন ... খুবই ইন্টারেস্টিং দৃশ্য ... অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছে, কেউ ঠেকাতে যাচ্ছে না !!
ব্যস্ত রাস্তায় অনেক আওয়াজ ...রিকশাওয়ালার গায়ের রং কালো ... তাই আকবর ভদ্র লোকের হাতের ছাপ পড়ে নি গালে !!
"যা এইখান থেকে ... এই এলাকা ছাইড়া যা শু*** বাচ্চা !!"
রিকশাওয়ালা দ্রুত রিকশা নিয়ে চলে গেলেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর সামনে সেখান থেকে ..
ভদ্র লোক গরম মাথায় যখন রাস্তা পার হতে লাগলো এমন সময় একটা একটা মটর সাইকেল ধাক্কা দেয় ছিতকে পাশের ড্রেনে পরে একদম পা ভেঙে জায় । মটর সাইকেল খুব দ্রত চলে যায়।
লোক জন ধরা ধরি করে ঐ আগের রিক্সায় তুলে দেয় । ভদ্র লোক তার বউ কে ইসলামি ব্যাংক হাস পাতালে বলে । সাজান পুর থেকে বউ হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে এমন সময় । রিক্সা ওলা তাকে খুব যত্ন করে নাময় । কুলে করে
জরুরী বিভাগে নেয় ।
ভদ্র লোক অবাক হয়ে দেখে সেই রিক্সা ওয়ালা । ভাড়া না নিয়ে চলে গেল ।
যাওয়ার সময় বলল , স্যার স্যুট টাই পড়লে মানুষ মানুষ হয় না । মানুষ হতে হলে মন বড় হতে হয় ।

বিঃ দ্রঃ- একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে..................।

বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া



বৃষ্টির খেলা সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে
অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা কোন ছন্দ তুলে মাতাল সুরে
বৃষ্টি নাচে তোমার তনুমন ঢেউ তুলে যাও কি ঝংকারে ?
আমি বৃষ্টি চাই আমি বৃষ্টি চাই বার বার শ্যামল ছায়া তলে ।
বৃষ্টি কি আমার বন্ধু? বৃষ্টি কি আমার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা দেখি বার বার ,
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার আমায় কাদিয়ে
মনের কোণে জমাটবাঁধা মেঘই কি জটলা করে আকাশ জুড়ে?
ঝরে পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায় সব বেদনা নিংড়ে নিয়ে পথিকের পথে
বৃষ্টি মানে কথা ,বৃষ্টি মানে কোনও ব্যথা, বৃষ্টি মানে যন্ত্রণা, বৃষ্টিই সুখে?
আকাশে ভিড় জমাচ্ছে ঘন কালো মেঘের দল। বৃষ্টিরা আসছে হাওয়ার আঁচল উড়িয়ে।
একের পর এক স্বপ্ন বোনা হয়ে যাচ্ছে জলছবির আড়ালে বৃষ্টির মাতাল প্রকৃতিরই ছন্দে
কোথা হতে আসে এই কালো মেঘের দল?একটু একা হওয়ার জন্য ছটফট করে মন ,
কেন মনের জানালা খুলে সংসারী মনটাকে উথাল পাতাল করে তোলে?
ওগো মেঘ, আমি তোমার সঙ্গে একলা হতে চাই।
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলো দূরে, দূরে—আরও দূরে নিঝুম দ্বীপে
ঘরসংসারের যেন পুতুল খেলা ঘর সে শুধু আমার নিভৃত ক্ষণ, ওগো মেঘ,
আমি ঝরে ঝরে পরতে চাই বৃষ্টি হয়ে মোহনার চরে অরন্যের বুকে ।
কী আছে বৃষ্টির বুকের মাঝে? ঝিরিঝিরি শব্দে যার চোখের জল?
কেন বৃষ্টির গভীরে আমরা লুকোই কান্না, যন্ত্রণা আর স্বপ্ন হারাই সেই জলে ?
মেঘলা আকাশ বৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় আদিগন্ত ধানখেতের ওপর মেঘের ছায়া।
ধূসর হয়ে আসা বৃষ্টিজলে ভিজছে তালগাছের সারি, কুঁড়েঘর সংসার
অবিশ্রান্ত জলের ধারাস্নানে সে যেন এক জলজ ছায়াছবি আমারই মতন !
চিত্রকর বসেছে রং ছোপাতে বর্ষামোহিনীর ধানি-রং ঘাগরা আর মেঘ-রং ওড়নায়
যত বার তুলি বোলায়, তত বার সে মোহিনী খিলখিল হেসে জল ঢালে বৃষ্টি।
জল শুধু জল প্রিয়ার দু’নয়নে বৃথা রাঙিও না, সব রং ধুয়ে যাবে অপেক্ষার জলে
বরং রাখো আমায় তোমার রঙের পাত্রে আমি কেমন সবুজে সবুজ, নীলিমায় নীল।
চিত্রকর ভাবে, এ কে? কোন মোহিনী প্রিয়ার মায়া? বর্ষায় মোহিনী প্রিয়া ডাকে তাকে— বলে,
এসো আমায় গ্রহণ করো সমর্পণের সুরের রঙ বেরঙের মেলায় তোমার কাছে চাওয়ার ছিল
বৃষ্টিতে ভিজবো, শুধু ভিজবো সারা বেলা প্রকৃতিরই ছন্দে অভিমানের বাঁধ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে ।।

Friday, July 10, 2015

স্বর্ণহৃদয় দিয়ে শুধু তোমাকেই চাই


একদিন হারিয়ে ছিলাম আমি গভীর রাতে নিঝুম অরণ্যে
এক অদ্ভূত অনুভূতিতে জোনাকি আমাকে আলো দিল ,
যে অনুভূতির আমি হয়েছিলাম সম্পূর্ণ অন্য কেউ হয়ত !
যে অনুভূতি ক্ষণে ক্ষণে বিস্ফোরিত করছিল আমাকে,
সুপারনোভা মহাবিস্ফোরণের মত
আমার হৃদয় আলো পড়ছিল যেন চতুর্দিকে;
আকাশের অসংখ্য তারার সাথে
একাত্ম হয়েছিলাম সেই রাতে আমি,
যেন পুরো আকাশভর্তি তারা হঠাৎ খসে পড়ে
সরাসরি হয়েছিল পতিত, আমার হৃদয়ে!
এক আলোকবর্ষ পর, এক মুহূর্ত পর,
মনুষ্যজীবনের সব উচ্চারণে হয়ে উঠে প্রকাশিত,
আবার পরমুহূর্তে এক প্রচন্ড চাপে
সেই একই হৃদয় পরিণত হচ্ছিল এক কৃষ্ণগহ্বরে।
সরল কণিকা থেকে প্রচন্ড আবেগে পরিণত হচ্ছিলাম
ভারী কোন মৌলে,
আবার নিউট্রনীয় আবেগে
হৃদয় পরমাণুর ভাঙ্গনও হচ্ছিল অবিরত।
তাই অবশিষ্ট নেই কোন কৌতূহল;
এখন তাই আলোকে হত্যা করি প্রচন্ড নির্মমতায়,
আর আমার গৃহকোণ ভরে উঠে অন্ধকার আলোয়।
কিন্তু নৈঃশব্দের অন্ধকারেও আমার দু’চোখ থাকে জেগে, অপলক,
তারা অসম্ভব তীব্রতায় তাদের চারপাশ দেখে যায়,
যেন অন্ধকারেই শুধু সমস্ত পৃথিবী তাদের কাছে হয়ে উঠে সুস্পষ্ট!
অবশ্য তারপরও মুক্তি পাই আমি কিছুতেই;
রূদ্ধ নিঃশ্বাসে অপেক্ষা করতে থাকি
রাত নেমে আসার পর এই আদিগন্ত বিশাল প্রান্তরে
অনুভব করে এক প্রাচীন মানবীয় শিহরণের প্রহার,
আমি চিৎকার করে উঠি-
আর কিছুই না চাইনা আজ,
তোমার ওই স্বর্ণহৃদয় দিয়ে শুধু তোমাকেই চাই
শুধু একটিবার তাকাও হে প্রভু দয়া করে ।

Tuesday, July 7, 2015

ভাবতে হয়


হাসতে গেলেও ভাবতে হয়
কাদতে গেলেও ভাবতে হয়
বলতে গেলেও ভাবতে হয়
শুনতে গেলেও ভাবতে হয়
পড়তে গেলেও ভাবতে হয়
লিখতে গেলেও ভাবতে হয়
রানতে গেলেও ভাবতে হয়
বারতে গেলেও ভাবতে হয়
আনতে গেলেও ভাবতে হয়
দিতে গেলেও ভাবতে হয়
জানতে গেলেও ভাবতে হয়
জানাতে গেলেও ভাবতে হয়
খাইতে গেলেও ভাবতে হয়
খাওয়াতে গেলেও ভাবতে হয়
ভাবনার দুনিয়াই শুধু ভাবতে হয়

Friday, June 19, 2015

পুত্রের ভালবাসা পিতার জন্য ( অনু গল্প)


----------------------------------------------- সেলিনা জাহান প্রিয়া
ছেলেঃ বাবা তুমি রোজা রাখ কেন ?
বাবাঃ আল্লাহর হুকুম । এটা ফরজ ।
ছেলেঃ বাবা রোজা ফরজ আর নামাজ ও ফরজ । তাহালে তুমি শুক্র বারে মাঝে
মাঝে নামজ পড় । তাহালে তুমি তো প্রতিদিন অনেক ফরজ বাদ দাও ।
বাবাঃ কাজের চাপে নামাজ পড়তে পারি না ।
ছেলেঃ তাহালে খুদা লাগলেও কি তুমি রোজা ভাঙ্গাবে ।
বাবাঃ না ভাংবনা
ছেলেঃ একটা কথা বলি । তুমি যে আমাদের জন্য এত দামি ইফতার কেন এটা কি
ইসলামের বিধান । কারন আমার অনেক সজন রা তা কিনতে পারে না।
খেতে পারে না । তুমি কি এসব কিনার সময় তাদের কথা ভাব ।
বাবাঃ না আমি তো ভাবি না ।
ছেলেঃ বাবা তোমার অনেক টাকা ব্যাংকে রেখেছ তা থেকে তুমি মাসিক অনেক টাকা
পাও । বাবা তুমি কি জান ইসলামে রিজেক হালাল না হলে ইবাদত হালাল না ?
বাবাঃ দেখ পুত্র তুমি আমার সন্তান তোমার কাছ থেকে কি আমাকে ইসলাম সিখতে
হবে । আমি কি হালাল হারাম বুঝি না। আমি তো মসজিদে মাদ্রাসায় অনেক
দান করি তুমি কি তা দেখ না ।
ছেলেঃ বাবা তুমি কেন আমার কাছ থেকে ইসলাম সিখবে । ইসলাম শিখার জন্য
ইসলামের ইমামদের কাছ থেকে জ্ঞান নিতে হবে যারা তোমাকে আল কুরান
ও ছহি হাদিস অনুসারে জীবন বিদান সিখাবে ।
বাবাঃ দেখ না আজ কাল ইসলামের ইমাম রা কত ভাগে বিভক্ত ।
ছেলেঃ না বাবা ইসলাম আল কুরান মতে চলে তবে তুমি যে বিভক্ত দেখছ তা কিন্তু
আল কুরান ও হাদিস মতে বিরোধ না । এটা তাদের ব্যপার তাই বলে কি
তুমি ইসলামের কাজ করবেনা । তুমি আল কুরান আর হাদিস অনুসরণ কর
। কোন ব্যাক্তি কে না ।

বাবাঃ এত জেনে কি হবে পুত্র আমার ?
ছেলেঃ আচ্ছা বাবা ধর আমার এখন রক্ত লাগবে । রক্ত না হলে আমি বাচব না ।
তুমি অনেক কষ্ট করে কিছু মানুষ আনলে আমাকে রক্ত দেয়ার জন্য । ওরা
টাকার বিনিময়ে রক্ত দিবে । তুমি অনেক টাকা দিয়ে রক্ত কিনলে । কিন্তু
ওদের দেখলে "আইচ আই ভি এইডস" আছে । তুমি কি সেই আমার জন্য
নিবে?
বাবাঃ অসম্ভব এটা কি নেয়া যাবে । কিছুতেই না ।
ছেলেঃ বাবা হারাম পথে আসা অর্থ ঠিক তেমন । তুমি সুদ খেয়ে কোন দান করলে তা
কোন কাজে আসবে না। ঘুষ খেয়ে নামাজ রোজা যাকাত কিছু হবে না । বাবা
সুদ ও ঘুষ ইসলামে হারাম হারাম ও হারাম । বাবা তুমি হালাল পথে আসো
এটাই পুত্র হয়ে পিতার নিকট ভালবাসা মনে কর ।।

Thursday, June 18, 2015

ভাবি মনে মনে


চাইবো শুধু দু'টো জিনিস যদি তুমি পারো দিতে
চুপিসারে রেখে যেও যখন আমি ঘুমিয়ে পরবো !
দিন যত হোল গোলাপ ততটাই ঝরেছে বাগানে
আজ জানতে চাই তোমার কাছে ভেজা চোখে ,
যেদিন আর গোলাপ ফোটবেনা বাগানে
সেই দিনও থাকবে কি তুমি এখানে এভাবে !
সাদা রঙের স্বপ্ন গুলো স্বপ্নিল কোন রাতে
কেঁদে কেঁদে ক্লান্ত মনের ভিতর পাঁজর ছুঁয়ে ।
চোখের আঙ্গিনায় এখনো জোছনা ছড়ায় আলো
তুমি কি আমায় আগের মতো বাসো ভালো ?
এখনো কি পুরনো চিঠি পড়ে নয়ন ভেজাও অভিমানে
এখনো কি বিকেলের রোদ গল্প বলে তোমার কানে কানে
বাতাসে কান পেতে থাকি এই বুঝি ডাকছ তুমি নাম ধরে
আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের কাছে এই দ্বীপান্তর
এই মেঘ, এই ঝুম বৃষ্টি, এই শিশিরের শব্দের জন্য
আমি সহস্র বছরের বেঁচে থাকতে চাই তোমার বুকে।
এই যে মুহূর্তে, এই যে দাঁড়িয়ে থাকা কাজল চোখে
হাল্‌কা মেঘের উপচ্ছায়ায় একটি ম্লান দিনের তরে ।
অনুভবে বুঝে নিও তোমায় কতটা ভালোবাসি
ঘুম ভাঙা প্রহরে অকারনেই তোমায় ভাবি মনে মনে ।

Wednesday, June 17, 2015

ভাই সমাচার....................................


স্যার ক্লাসে এসে বলল দিদার তোমার ভাই তোমার নামে বিচার দিয়েছে
দিদারঃ কোন ভাই স্যার ?
স্যারঃ কোন ভাই মানে ? ভাই কত প্রকার বল??
দিদার: স্যার ভাই দুই প্রকার ১। আপন ভাই ২ ।সৎ ভাই
স্যারঃ হাহ! ভাই নাকি দুই প্রকার???
মফিজঃ তুমি বলো তো ভা্ই কত প্রকার??
মফিজ: ভাইয়া তিন প্রকার , ১। আপন ভাই ২।সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই
স্যার: :u অই তোরা একে একে ভাই কত প্রকার বলতো ??
জলিল: ভাই চার প্রকার , ১। আপন ভাই ২। সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪। দুলাভাই
সুমনঃ ভাই পাঁচ প্রকার ১। আপন ভাই ২। সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪। দুলাভাই
৫।দাদা ভাই
স্যার: আক্কাস তুই বল ভাই কত প্রকার?
আক্কাস: ভাই সাত প্রকার , ১। আপন ভাই ২।সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪।
দুলাভাই ৫। দাদা ভাই ৬। চাচাতো ভাই ৭। ফুফাত ভাই
রনিঃ স্যার ভাই ৮ প্রকার -১। আপন ভাই ২।সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪।
দুলাভাই ৫। দাদা ভাই ৬। চাচাতো ভাই ৭। ফুফাত ভাই
৮।মামাতো ভাই ৮। খালাতো ভাই।
সামাদঃস্যার ভাই ৯ প্রকার -১। আপন ভাই ২।সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪।
দুলাভাই ৫। দাদা ভাই ৬। চাচাতো ভাই ৭। ফুফাত ভাই
৮।মামাতো ভাই ৯। খালাতো ভাই।
স্যার: জব্বার তুই বল ভাই কত প্রকার?
জব্বার: ভাই দশ প্রকার , ১। আপন ভাই ২।সৎ ভাই ৩। অসৎ ভাই ৪।
দুলাভাই ৫। দাদা ভাই ৬। চাচাতো ভাই ৭। ফুফাত ভাই
৮।মামাতো ভাই ৯। খালাতো ভাই। ভাইরা ভাই
বল্টু: ভাই অনেক প্রকার , ১। রুবেল ভাই ২।
সাকিব ভাই ৩। যদু ভাই ৪। মধু ভাই............ ......
স্যার: থাম ! থাম!!! (বুকে চাপ দিয়া)
রতন : স্যার আরেকটা ভাইয়ের কথা মনে পড়ছে
সেইটা হইলো – শ্যালার ভাই। উদাহরণ আমাদের
পাশ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়া।

Tuesday, June 16, 2015

অমীমাংসিত রহস্য........................... ছোট গল্প


--------------------------------------------------------সেলিনা জাহান প্রিয়া
মাঝ রাতে দরজায় কড়া নারার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। বিরক্ত ভাব নিয়ে দরজা খুলল ইমু । দরজা খুলেই বিস্মিত কণ্ঠে বলল- আরে কায়েস? এতো রাতে? আয় আয় ঘরে আয় ।
কায়েস একগাল হেসে বললো- দোস্ত অনেকদিন তোকে দেখি না। তোকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই চলে আসলাম। আজ রাতটা তোর সাথেই কাটাবো।
--- ঠিক আছে তোকে দেখে তো আমি অবাক ! যাই হক ! লন্ডন থেকে কবে আসলি ! কত দিন তোর
কোন ফোন নেই । তা আমার সাথে শুধু মাত্র দেখা করবার জন্য এতো রাতে সে চলে আসবি বাসায়! তা তো ভাবতেই পারছি না। এই না হলে বন্ধুত্ব। কি বাহিরেই দাড়িয়ে থাকবি? ভিতরে আস? গল্প করি দুই
বন্ধু মিলে সারারাত।
--- নারে দোস্ত ঘরে বসবো না। চল বাহির থেকে ঘুরে আসি।
--- সে কিরে! এতো রাতে কোথায় যাবি? আর তুই এতো সাহসী হলী কবে থেকে? কিছুদিন আগেও না
সন্ধ্যার পর তুই ঘর থেকে বাসার বাহির বের হতি না? এখন রাত দেড় টা !!
----এখন কি আর সেই দিন আছে! বিদেশ আমাকে অনেক সাহসী করেছে বুঝলি ! চল বাহিরে চল।
ইমু একগাল হেসে উত্তর দিলো চল- সাহসী ছেলে
----আচ্ছা তোর হয়েছি কি বলতো? ঘরে না বসে বাহিরে নিয়ে আসলি । মন খুব ফুর ফুরা । আবার দেখি
এতো চুপচাপ খুব মজা করে কথা বলছিস ! রহস্য কি ?
--- না এমনিতেই। মায়ের জন্য মন কাঁদছিল । কিন্তু মায়ের সাথে দেখা করতে পারলাম না । মায়ের তো
হাইপ্রেসার তাই তাকে আর ঘুম ভাঙ্গালাম না। মাকে খুব মিস করি তাই না বলে চলে আসা ।
---- ভালই করেছিস ! তা তুই সারারাত কোথায় ছিলি?
----- কোথায় আবার কিছু সময় রাস্তায় তার পর ভাবলাম তোর কাছে আসি। তুই ছাড়া এত আপন কে
আছে বন্ধু আমার !!
দুই বন্ধু মিলে সারারাত কত আলাপ হাঁটতে হাঁটতে সাজানপুর থেকে তাদের প্রিয় জায়গা সাহাবাগের সেই চায়ের দোকান । এখন রাত সারে চার টা ।
কায়েস বলল--
----- চল ফিরা যায়
----- ইমু হাসি দিয়ে , অনেক দিন পর এক সাথে হাঁটলাম । তুই বিদেশ জাওয়ার পর আমি বর একা হয়ে
গিয়েছিলাম । আর তুই না বলে এভাবে আসবি ভাবতে পারি নাই ।
----- শুন ইমু আমি কিন্তু তোর জন্য কিছু আনি নাই !
---- আরে নাটু, তুই আসছিস আর কি লাগে । এখন বল কত দিন থাকবি
---- জিবনের জন্য চলে আসলাম আর যাব না ।
---- বলিস কি তোর তো লিখা পড়া শেষ হয় নাই ।
---- আর লিখা পড়া করে কি হবে আমি কি চাকুরি করব নাকি ?
--- তাহালে কি করবি?
---- বাবার মত ব্যবসা । বুঝলি
--- ভাল হল আমি ও ব্যবসা করব !!
---- সত্যি !! তাহালে আয় । সকালে একসাথে নাস্তা খাব ।
কায়েস বিদায় নিল । ইমু বাসায় এসে একটা ঘুম দিল । ঘুম থেকে জেগে দেখে সকাল নয়টা ।
তারাতারি ইমু কায়েসের বাসায় রওনা দিল ।
ইমু বাসায় প্রবেশ করে নিথর পাথর হয়ে দাড়িয়ে । কায়েসের মা ইমু কে জরিয়ে ধরে অজর ধারায় কাঁদছেন। খালাম্মাকে কি ভাবে শান্তনা দেব বুঝতে পারছি না। ইমুর কাছে সবকিছু এলোমেলো মনে হচ্ছে। পুরো বাড়ি জুরেই কান্নার শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে অনেক মানুষ । ইমুর আস্তে আস্তে বোধশক্তি লোপ পাচ্ছে। এ আমি কি শুনছি। আমি তাহলে এতক্ষণ কার সাথে ছিলাম? কায়েস তো তার বাসায় আমাকে আসতে বললো। কায়েসের লাশটি গাড়ি থেকে নামানো হল। শেষ বারের মতো অবাক হয়ে দেখতে লাগলো ইমু এটা তো কায়েসের লাশ । ইমুর সমস্ত পৃথিবী দুলো উঠলো। মনে হচ্ছে সবকিছু দুলছে। চোখ এর সামনে থেকে সবাই আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে। ইমু আসতে আসতে অন্ধকার একটা জগতে হারিয়ে যাচ্ছিল। দূরে কে যেন কান্না করছে। তার মাঝে কে যেন বলছে- আম্মুকে বলিস, আমি আম্মুকে অনেক ভাল বাসি। কায়েস লন্ডনে গত দুদিন আগে মারা গেছে । আজ তার লাশ এসেছে । তাহালে সারা রাত কে ইমুর সাথে এত গল্প করল । তার কাছে এটা আজীবন রহস্য হয়েই রয়ে গেল ।

Sunday, June 14, 2015

ঘুম ভাঙ্গেনা তোমার শব্দে

ঘুম ভাঙ্গেনা তোমার শব্দে
-----------------------------------------------১৪/০৬/২০১৫
গভীর রাতে আঁধার ঠেলে ঠেলে কবে থেকে
ধরা হয় না জানালার শিক।
তুমিও বিনিদ্র থাকোনা আর
হায় ! জীবন কত পরিবর্তন শীল।

তোমার বিলাসবহুল ভাবনাগুলো
চিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মেতেছে,
আমি মূল্যহীন যুক্তি দেখাই
কোনো এক মায়াবী রমণীর স্বপ্নের কবলে।
এত ভালোবাসা রাখি কোথায় ?
কি ভাবে কুরিয়ার করি তোমার ঠিকানায় ?
কি ভাবে হলুদ খামে ভরি
এই বসন্তের সঞ্চিত ভালোবাসা ?
প্রতিবার শীত শেষে বসন্তের বায়ু বয়
আমি ভাবি এবার আমার গৃহে আসবে নিশ্চয়।
দীনহীনে দয়া করে তুমি দেবে দেখা
কিন্তু তুমি নিঠুর পরশী আমি পড়ে রই একা।
তুমি চাইলে গোলাপের সুগন্ধি
সুরভিত আঙ্গিনা।
আমি গোলাপ হয়ে ফুটে উঠলাম,
তুমি চাইলে সাগর সেচা মানিক
আমি নিজেই সাগর হলাম।
তোমাকে জড়াতে চাই। সুরের নিবিড় জাল পেতে
মর্মের ভিতর বন্দি করে তোমার সংস্পর্শ চাই
হে অরন্য ! বাতাসের শিহরণে তোমার সুঘ্রাণ
উন্মাতাল করে তোলে। প্রেমে ও বিরহে আমি পুড়ি,
তোমার হৃদয় মানচিত্রে
সবুজ বৃত্তে ফুটানো লাল গোলাপ।
অনন্ত অবসরে দিগন্তের চারিধারে
প্রকৃতি ও দুলছে হাওয়ার দোলা ।
তোমার স্মৃতি যখন আমার মনে পড়ে
সর্নাত্ব মন বার বার তোমার কাছে টানে।
এখনো ঘুমিয়ে থাকি তোমার বুকে
তবু ঘুম ভাঙ্গেনা তোমার শব্দের গানে

আবার শেষ থেকে শুরু....


----------------------------------------------------------------
নিঃশব্দে চারিদিক নিশ্চুপ
সময়ের শব্দ শুনা যায়।
মাঝে মাঝে আকাশটা দেখি,
তাতে নীল আর সাদার মেলা।
মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখি,
তাতে অসমাপ্ত দৃশ্য!
মাঝে মাঝে বাস্তবতা দেখি,
তার নির্মম কুৎসিত চেহারা !
একটি মন হারিয়ে গেল
কেউ ছিল না কাছে তার
হারিয়ে যাওয়ার কালে!!
অন্ধকারে হারিয়ে গেল
অতৃপ্ত এক আলো।
ঠোট দুটোয় ছিল যেন
অভিমানের সুর..
অভিমানে চলে গেল
সেই মন অনেক দূর।
হায়! অভাগা মন
কেউ দেখলোনা না
হৃদয় ভাঙ্গা মন !!
এক মুঠো দুঃখে
এক চিলতে কান্না ।
এক মুঠো জীবনে
এক চিলতে চাওয়া ।
এক মুঠো সুখে
এক চিলতে হাসি ।
স্মৃতির দুয়ার খুলে আমি
পায়ে চলেছি মেঠো পথে ।
একটা বাড়ি একটা ছোট ঘর!
চৌকিতে বিছানা বালিশ
আর অগোছালো কাঁথা।
এই হল আমার ঘর
আমার বেঁচে থাকা ।
একাকীত্বের সাথে
অব্যক্ত কথা বলা ।
শুরু থেকে শেষ
আবার শেষ থেকে শুরু....

আশা তো কত.....................


জল শুকিয়ে যাওয়া চোখে
নতুন করে জল আসে না
স্বপ্ন দেখা মন যখন স্বপ্নে হারায়
নতুন করে আর স্বপ্ন দেখে না
ভুল করে ভুলে যাওয়া কাউকে
নতুন করে আর মনে পড়ে না!
পুরনো সুখ স্মতি মমতার চোখে
নতুন করে সুখের অনুভূতি জাগায় না !
ব্যর্থ ভালবাসায় যে মন হারায়
নতুন করে ভালবাসা সৃষ্টি হয় না!

Saturday, June 13, 2015

যদি আমাকে চাও


-----------------------------------
যদি আমার শব্দ শুন চাও
এসো তুমি বৃষ্টির কাছে
শুনতে পাবে তোমায় নিয়ে রচিত
ভালবাসার গানগুলো।

যদি আমার বেদনা জানতে চাও
এসো তুমি নদীর কাছে
বুঝবে তাহলে আমার হৃদয়ের নীরব কান্নার ভাষা।
যদি আমার উদারতা জানতে চাও
এসো তুমি ঝর্ণার কাছে
বুঝবে তাহলে
আমার হৃদয়ের স্বচ্ছতা কতটা।
যদি আমার মমত্ব জানতে চাও
এসো তুমি বট বৃক্ষের নীচে
অনুভব করবে আমার হৃদয়ের
বিশালতা কত !
যদি আমার হৃদয়ের কঠরতা জানতে চাও
এসো তুমি পাথরের কাছে
জানবে তখন আমার হৃদয়
নির্মম কতট
যদি আমার ভালাবাসা চাও
এসে তুমি শিশুর কাছে
বুঝতে পারবে
আমার ভালোবাসার
পাগলমো কতটা।
যদি আমার বুকে মাথা রাখতে চাও
চলে এসো সবুজ প্রকৃতির বুকে
জানবে তখন
আমার ভালোবাসা কতটা নির্মল।
যদি হারাতে চাও আমার মাঝে
এসো তুমি সূর্যের কাছে
দেখবে তখন
তোমার প্রিয়ার উত্তাপ

Wednesday, June 3, 2015

অতৃপ্ত প্রেমিকার আত্মা .................................... ছোট গল্প




সমুদ্রের ধারে বিশাল এক পাহাড় ! একজন মেয়ে গভীর রাতে চুপিচুপি এসে হাজির হয় সেই পাহাড়ের ধারে । ধাপে ধাপে সজ্জিত পাথরে পা ফেলে ফেলে মেয়ে উঠতে থাকে পাহাড় চূড়ায় । প্রয়োজন মতো ছোট-বড় লাফ দিয়ে, বহু কষ্টে সে পৌঁছে যায় তার গন্তব্যে । তারপর চওড়া পাথরটার ওপরে বসে অপলক চেয়ে থাকে চাঁদের পানে। পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে আজ আকাশে, চারিদিক ভেসে যাচ্ছে চাঁদের আলোয় ! সাহসী পুরুষ তন্ময় দূর থেকে চাদের আলোতে সে অবাক হল । হাত ঘড়িটার দিকে চেয়ে দেখে রাত একটা । পিস্তলটা দেখে নিল গুলি ঠিক আছে কিনা । রাতের বেলায় কালো পোশাক পরে আস্তে আস্তে পাহারে উঠতে লাগলো ।
ধাপে ধাপে সজ্জিত পাথরে পা ফেলে ফেলে ঠিক মেয়েটার পিছনে দাঁড়ালো । কোন শব্দ করেছে না । মেয়েটির চুল গুলো খুব সুন্দর । পায়ে নুপুর । হাতে অনেক চুরি ও মেহেদি পরা । শাড়ি টা তাঁকে দারুন মানিয়েছে । ভাল করে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখল । সমুদ্র থেকে বাতাস ভেসে আসছে সাথে শো শো শব্দ ।
মেয়েটি পিছন না ফিরে বলল,
--- কতক্ষণ দারিয়ে থাকবেন । এই পাহারে উঠা খুব কঠিন । যারা কষ্ট করে উঠে তারাই দেখতে পারে রাতের সমুদ্র কে ।
--- কি আছে রাতের সমুদ্রে । আর আপনি একটা মেয়ে মানুষ এখন রাত কত জানেন ।
--- দেখুন আমি তো আপনাকে এখানে আসতে বলি নাই । মেয়ে মানুষ বলে কি আমি মানুষ না । আমার ইচ্ছা নাই । আপনি ছেলে বলে যা খুশি করবেন! তাই সমাজ মেনে নিবে,
--- না !আমি তা মিন করে বলি নাই ।
--- দেখুন এই পাহারে রাতে কেউ আসে না।
--- আপনি আসলেন যে ।
--- মেয়েটি একটু হাসি দিয়ে বলল - আমি তো এই পাহারর মেয়ে । ঐ যে দূর গ্রামে আলো জলছে ঐ গ্রামে আমার বাড়ি।
--- কি নাম আপনার
--- মেয়েটা এবার হাসি দিয়ে বলল , আমার নাম লতা।
--- লতা এত রাতে এখানে থাকা ঠিক না । তা ছাড়া আপনার গ্রাম তো অনেক দূর ।
--- না তেমন কোন দূর না । এই পাহারের ঢাল দিয়ে হেটে গেলে একদম কাছেই । তা আপনার নাম কি?
--- আমার নাম তন্ময় ।
--- তন্ময় বাবু । আপনি দেখতে অনেক সুন্দর ।আড় চোখে দেখল তন্ময় কে
--- তন্ময় অবাক হল ! এত সুন্দর একটা মেয়ে । কত কোমল লাবন্য মায়াবী চেহারা । চাঁদের আলো হেরে যায় সত্যি নারীর রুপে । মেয়েটি হাসতে লাগলো । তন্ময় বাবু । আজ পূর্ণিমা । এই পাহাড় দিয়ে হেটে গেলে বড় রাস্তা । ঐ দিক থেকে আসবে আমাকে নিতে,
--- কে নিতে আসবে ?
--- আমি যার জন্য অপেক্ষা করছি ।
--- তুমি কাউকে ভালবাস ?
--- হা বাবু । আমি তোমার মত এক পরদেশি কে ভাল বাসি ।
--- কি নাম তার
--- আকাশ ।
--- কোথায় থাকে ও
--- ও তো বলে ওর বাড়ি সিলেট এ । আজ আমাকে নিতে আসবে । যখন দেখবে সমুদ্রের এই সোনালি পানি জোয়ারে এই পাহারের কাছে চলে আসছে ও তখনি আসবে।
--- বাহ দারুন তো ।
---- জোয়ার আসলে আমাদের গ্রামের মানুষ আর এই দিকে আসতে পারবে না। ঠিক যখন চাঁদটা ডুবে যাবে একটু অন্ধকার হবে । তখন চলে আসবে আমাকে নিতে । দেখুন চাঁদ ডুবতে আর কয়েক মিনিট লাগবে । আমার আকাশ চলে আসবে ।
--- আপনি কি আকাশের বাড়ির ঠিকানা জানেন।
---- হা জানি তো । সিলেট লিচু বাগান । ১১ নম্বর বাড়ি । আমাকে ও মুখস্ত করে রেখেছে ।
তন্ময় খুব অবাক হল । সত্যি চাঁদের সাথে সুধু আকাশের ঠিকানা হয় । অন্ধকার হয়ে আসছে দেখে ।তন্ময় লতার কাছ বিদায় নিয়ে পাহারের পথ ধরে হাঁটতে লাগলো ।লতা কন্না করছে আকাশ তুমি কোথায় । আমি তোমার রেখে জাওয়া জায়গায় দারিয়ে আছি । এখন লতা চিৎকার করছে আকাশ , আকাশ । তন্ময় চিৎকার শুনে আবার পিছনে ফিরল । জোয়ারে পাহার পর্যন্ত পানি চলে আসছে । অনেক বড় বড় ঢেউ পাহারে আঘাত করছে যেন পাহার ভেঙ্গে ফেলবে । একেবারে চাঁদ ডুবে গেল । কোথাও জোছনার আলো নেই । তন্ময় চিৎকার করে বলছে লতা আপনি কোথায় ।
লতা আকাশ আকাশ তুমি চাঁদ ডুবে যাওয়ার আগে আসলে না। আমি আর বাড়ি ফিরে যেতে পারব না। আমি পূর্ণিমার নিয়ম ভেঙ্গে ছি । আমার যাত নষ্ট করেছি । তুমি এলে না বলে ঐ বিশাল পাহার থেকে সাগরে লাফ দেয় লতা । তন্ময় ও লাফ দিতে নেয় । এমন সময় পিছন থেকে তার হোটেলের ছেলেরা ধরে ফেলে । তন্ময় বলতে থাকে মেয়েটা মারা যাবে । মাকে ছেরে দাও । হোটেলের ম্যানেজার ধমক দিয়ে বলে
থামুন । কোথায় এখানে সাগর । ভাল করে দেখুন । আপনি চাঁদের আলোতে ভুল দেখছেন । সাগর তো অনেক দূরে । তন্ময়ের হুস আসে চেয়ে দেখে । মাথার উপর চাঁদ । সাগর অনেক দূরে । হোটেলের ম্যানেজার বলে । ইস আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করেছে । আমি আপনার রুম খুলা দেখে অবাক হই । কোথাও আপনাকে দেখা যায় না। তার পর নাইট ভিসন দূরবীণ দিয়ে দেখি আপনি পাহারের উপরে । আমারা আসতে আসতে দেখি আপনি লতা বলে চিৎকার করছেন ।
--- দেখুন ম্যানেজার সাহেব একটা মেয়ে এই পাহার থেকে লাফ দিয়েছে ।
--- হা আপনার মত গত ১২ বছরে ৯ জন ঐ মেয়েকে বাচাতে মারা গেছে ।
--- আসলে ঐ মেয়েটা একটা ভুত । কেউ এর রহস্য বের করতে পারে নাই ।
তন্ময় খুব অবাক হল । লাফ দিলে সে বাঁচত না । নিচে শুধু পাথর ।
তন্ময় খুব অবাক হল । তিন দিন পরে সে সিলেট চলে আসলো । লিচু বাগান ১১ নম্বর বাড়িতে গেল জানতে আকাশ নামে কেউ আছে কিনা । জানতে পারলো আকাশ আছে । তবে পাগল । জানতে পারলো লতার লাশ দেখার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাগল .................................।।

Saturday, May 30, 2015

নিঝুম দ্বীপ

সমুদ্রকোলে অস্তগামী সূর্য। কেওড়া বন থেকে দলবেঁধে ঘাসবনে ছুটে আসছে মায়াবী চিত্রা হরিণ। দূর বালুচরে চিক চিক খেলা করছে মিষ্টি সূর্যরশ্মি। কেওড়া-গেওয়া বনের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া সরু খালের পাড়ে সবুজের আচ্ছাদিত নকশিকাঁথার মাঠ। ওপরে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির ওড়াওড়ি। বনে পাখির কিচিরমিচির। নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অর্ন্তগত নিঝুম দ্বীপ। একে 'দ্বীপ' বলা হলেও এটি মূলত একটি 'চর'। নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন মূলত বল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং চুর মুরি- এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ। প্রায় ১৪,০০০ একরের দ্বীপটি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জেগে ওঠে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগ পর্যন্ত কোনো লোকবসতি ছিলো না, তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিলো। বাংলাদেশের বনবিভাগ ৭০-এর দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ২২,০০০। নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়া গাছের অভয়ারণ্য। ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবী করেন।
নিঝুম দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর যে নামই হোক না কেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের দিয়ারা জরিপ বিভাগ এই দ্বীপের জমি চর ওসমান মৌজা হিসেবে জরিপ করে। কথিত আছে সর্দার ওসমান নামের এক সাহসী বাথানিয়া ১০০ মহিষ নিয়ে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি দিয়ে প্রথম এই দ্বীপে অসে এবং দিয়ারা জরিপ কর্মচারীদেরকে জরিপ কাজে প্রভূত সহায়তা করে বিধায় তার নামে অনুসারে নিঝুম দ্বীপে মৌজার সরকারী নাম হয় চর ওসমান। ৭০ এর ১২ নভেম্বর প্রলয়কারী ঘূর্ণিতে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বিরান হয়ে যায় জনপদ। স্বাধীনতা পর বন বিভাগ এর দায়িত্ব নেয় এবং শুরু করে বনায়ন। সমগ্র নিঝুম দ্বীপের প্রায় ৩০০০.০০ একরে মানুষের বসতি রয়েছে এবং অবশিষ্ট অংশে ম্যানগ্রোভ বনায়ন রয়েছে। ইছামতির দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বা চর ওসমান যে নামেই স্থানীয় ভাবে প্রচলিত হোক না কেন - ১৯৭৪ সালে হাতিয়ার তত্কালীন সাংসদ এবং যুব, ক্রীড়া ও বন প্রতিমন্ত্রী মরহুম আমিরুল ইসলাম ওরফে কালাম দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চর ওসমানে নিয়ে যান এবং অবাক বিষ্ময়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে সবাই অবলোকন করলেন এর শান্ত স্নিগ্ধ রূপ এবং এই দ্বীপের নাম দিলেন নিঝুম দ্বীপ। সেই থেকে নিঝুম দ্বীপ হিসেবেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।




মাছ, পশু, পাখি ও উদ্ভিদ
নিঝুম দ্বীপে হরিণ এবং মহিষ ছাড়া অন্য কোনো হিংস্র প্রাণী নেই। হরিণের সংখ্যা প্রায় ২২,০০০ (প্রেক্ষাপট ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ)। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি। এছাড়াও শীতের মৌসুমে অজস্র প্রজাতির অতিথির পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপে বিশাল এলাকা পলিমাটির চর। জোয়ারের পানিতে ডুবে এবং ভাটা পড়লে শুঁকোয়। এই স্থানগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বসবাস। জোয়ারের পানিতে বয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এদের একমাত্র খাবার। এখানে রয়েছে মারসৃপারি নামে একধরনের মাছ যাদেরকে উভচর প্রাণী বলা হয়। ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে এই মারসৃপার, ৬-৯ ইঞ্চি লম্বা হয়। বর্ষা মৌসুমে ইলিশের জন্য নিঝুম দ্বীপ বিখ্যাত। এই সময় ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা নিঝুম দ্বীপে মাছ কিনতে আসে।। এছাড়া শীত কিংবা শীতের পরবর্তী মৌসুমে নিঝুম দ্বীপ চেঁউয়া মাছের জন্য বিখ্যাত। জেলেরা এই মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি করেন। এই শুঁটকি মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে। আবার এই শুঁটকি হাঁস-মুরগীর খাবারেও ব্যবহার করা হয়। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে কেওড়া গাছ। ইদানিং বনবিভাগ কিছু নোনা ঝাউও রোপন করছে। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৪৩ প্রজাতির লতাগুল্ম এবং ২১ প্রজাতির অন্যান্য গাছ।

নদী কর্ণফুলীর -কাহিনী


বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তীর্ণ জনপদের প্রাণপ্রবাহ বলতে গেলে কর্ণফুলী নদী। যেটি ভারতের লুসাই পর্বতমালার পাদদেশ থেকে বেয়ে রূপসী কর্ণফুলী পার্বত্য চট্টগ্রাম হয়ে চট্টগ্রামের বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বহু বন্ধুর পথ পেরিয়ে আসা কর্ণফুলী চট্টগ্রামের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে উপজীব্য হয়েছে। এই কর্ণফুলীর নামকরণ নিয়ে রয়েছে লোকগাথা, উপকথা, রূপকথা।আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক আদিবাসী রাজপুত্রের প্রেমে পড়েন। প্রাচীন কালের সেই রাজার ছিলো একটি মাত্র কন্যা। সেই কন্যাকে রাজা ভালবাসতো ভীষণ। এই কন্যা হাসলে সূর্য উঠতো, কাঁদলে বৃষ্টি নামতো। হাঁটলে বাতাস বইতো, তাকালেই ফুল ফুটতো। এই অপরূপা রাজকুমারী গোসল করতো পাহাড়ি ছড়ার জলে। ঝিরঝিরিয়ে বয়ে যেতো ছড়ার জল। একদিন নদী বেয়ে এক সওদাগর এলো। যুব সওদাগরের নধরকান্তি দেখে রাজকন্যা বিমোহিত। দু’জনের চোখের পলক আর পড়ে না। একে অপরের প্রেমে পড়ে। তারপর দিনগুলো রঙিন আর রাতগুলো স্বপ্নিল হয়ে ওঠে দু’জনের। দিন যায়, মাস যায়। তাদের প্রেমের কথা এক কান, দুই কান করতে করতে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে যুবক সওদাগরের বাণিজ্যের বহর গুটিয়ে অন্যবন্দরে পাল তোলার সময় হয়ে যায়। যুবক সওদাগর যাওয়ার কালে রাজকন্যাকে এই প্রতিশ্র“তি দিয়ে যায় যে, অচিরেই ফিরে এসে তাকে বিয়ে করে বিদেশে নিয়ে যাবে। তার স্মৃতির চিহ্ন হিসাবে রাজকন্যাকে একজোড়া কানের ফুল দিয়ে যুবক সওদাগর অন্যবন্দরের উদ্দেশ্যে পাল তোলে।
তারপর কানের ফুল পরে রাজকন্যা ঘুরে বেড়ায়। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়। কিন্তু সওদাগর আর ফিরে আসে না। রাজকন্যা প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নদীর তীরে অপেক্ষা করে। রাজকন্যার অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। দিনে দিনে বেড়ে ওঠে বিরহব্যথা।
এদিকে রাজার চোখে ঘুম নেই দেখতে দেখতে তার ছোট্ট মেয়েটি বড় হয়ে গেছে। সুপাত্রে কন্যা দান করতে হবে। অবশেষে দেখে-শুনে রাজা তার কন্যার বিবাহ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যময়। এক কান, দুই কান, করতে করতে খবর শেষে রাজকন্যার কানেও আসে।
রাজকন্যা আর কি করে। বিরহব্যথায় কাতর হয়ে, অবশেষে নদীর পাড়েই কাঁদতে বসে। দিনে দিনে দিন চলে যায়। কান্না আর শেষ হয় না। জীবন থাকতে সওদাগর ছাড়া আর কাউকে মালা দিতে পারবে না রাজকন্যা। এদিকে সওদাগরও আসছে না। একদিন পাগলপারা রাজকন্যার কানের ফুল হারিয়ে যায় নদীর বুকে। খুঁজতে খুঁজতে অস্থির হয়ে পড়ে কন্যা। শেষ পর্যন্ত আর খুঁজে পায় না। রাজকন্যার মনে করে সওদাগর আর আসবে না কোন দিন। কানের ফুল হারিয়ে যাওয়া যেন তারই লক্ষণ।
হতাশ, ক্লান্ত রাজকন্যা আরেক কানের ফুল তীরে খুলে রেখে, গায়ের জড়ানো ওড়না খুলে নদীর বুকে আত্মাহুতি দিয়ে প্রেমের মর্যাদা দেয়। সকলেই পরের দিন এসে দেখে রাজকন্যার ওড়না আছে, কানের ফুল আছে কিন্তু রাজকন্যা নেই। কিছুই বুঝতে আর বাকী থাকে না কারো। রাজকন্যা আর নেই। শোকে পাথর হয়ে রাজাও রাজ্য ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকে এই নদীর নাম হয়ে যায় কর্ণফুলী।

Friday, May 29, 2015

গোপনীয়


মাইর খায় মজনু কাঁদে লাইলি , ব্যাপার কি ?
গোপনীয় ।
কাজের মেয়েটা ঘণ্টায় বার বার বারান্দায় , ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
পাশের বাড়ি জোয়ান পোলা আমার গলিতে সারা দিন, ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
একটা সরকারি ফাইলে উপরে লিখা অতি গোপনীয়, ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
ডাক্তারে মনোনীত ল্যাবে সব রোগের পরীক্ষা ! ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
মেয়েটা বার বার বিয়ে ভেঙ্গে দেয় নিজের ইচ্ছায়। ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
ছেলেটা বিয়ে করতে চায় না, পরিবার চিন্তিত । ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
সরকারি চাকরি যা বেতন তার বার গুন খরছ, তবু সুখী। ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে ফাইল যায় না । ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার নাই , ক্লিনিকে ডাক্তার পাই। ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
মামলার শুরু আছে শেষ নাই, বিচারের আসায় উকিল ফাসায় । ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
সুযোগ পেলে কিশোরী মেয়ে , শুধু মোবাইল চায় । ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
ভোটের আগে দেয় সালাম , পাশের পরে খুজ নাই । ব্যাপার কি?
গোপনীয় ।
হায় রে কপাল দেশটা গোপনে না জানি কি হারায় !!!!

ধূমপান ত্যাগের গল্প .......................গল্প নয় সত্য



ইমুর খালত বোনের নাম কুমকুম । ইমুর চেয়ে বছর দশেকের বড় ! সেই হিসাবে ইমুর ভগ্নীপতি বা দুলাভাই হয় সামু সিকদার । করিম গঞ্জ উপজেলায় সিকদার বংশের বেশ নাম ডাক । সামু সিকদারের টাকা পায়সা ও মান সম্মান বেশ ভাল । এখন বয়স প্রায় ৪২ বছর । কিন্তু তার সিগারেটের নেশা খুব। বাংলা ফাইভ সিগারেট থেকে তার হাতেখড়ি এখন অবশ্য ব্যান্ড সন্স সিগারেট খায় । অনেক বার সে কিরা কসম খেয়েছে যে আর সিগারেট খাবে না কিন্তু কিছু লাভ হয় নাই, যে লাউ সেই কদু । গ্রীষ্মের ছুটিতে ইমু তার গ্রামের বাড়িতে । ইমুর ছোট মামার মাসায় আজ দুপুরে দাওয়াত । তাই অনেক দিন পর খালাত ভাই বোনদের সাথে দেখা হল ইমুর। এর মধ্য কুমকুম ইমু কে ডাকে বলল- কিরে ইমু তুই নাকি মানুষের মন নিয়া লেখা পড়া করিস , দেখ তোঁ তোর দুলাভাইকে ডাক্তার নিষেধ করেছে সিগারেট খাইতে কিন্তু সে তা ছারতে পারে না। আসলে সিগারেট ছারবে কি না ?
ইমু বলল আপু এভাবে সে সিগারেট ত্যাগ করবে না। মানুষ জানে পাপ করলে শাস্তি পাবে কিন্তু দেখ মানুষ সব চাইতে বেশি পাপ করে । আগে জানতে হবে সে মন থেকে চায় কি না ! এর মধ্য সামু দুলাভাই বলল হ্যাঁ ইমু মন থেকে চাই কিন্তু পারি না।
এখন ইমু বলল দেখুন দুলাভাই সব কাজের পিছনে একটা বাজেট লাগে । একটা প্রফাইল লাগে । এখন দুলা ভাই বলুন আপনি যে সিগারেট ছাড়তে চান তার জন্য বাজেট কত। আপনার বাজেট মত আপনার জন্য প্রফাইল বানান হবে।
দুলাভাই এই সামান্য কাজে আবার বাজেট প্রফাইল ।
ইমু বলল কাজ যদি সামান্য হবে, তাহালে তোঁ আপনি ছাড়তে পারতেন ? যে হে তুঁ আপনি তা ছাড়তে পারেন নাই । তাই কাজটা কি সামান্য বলা ঠিক ?
সবাই একসাথে বলল- না কাজটা সামান্য না ।
দুলাভাই বলল - এখন ইমু তোমার বাজেট বল । দুলাভাই বাজেট তোঁ আপনি বলবেন তবে আপনি এক বছরের সিগারেটের টাকা অ্যাডভান্স দিবেন । দুলা ভাই বলল কত।
ইমু বলল আপনি রোজ কত টাকার সিগারেট খান বলুন ।
দুলাভাই বলল গড়ে ৩০০ টাকা ।
ইমু ওকে ৩০০@৩৬৫=১০৯৫০০ টাকা ওকে । আপনি ৭০% এডভান্স করেন আগামী সাপ্তাহে আপনি সিগারেট ছেরে দিবেন । বিকালেই ইমুর হাতে টাকা চলে আসলো । ইমু প্রফাইল বানিয়ে কাজ শুরু করল । কুমকুম আপুকে বলল ইমু- আগামী সুক্রবার তোমাদের বাড়িতে আমি ও আমার লোক জন আসবো ।
যথা সময় লোক জন নিয়ে ইমু চলে আসলো । কুমকুম আপা তো অবাক ডেকোরেটর চেয়ার বাবুর্চি সকাল ছটায় কাজ শুরু করলো। একদম বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান। এর মধ্য একদল মুন্সি চলে আসলো সবাই বসে আল কোরআন পড়তে লাগলো । সাত টা খাসি জবাই হল । মাইকে কোরআন তেলয়াত চলছে । সামু সিকদার তো অবাক যে ইমু কি শুরু করল । দুপুরের মধ্য সামু সিকদার লক্ষ্য করলো যে তার সব আত্মীয় সজন যেমন চাচারা মামারা ফুফু ফুফা ভাই বোন বোনের জামাই , শ্বশুর বাড়ির লোক জন আসা শুরু করলো । বাড়িতে ইদের আনন্দ । দুপুরের নামজ শেষ ইতি মধ্য করিম গঞ্জ সদরের পেশ ইমান সহ পাশের মসজিদের ইমাম গণ চলে আসছে । এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার ও বয়স্ক মুরুব্বিরা চলে আসছে দাওয়াত খেতে ।
সবাই খাবার টেবিলে বসল ইমন সময় পেশ ইমাম সামু সিকদার কে ডেকে বলল আমি জনাব ইমুর কাছে সব সুনেছি যে আপনি ধূমপান ছাড়তে চান তাই এই আয়োজন । খুব মহৎ কাজ । ইমাম সবার সামনে সামু শিকদার কে এই বলে তওবা করালও যে... আমি তওবা করছি আল্লাহর নামে এই পবিত্র কুরান ছুঁয়ে উপস্থিত আমার স্ত্রী পুত্র কন্যা ভাই বোন মা ও আমার প্রতিবেশী সম্মানী এলাকা বাসি আমি আজ হইতে আর কোন দিন ধূমপান করিব না । যদি ধূমপান করি তাহালে আমি পবিত্র ধর্ম হইতে খারিজ হয়ে এক জন মুনাফেক হিসাবে গণ্য হব । এবং আমি আজ হইতে ধূমপান ত্যাগ করিলাম । হুজুর সবাইকে নিয়ে একটা বিশাল মোনাজাত করিল । খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই হাসি মুখে বিদায় নিল । ইমু তার বাকি ৩০% পেমেন্ট বুঝে নিল .১৯৯১ সনের থেকে এখন পর্যন্ত সামু সিকদার আর ধূমপান করে নাই ।

______বেকার জীবন ও প্রেম.........( ছোট গল্প )




ইন্টারভিউ এর জন্য রেডি হয়েই বসে আছে মিঠু  । প্রতি ইন্টারভিউতেই  দেরি হয় কারন রাত জেগে পড়তে হত । কিন্তু আজ দেরি হয়নি কারন, খুশিতে রাতে  ঘুমাই নি । মিঠু  আজ জানে যে, এই চাকরীটা  হয়ে যাবে । এক বড়-ভাই সব ব্যবস্থা করে রেখেছে ।  শুধু এটেন্ড করতে হবে আর “কমিশনার” সাহেবের চিঠিটা কোম্পানি ডিজিএম কে দিতে হবে ।  দুপুর বেলা রোদের মধ্যে গিয়ে টিউশনি করাতে হবে না । ছাত্রীর মা পাশে ঘড়ি নিয়ে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করবে না যে, আরো তো পাঁচ মিনিট বাকি আছে এখনই চলে যাবেন ? ছাত্রীর বাবা ছাত্রিকেক পড়ানোর সময় বারবার সন্দেহ নিয়ে উঁকি দেবে না ।
একটা ছাত্রীর বাবার  উপর  অনেক রাগ লুকিয়ে আছে । কোনো একদিন গলির অন্ধকারের মধ্যে পেলে  প্রিয় কয়েকটা গালি দিয়ে ঠাস করে এক চর মারব শালাকে ।
তবে ছাত্রীর মিষ্টি হাসিটা আর দেখতে পাব না । কেউ আর পড়ার বই ছেড়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসবে না । প্রাইভেট মাস্টার মানে সময়ের কিনা একটা গোলাম ।
 মিঠু এইসব ভাবতে ভাবতে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছি । তবে  বাসে যাব না, আজ যাবে রিক্সা । রিক্সা নিয়ে মতিঝিল  গিয়ে নামলো । এখন ও অনেক সময় বাকি দেখে পাশের চায়ের দোকানে বসলো । সাইডেই একটা চশমা পড়া  ছেলে অনেকগুলো কাগজপত্র নিয়ে বসে আছে ।
মিঠু ভাবছে চাকরি টা হলে হয়ত সানু তাকে বিয়ে করবে । প্রাইভেট পড়ানো কোন কাজ না । সানু একটা কথা- মিঠু তুমি বেকার । আর বেকার ছেলের কাছে তাকে তাঁর পরিবার বিয়ে দিবে না।
মিঠুর পাঁশে বসা ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল-
---   ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন ?
----বিরক্তির সাথে জবাব দিল, হ্যা । এখানে আজ কাগজপত্র নিয়ে সবাই ইন্টারভিউ দিতেই আসবে ।
--- তাকে বিরক্ত হতে দেখে মিঠুর মজা লাগল । ইচ্ছে করছিল ঘাড়ে হাত দিয়ে বলি, আরে শালার-ব্যাটা তোরা লোক-দেখানো ইন্টারভিউ দিচ্ছিস চাকরীটা তো আমিই পাবো । তবে কিছু না বলেই চা খেতে লাগলাম, সাথে একটা গোল্ডলিফ নিয়ে জোরে জোরে টান দিতে শুরু করলো ।
কিছুক্ষন পর মৌখিক পরীক্ষা হবে । সবাই রুমের বাইরে লাইন ধরে চেয়ারে বসে আছে । পিয়ন এসে এক এক করে নাম ধরে ডাক দিচ্ছে । মিঠু একটু হাসিও পাচ্ছে কারন, সবই লোক দেখানো । মিঠু  গিয়ে সেই লোকটার পাশেই বসলাম । তাকে বিরক্ত করে দারুন আনন্দ পাচ্ছে মিঠু  । কিন্তু এখন মনে হয় সে বিরক্ত হচ্ছে না । খেয়াল করলো তার হাত-পা কাঁপছে, কপালে ঘাম জমে আছে।
মিঠু  জিজ্ঞেস করলাম,
---- ভাই কোনো সমস্যা ?
-----সে চমকে উঠে বলল, ভাই আমার হাতটা একটু ধরেন ।
----মিঠু তার হাতটা চেপে ধরল । লোকটার প্রতি  তাঁর মায়া লাগল ।
--- লোক টা একটু ভরসা পেল । বলল থ্যাংকস 
--- মিঠু  বলল, এই ইন্টারভিউ দেয়ার দরকার নেই ভাই চলে যান ।
--- সে কাঁপতে কাঁপতে বলল, নারে ভাই এই চাকরীটা আমার পেতেই হবে । নাহলে আমার সুইসাইড ছাড়া
     গতি নেই ।
----মিঠু  পুরাই আশ্চর্য ! সুইসাইড করবেন কেন ?
----ভাই আমার মা নেই । বাবা প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে আছে । সে নিজের কোনো কাজ করতে পারে না । অথচ আমি তার চিকিৎসা করাতে পারি না । সামান্য টিউশনির টাকা দিয়ে বাজারই হয়না । চিকৎসা কিভাবে করাব ? বোনটা বাবার কাছে থাকে । প্রতি ইইন্টারভিউ দেয়ার পর আমার দিকে আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে । কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পায়না ।এদিকে ও স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে । বেতন দিতে পারি না । বলেই লোকটা কেঁদে দিল ।
মিঠু  তার সার্টিফিকেট গুলো হাতে নিয়ে অবাক হলাম । লোকটা এম.বি.এ করে সাধারন জুনিয়র হিসাবরক্ষকের পোস্টে ইন্টারভিউ দেবে । আর আমি ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে কেবল অনার্স পড়েই চাকরী পাচ্ছি । বুকের ভেতরটায় প্রচন্ড ব্যাথা হতে লাগল মিঠু  । তখন নিজেকে নরপিশাচ মনে হচ্ছিল । যেন কারো রক্ত চুষে খাচ্ছি । তাকে সার্টিফিকেট গুলো ফেরত দিয়ে মিঠু  পকেটের কমিশনার চিঠিটা দিয়ে বললাম, ভাই ভেতরে গিয়ে বলবেন আপনাকে মাসুদ সাহেব পাঠিয়েছেন আর এই চিঠিটা দেখাবেন । আজ আপনার চাকরী হয়ে যাবে । বলেই সেখান থেকে বিদায় নিল। মিঠু  ভাবতে লাগলো আমার নিজেরও একটা পরিবার আছে, বাবা ভাল চাকুরি করে । আমার এখনও অনেক কিছু করার সময় আছে, নিজের জন্য নিজের পরিবারের জন্য । আমি সৎ ভাবে আমার চেষ্টা চালিয়ে যাব । আর এবার ফাইনাল পরীক্ষা টা দিয়ে দেব ।
বিকেলে সানুর  এলো মিঠুর কাছে । এসেই বলল-
-- কি তুমি  চাকুরি পাও নাই ।
--- না
-- আসলে তোমার চাকুরি করার ইচ্ছা নাই । আমি তোমাকে তিন মাস সময় দিলাম এর মধ্য চাকুরি
  ও বিয়ে তোমাকে করতে হবে ।
-- দেখ তিন মাস পড়ে আমার অনার্স পরীক্ষা । এ সময় আমি কি করে বিয়ে করি । আচ্ছা সানু চল
  আজ বিয়েটা করি ।
--- না আমি কোন বেকার ছেলে কে বিয়ে করব না । তাছাড়া তুমি ভাল করে জান আমার বড় দুই
   দুলা ভাই ভাল চাকুরি করে । আমি তোমার বাবা মায়ের উপর বুঝা হতে পারবো না ।
--- আমার মা তো তোমাকে বউ করতে চায় ।
--- রাখ তোমার মায়ের কথা । আসলে তোমার মা বাসায় একটা কাজের মেয়ে চায় । না হয় কোন
   মা বেকার ছেলে কে বিয়ে করায় ।
--- দেখ আমি বেকার না প্রাইভেট পড়াই ।
--- পড়াও তো কি জানি । আসলে বড় লোকের মেয়ে খুঁজ গোপনে ।
--- সানু এভাবে কথা বল না।
--- কি ভাবে বলব । আমার ছোট বোন কে তো তুমিই পড়াতে তাই না।
--- হ্যাঁ তাই বলে কি আমি তোমার ছোট বোনকে কি লাভ করি নাকি !
---  যাই হোক । সব শিয়াল একেই ডাক । আমার বোন সিমা কিন্তু এখনো তোমাকে মিস করে
      মিঠু স্যার মানে !!!
--- থাক থাক । আমার কাজ আছে আমি যাই ।
--- যেতে মানা করি নাই । আজ থেকে তিন মাস মনে থাকে যেন ।
সানু চলে গেল । মিঠু কোন সিদান্ত নিতে পারলো না। এমন করে তিন মাস শেষ । সত্যি সানুর বিয়ে ।পাশাপাশি মহল্লা হওয়ায় মিঠু কাছে খবর চলে আসলো । হাত থেকে সিগারেট ফেলে সানুর বাসায় গেল । কিন্তু সানুর বাসার লোক জন বলল সানু দেখা করবে না। মিঠু কে চলে যেতে বলল ।
আজ  সত্যি মিঠুর মন অনেক খারাপ নিজ ঘরে কান্না করছে । কি করবে ভেবে পাচ্ছে না ।  চাকুরি টা থাকলে হয়ত আজ সানু তাকে বিয়ে করত ।
পরের দিন রাত নয়টা । মিঠু  তাঁর মাকে নিয়ে গেল ডাক্তারের কাছে একটু চেকাপ করাতে এমন সময় দেখলও ঐ চাকুরি দেয়া ছেলে টা তাঁর বাবা কে নিয়ে এসেছে ডাক্তার দেখাতে । মিঠু কে দেখে ঐ সে জড়িয়ে ধরল । তাঁর বাবা কে বলল যে চাকুরীটা মিঠু ই তাকে দিয়েছে । ভদ্র লোক মিঠু জড়িয়ে ধরে বলল বাবা তুমি আমাদের পরিবার কে বাচিয়েছ । আমি নামাজ পড়ে সারা জীবন তোমার জন্য দোয়া করব । মিঠু র মাকে বলল - আপা আপনি দেখবেন একদিন আপনার ছেলে আপনার মুখ উজ্জল করবে । মা মিঠু কে জড়িয়ে বলল- বাবা দুঃখ না পেলে জীবন কেমন টা বুঝা যায় না। সামনে তোমার সুন্দর জীবন । মিঠু চিন্তা করল যাক আমি একা দুঃখ পেলাম কিন্তু একটা গোটা পরিবার তো সুখি হল ।।

Thursday, May 28, 2015

না বলা ভালবাসা ..................... ছোট গল্প


সিমা সানু তারা দুই বোন । তাদের বাবা আলতাফ খান পেশায় একজন নাম করা উকিল । জেলা শহরে এক নামে তাকে সবাই চিনে । আলতাফ সাহেবের বাবার বাড়িতে মেয়ের আদরে বউ হয়েছিল পারুল । আলতাফ সাহেব তখন খুব ছোট ।পারুল কে নিয়ে আশা হয় মুলত খান বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসাবে ৯ বছর বয়সে। তখন আলতাফ বয়স বার বছরের মত । আলতাফ সাফ কলেজে পড়ার সময় পারুলের সাথে প্রেমে জড়িয়ে যায়। বড় খান সাহেব খুব বুদ্ধিমান মানুষ তাই ছেলে কে কলকাতায় পাঠিয়ে দেয়। আর পারুল কে বিয়ে দিয়ে দেয় ময়মনসিংহ থেকে রংপুর এক তামাক ব্যাবসায়ির সাথে । সেদিন পারুল খুব কেদে ছিল । রংপুর হারাগাছ পারুলের নতুন সংসার জীবন শুরু । পারুল এসে দেখল সে যাকে বিয়ে করেছে তার আরও দুইজন বউ আছে । এখানে সব মেয়ে রা বিড়ি বানানোর কাজ করে । প্রথম প্রথম খুব কষ্ট পেলেও স্বামী তাকে হাসান মিয়া তাকে বুঝায় দেখ আমারা গরিব মানুষ যে তবে খারাপ না। হাতের কাজ শিখ তখন দেখ কাজের মধ্য থাকলে আর কষ্ট মনে থাবে না। পারুল নিজেকে আস্তে আস্তে ঠিক করল আর স্বামীর কথায় কাজ কে কাজের মধ্য সুখ খুজতে লাগলো ।
আলতাফ কিছুতেই পারুল কে ভুলতে পারছিল না। বাড়িতে আসার পর সারা দিন পুকুর ঘাটেই বসে থাকত । ছেলের এমন অবস্তায় আলতাফ খানের মা তারাতারি ছেলে কি অনেক বড় বাড়িতে সুন্দর দেখে একটা মেয়ে সাথে বিয়ে দিল । কিন্তু আলতাফ মনে করে সে পারুলের সাথে কাজটা ঠিক করে নাই । পারুল আলতাফ কে খুব ভাল ভাবে বুঝত । কোন জিনিস চাইবার আগে তার সামনে চলে আসতো । কত রাত পুকুর পারে বসে বসে শুধু তারা দেখে কাটিয়ে ছে । পারুলের একটা গুন আলতাফ কে খুব মুগ্ধ করত টা হল পারুল খুব সুন্দর করে গান গাইতে পারত । যদিও মেয়েটা দেখতে শ্যামলা কিন্তু আল্লাহ্‌ তাকে মন দিয়েছিল ।
১০ বছরের মধ্য আইন পেশায় খান খুব ভাল করেছে । একটা বিশেষ মামলায় সে রংপুর যায় । সকাল ১১ টায় কাচারির কাজ শেষ করে ফেলে । আলতাফ চিন্তা করল রংপুর যখন এসেছি তাহালে পারুল কে একটু দেখে যাই । যে চিন্তা সে কাজ । রংপুর খুব শান্ত একটা শহর । মানুষ গুলো একটু বেশি সরল ও গরিব । হারাগাছ নেমেই ঠিকানা মত গেল পারুলের বাড়িতে। পারুল ঘরে ডুকে খুব অবাক হল। যেমন টা ভেবে ছিল ঠিক তেমনেই । একটা ছোট ঘর । পারুল আলতাফ কে দেখে অবেক । একটা হাত পাখা নিয়ে বাতাস করতে লাগলো । গত বার বছরে অনেক পরিবর্তন পারুলের । আলতাফ কে বলল-
-- কেমন আছেন । আর কি মনে করে এত বছর পর ।
-- পারুল একটা কাজে আসা তাই ভাবলাম তোমাকে দেখে যাই ।
-- খুব ভাল করেছেন । আমি অনেক ভাগ্যবতী এই যে আপনি আমাকে সরণ রেখেছেন
-- তা পারুল তোমার ছেলে মেয়ে ।
-- পারুল বলল একটা মাত্র ছেলে স্কুলে পারে । আমি তো বিড়ির কাজ করি ।
--- আপনার কথা বলেন ।
-- থাক পারুল আমার কথা । তুমি আমাকে মাপ করে দিও । জীবনে আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি
। থাক সে কথা আপনি বসেন আরাম করে । পারুল নিজের হাতে আবার পায়ের মুজা গুলো গুল দিল।
সারা দিন থেকে বিকাল বেলায় বিদায় নিল আলতাফ । বিদায়ের সময় পারুলের হাতে দশহাজার টাকা দিয়ে বলল ঘরটা মেরামত করিস । ছেলে কে লিখা পড়া করাইস । তোর ছেলের নামটা তো জানা হল না।
--- ছেলের নাম মঞ্জু ।
--- আলতাফ অবাক হল । পুকুর পারে বসে বলেছিল তাদের সন্তান হলে নাম রাখবে মঞ্জু ।
সেটা ছেলেই হোক আর মেয়েই হোক । বিদায় নিয়ে চলে আসে আলতাফ । মমতার চোখের জল
নিরবে ঝরে পারুলের চোখে । অবাক মানুষের জীবন ভালবাসা আর মমতা সত্যি মানুষকে এভাবে
কাদাতে পারে তা কিন্তু আলতাফ আগে ভাবতে পারে নাই । সময় গড়িয়ে গেল অনেক দিন এর মধ্য
সানু বসে পেপার পড়ছে বারান্দায়।আজ কলেজ নেই । ময়মনসিংহ মহিলা কলেজে সে পরে । এমন সময়
সিমা এসে বলল --
-- আপু মা ডাকছে আব্বুর নাকি অনেক তোমার উপর অনেক বিরক্ত
-- আমার উপর বিরক্ত তাতে তো কি আব্বু কে বলল আমার টাকা লাগবে। আমি কলেজের পিক নিকে
যাব
--- মা বলেছে তোমাকে যেতে দিবে না ।
--- মায়ের কথায় হবে না । যা বলার আব্বুকে বলতে বলতে বল । আলতাফ সাহেব তার বড় মেয়ে কে একটু বেশি আদর করে । কারন বড় মেয়ে একটু বেশি অভিমানি । আলতাফ সাহেব ডাকল
-- কই মা সানু একটু শুনে যা
-- হা আব্বু বলল , তুমি তো আমার উপর বিরক্ত তাই না ।
-- হ্যাঁ আমি বিরক্ত তবে তোমার উপর একা না । তোমার মা ও মেয়ের উপর ।
-- তা তো হবেই !তুমি তো আম্মুর কোন দোষ দেখ না । আমার সব কাজ আম্মু ভুল ধরে
-- তুমি তো ভুল কর ।
-- হ্যাঁ আমি ভুল করি আর সিমা ভুল করে না ।
-- আছা তুমি পিক নিকে যাবে কিন্তু মাকে নিলে সমস্যা কী
-- আম্মু সাথে গেলে কারো সাথে কথা বলতে দেয় না।
--- অহ তাই বল ।
-- ঠিক আছে দুই বোন যাও । তবে সাবধান ।
এই হল আলতাফ সাহেবের সংসার । কোট থেকে ফিরে চেম্বারে বসে কাজ করছিল এমন সময় একজন ছেলে আসলো হাতে একটা চিঠি । আলতাফ সাহেবের চিনতে অসুবিধা হল না । পারুলের ছেলে তবে এখানে কেন । চিঠি না পরে বলল
-- বাবা বস , কেমন আছ ,
-- জি মামা ভাল
-- কই সানুর আম্মু ও কয়দিন এখানে থাকবে ।
-- কে এই ছেলে ।
-- তুমি চিনবে না । আমার দূর সম্পর্কের বোনের ছেলের ছেলে । যাও বাবা গেস্ট রুমে যাও । আলতাফ সাহেব চিঠিটা পরে অবাক হল । কই শুনছ এই ছেলে কিন্তু জুয়েল ।
-- জুয়েল বল আর হীরা বল আমার মেয়েরা বড় হয়েছে । এত বড় ছেলে বাসায় রাখা যাবে না । তারাতারি অন্য কোথাও রাখো । আকলতাফ সাহেব একটু হাসল । আর মনে মনে বলল এই মহিলা কোন দিন মানবতা কই বুঝবে না ।
রুমটা গুছিয়ে নিল । এমন সময় দুপুরে খাবার নিয়ে ঘরে এলো কাজের মেয়ে মিনা । বলল - আপনি আমাদের ঘরে যাবেন না । যা কিছু লাগবে চেম্বারের সোহেল আছে তাকে বলবেন ।। আমি আপনার ঘরে খাবার দিয়ে যাব । আর ভাই জান আপনার মামার বউ মানে আপনার মামী খুব রাগি মহিলা ।
--- আমি তো এখানে অল্প কিছু দিন থাকব । আসা করি কোন সমস্যা হবে না ।
--- তোমার নাম কি
-- আমার নাম মিনা এই বাসায় কাজ করি ।
-- ও মিনা বোন তোমার বাড়ি কোথায় ।
--- আপনি চিনবেন না । আমাদের বাড়ি নান্দাইল । ভুইয়া পাড়া । আমার বাবা আমার মায়ের রে
খুন করছে । তাই জেলে এই স্যারের বাসায় আমি কাজ করি । ঐ আমার বাবার মামলা চালায়
--- কেন তোমার মাকে তোমার বাবা খুন করল
--- কেন আবার । আমার মা একটা ম্যাসে রান্না করত । পরে ম্যাসের এক বেডার সাথে নাকি প্রেম করেছিল । মা পলাইয়া তার লগে সিনামা দেখতে গেছিল । বাবা টের পাইয়া । মারে গলায় গামছা দিয়া মাইরা ফেলছে । আর ঐ বেডার ও হাত পা ভাইঙ্গা দিছে । ঐ বেডা এখন পঙ্গ ।
--- তোমরা কয় ভাই বোন মিনা ।
--- আমি একা ,
-- অহ মিনা তুমি অনেক ভাল একটা মেয়ে । আমাকে মঞ্জু ভাই বলে ডেক ।
মিনার মনটা আনন্দে ভরে গেল । মঞ্জু অবাক হল কারন সে নিজেও একজন গরিবের সন্তান ।
রাতে খাবারের টেবিলে বলল কি সানুর মা ছেলে টা কোথায় ।
-- ওকে ওর রুমে খাবার দিয়েছি ।
-- কেন আমাদের সাথে বসে খেত ।
--- কে আব্বু সানু ও সিমা বলল
-- তোমরা চিনবে না মা । আমার এক গরিব বোনের ছেলে ।
-- সানুর মা বলল - গরিব তাহালে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করে দাও ।
--- আহ থাম তো । যা না জান তাই নিয়ে কথা বলতে ছো । আর তুম জানবে কি করে তোমার বংশে তো কেউ মেট্রিক পাশ করে নাই ।
--- ঠিক বলেছ বাবা । মা মনে করে টাকা আর বংশ সব । এটা কি ঠিক বাবা । আর কে এসেছে কি পরিচয় বল বাবা সিমার কথা
-- মা মনি ছেলেটা নাম মঞ্জু । এখানে মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা দিয়েছে
-- ওমা বল কি
-- হ্যাঁ বুয়েটেও দিয়েছে । সানু বলল খুব মজা হবে । আমি কালকে ভাই কে নিয়ে কলেজে যাব । আপু পিক নিকে ও নিতে পার । সবাই ভাবে আমাদের ভাই নাই । সবাই কে অবাক করে দেব যে আমাদের একটা ভাই আছে সে অনেক গুড ছাত্র ।
--- আলতাফ সাহেব মেয়েদের কথা শুনে খুব খুশি । ভাগ্য মেয়েরা তার মত মনের হয়েছে ।
সাকালে মিনা দুই বোন কে নিয়ে গেল গেস্ট রুমে । সানু অবাক হয়ে দেখছে মঞ্জুর চোখের দিকে । কি মায়া লাগা চোখ । সিমা নিজেই বলল - ভাইয়া আমি সিমা ক্লাস টেন । আমার বড় আপু সানু কলেজে পরে ইন্টার প্রথম বর্ষ । আবার মিনা বলল ভাই জান সারের মেয়ে । আপনার মামাত বোন ।
সানু বলল--এই মিনা বিছার চাদরটা বদলাও । আর নাস্তা ঘরের টেবিলে দাও ।
মঞ্জু বলল--
-- না থাক আমি এখানে ভাল আছি
-- বেশি কথা বলা যাবে না । ওকে মিঃ টার । কি বলিস সিমা
-- হ্যাঁ তুমি ঠিক আপু আমাদের ভাই আমাদের সাথে খাবে ।
খুব অল্প সময়ের মধ্য সানু সিমার সাথে তাঁর অজানা মায়ার বন্ধুত হয়ে যায় । বিকেল হলেই চলে যায় কৃষি বিশ্ব বিদ্যাল্যের ক্যাম্পসে । সানু খুব সুন্দর করে বলল - মঞ্জু ভাই তুমি কোথায় পরবে । ধর মেডিক্যাল টিকলে আবার বুয়েট এ । কোন টা বেঁচে নেবে ।
-- সানু তুমিই বল আমি কোনটা নিলে ভাল হয় ,
-- বুয়েট অ্যান্ড সিভিল
-- আমার ও ইচ্ছা
-- ডাক্তারি পড়ার মত টাকা নেই ।
-- মঞ্জু ভাই তোমার টাকার চিন্তা করতে হবে না । আব্বু আছে না।
সানু সিমা আর মঞ্জু তাদের সময় খুব ভালই যাচ্ছে । বিকেলে মঞ্জু বারান্দায় বসে পেপার পরছিল । এমন সময় সানু এসে বলল
-- মঞ্জু ভাই একটা চিঠি লিখে দিতে হবে আমার বান্ধবি কে দেব । এমন ভাবে লিখে দিতে হবে যে
কোন যেন, কোন ছেলে কোন মেয়ে কে দিয়েছে ।
-- মঞ্জু একটু হেসে -আচ্ছা কাল সকালে নিও
-- মঞ্জু ভাই আমি চাই তুমি নাম করা ইঙ্গিনিয়ার হও । আমি আব্বুকে বলেছি । সে তোমার সব
ধরনের সহযোগিতা করবে ।
সিমা দু জনের দিকে তাকিয়ে বলে- সানু আপু আমি কিন্তু মঞ্জু ভাইকে তোমার চেয়ে বেশি পছন্দ করি
-- ঠিক আছে তুই যদি বেশি পছন্দ করিস তাহালে মঞ্জু ভাই তোর ।
-- না আপু আমি এত স্বার্থ পর না । মঞ্জু ভাই কে তোমাকে দিয়ে দিলাম ।
--- মঞ্জু বলে তোমরা দুই বোন আমার কাছে অনেক প্রিয় । সিমা তুমি ভাল করে পড়। সামনে তোমার এস এস সি কিন্তু !
-- আর আপুর লেখা পড়া করবেনা বুঝি ।
সানু মনের অজান্তেই মঞ্জু কে ভাল লাগতে থাকে । সে স্বপ্ন দেখে মঞ্জুর মধ্য নিজেকে । সিমা কে বলে শুন সিমা আমাদের বড় ভাই নাই । মঞ্জু অনেক ট্যালেন্ট ছাত্র । বাবার খুব পছন্দ । আমাদের সাথে থেকে যাবে মঞ্জু ভাই । কি বলিস ?
-- খারাপ হয় না। তুমি কি আবার ভাইয়ার প্রেমে পড়লে নাকি ? যা প্রেমে পড়লে কি তকে বলতাম না
।খুব সকাল মঞ্জু চিঠিটা লিখা শেষ করে কয়েক বার পড়লো । মঞ্জু কিন্তু সানু কে কল্পনা করেই চিঠিটা লিখেছে । কাজের মেয়ে মিনা কে ডেকে মঞ্জু তাঁর হাতে চিঠিটা দিয়ে বলল- এটা সানু কে দিবে । মিনা চিঠি নিয়ে সানু কাছে যাওয়ার সময় সানুর মা বলল - কি রে মিনা হাতে কি দেখি বলে চিঠিটা পেয়ে সানুর মায়ের মাথায় রক্ত উঠে গেল । তখন সানু ও সিমা ঘুমাচ্ছিল । চিঠিটা পড়ে সুজা মঞ্জুর রুমে গিয়ে , মঞ্জুর গালে ঠাস ঠাস করে চর বসিয়ে দিল । আর বলতে লাগলো ছোট লোকের বাচ্চা । এখন জামা কাপড় নিয়ে এ বাড়ি থেকে বের হ । মঞ্জু আর কোন কথা বলে না । বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসে রেল স্টেশনে । ট্রেন পেয়ে যায় ঢাকার ।
কাজের মেয়ে মিনা দূর থেকে সব দেখে কিন্তু কিছু বলার থাকে না। সানু ঘুম থেকে উঠে নাস্তার টেবিলে । সবাই বসছে এমন সময় সিমা বলে মঞ্জু ভাই কোথায় ।
--- সানুর মা বলে ও চলে গেছে ।
--- সানু চলে গেছে মানে
--- সানুর বাবা কি বলছ । আগামী কাল ও মেডিক্যালে ভর্তি হবে । আমি সব ঠিক করে এসেছি ।
--- সানুর মা সানুর বাবা কে সেই চিঠিটা দেখায় । সানু বলে দেখি । সানু পড়ে বলে খুব সুন্দর করে তো লেখেছে ।
--- সানুর মা বলে কত সাহস সে তোমাকে এই চিঠি লিখে ।
--- মা এই হোল তোমাকে নিয়ে একটা সমস্যা । কোন কিছু না জেনে আগেই মাইন্ড কর । আব্বু আমার বান্ধুবির জন্য এই লিখতে বলেছি । যে ওকে নিয়ে মজা করব । মঞ্জু ভাই তো সিমা আর আমার কথা শুনে এই টা লিখেছে । সানুর মা চুপ হয়ে গেল । নিজের বুকামি বুঝতে পারলো । কিন্তু মঞ্জু কে আর পাওয়া গেল না । মঞ্জু বাড়িতে ও যায় নাই । সানু সারা দিন সারা রাত কান্না করলো ।
মনের অজান্তে সে মঞ্জু কে ভাল বেসেছে । মঞ্জুর মত এত সরল মনের মানুষ কে তাঁর মা মেরেছে ।
সানু আর সিমা দুই বোন বাবা গলা ধরে কান্না করে বলে । বাবা ও কি আর কোন দিন ফিরে আসবে না.............................................

Friday, May 22, 2015

এক জন মনোবিজ্ঞানী ও পরকীয়া প্রেমিক


---------------------------------------------------
রেলগাড়িতে একজন মনোবিজ্ঞানীর সামনে বসে ছিল এক যুবক। যুবকের মুখে খুব দুশ্চিন্তার ভাব ফুটে আছে।
কিছুক্ষণের মধ্যে দু’জনের পরিচয় হল। এক পর্যায়ে যুবকটি মনোবিজ্ঞানীকে বলল
--- সাত বছর আগে আমি বিয়ে করেছি। আমার একটি ৫ বছরের মেয়ে আছে। আমার স্ত্রী আর আমি একই ক্লাশে পড়াশোনা করতাম। সে ভালো মানুষ। কর্মক্ষেত্রে আমিও যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি। কিন্তু এক বছর আগে একটি সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় এবং আমি তাকে ভালবাসি। আমি এখন যে সমস্যায় আছি -এমন পরিস্থিতিতে মিঃ মনোবিজ্ঞানীর আপনি কি করতেন । যদি সমস্যা টা আপনার হতো ।
---- মনোবিজ্ঞানীর বলল তোমার পরিবর্তী পরিকল্পনা কি আমাকে বল
------আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাই। কিন্তু এখনো এ- ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তাই ভয়ানক দুশ্চিন্তায় আছি।
--- ‘দুটোর মধ্যে একটি বাছাই করা সত্যিই সহজ কাজ নয়। এ- নিয়ে তোমার মনে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে তা খুবই স্বাভাবিক। মনোবিজ্ঞানী কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন
--তোমাকে কি একটা গল্প বলতে পারি । যদি তুমি মনোযোগ দিয়ে শুন ।
-- হ্যাঁ বলুন যদি এতে আমার উপকার হয় ।
---হ্যা হবে । তবে একটা সিদান্ত নিতে পারবে ।
-- সিদান্ত নেয়ার মত হলে বলুন
--- তাহালে শুন । তুমি তোমার বসের হয়ে একটি বড় কাজ করলে। এখন তিনি তোমাকে পুরষ্কৃত করতে চান। তিনি তোমাকে দুটো পুরষ্কারের একটি বেছে নিতে বললেন। পুরষ্কার দুটি হচ্ছে: তোমাকে নগদ দুই লাখ টাকা দেয়া হবে অথবা তিন বছর পর তোমাকে চার লাখ টাকা দেয়া হবে। তখন তুমি কোনটি নেবে?’
--- অবশ্যই আমি নগদ পুরষ্কারই নেবো’, যুবক কোনোকিছু না ভেবেই উত্তর দিল।
--- কেন? নগদ নিবে
--- ‘কারণ, ভবিষ্যত অনিশ্চিত। কে জানে কয়েক বছর পর কী ঘটবে? তিন বছর পর আমার বস না-ও থাকতে পারেন। অথবা তিন বছর পর টাকার মূল্যমানও হ্রাস পেতে পারে।’
--- মনোবিজ্ঞানী হেসে বললেন, ‘তুমি ঠিকই বলেছ। ভবিষ্যতের টাকার চাইতে বতর্মান টাকার মূল্য অনেক বেশী। ঠিক তেমনি, ভবিষ্যতের সুখের চাইতে বতর্মান সুখের মূল্য বেশী। কেননা, ভবিষ্যত সবসময় অনিশ্চিত। কে জানে ভবিষ্যতে হয়তো সেই সুন্দরী মেয়ে আর তোমাকে ভালোবাসবে না; তোমাদের দু’জনের সুসম্পর্ক তখন না-ও থাকতে পারে। তোমার বর্তমান স্ত্রী সম্পর্কে তুমি জানো; সে তোমাকে ভালোবাসে এবং সে ভালো মানুষ। তাই তোমার উচিত বর্তমানের ওপর ভরসা করে থাকা , বর্তমান সুখকে আঁকড়ে ধরা; ভবিষ্যতের সুখের আশায় বর্তমান সুখকে ত্যাগ না করা।’
মনোবিজ্ঞানী কথা শুনে যুবকের মনের সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব একমুহূর্তে দূর হয়ে গেল। সে বলল, ‘আমি পরের ষ্টেশনে নামবো। আমি আমার মেয়েবন্ধুর কাছে যাবো না,
যাবো আমার স্ত্রীর কাছে। গোটা বিষয়টি এখন আমার কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে। আমাকে ভালো পরামর্শ দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।"

Monday, May 18, 2015

খুনি প্রেমিক..............................।


সেলিনা জাহান প্রিয়া ।।
মোতালেবের মেয়ের নাম পরী । ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ার পরে বাপে আর স্কুলে যাইতে দেয় নাই । গঞ্জের হাটে মোতালেবের ধান চালের বেশ বড় মোকাম । এক মেয়ের পর দুই ছেলের জন্ম । তাই মেয়ে কে খুব আদর করে মোতালেব । টাকা জমি সবেই আছে তার তবে একটা বিষয় খুব মজার তার দ্বিতীয় বিয়েটা ছিল খুব রহস্য। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর মোতালেবের যত উন্নতি । একেই গ্রামের এক বিধবা মেয়ে কে বিয়ে করে।ঐ মহিলার অনেক টাকা ছিল তার কারনে বিয়ের পর থেকে কিছু লোক তার পিছনে লেগেছে ।
লাগার কারন টা মোতালেবের দ্বিতীয় বউ রাহেলা । রাহেলা খুব সু কোশলে তার প্রথম স্বামীর সব টাকা পয়সা জমি তার নিজ নামে করিয়ে নেয় ।প্রথম স্বামীর ঘরের ছেলে কে রাহেলা কিছু দেয় নাই । তারা তাদের বাপের ভিটায় থাকে চাচাদের সাথে । রাহেলার ছেলে স্বপণ ও মেয়ে স্বর্ণা তার মায়ের সাথে কথা বলে না। তবে চাচা ও চাচিরা তাদের বাবা মায়ের কষ্ট অনুভব করতে দেয় না।
মোতালেব মিয়া এখন যেমন পয়সাওয়ালা তেমন একটা সু চতুর ব্যক্তি । কেউ তার সাথে কোন কিছু নিয়া বারাবারি করে না। গ্রামের রাজনীতি সে বুঝে তাই সেই সব লোকের সাথে জোট বেধে চলে ।
মোতালেবের বাড়ির সামনে একটা পুকুর পাকা ঘাট , আশপাশের সবাই পাকা ঘাট বলে গাঁ গোসল করতে এই পুকুরে আশে । পরী কলস নিয়ে পুকুর ঘাঁটে পানি ভরছিল ঠিক এমন সময় রঞ্জন বলল
--জল কন্যার কেশ বরন চুল কিন্তু চোখে জল কেন!!
-- মুখে পানি দিলে চোখে জল থাকবে!
-- না আমি ভাব লাম বাবার আদরের মেয়ে তাই বাবার জন্য কাঁদছ।
-- বাবার জন্য কাদলে কি এমন সময় পুকুর ঘাঁটে কেউ জল নিতে আসে ।
-- আহা রে পরী বানু কি তাহালে আমার জন্য ঘাঁটে
-- না তোমার জন্য না । তোমার দাদার জন্য ।
-- ইস আমার দাদির চেহারা দেখছ ।
-- দেখছি । মরার আগে তোমার দাদারে শান্তি দেয় নাই ।
-- ভাল । এই জন্যই আমি তোমাকে পছন্দ করছি ।
-- থাক তোমার পছন্দ নিয়া। বিড়ালের কপালে ইলিশ মাছের কাঁটাও ঝুটে না।
-- অহ তাই ঠিক আছে দেখা যাবে ।
-- শুন রঞ্জন আমার দিকে তাকাইয়া লাভ নাই । তুমি আগামী বছর দিবা মেট্রিক । তার পর এই এ । তার পর সে বিয়ে । আর আমি তোমাকে পছন্দ করে লাভ নাই । আমার বাবা বলেছে এক মায়ের ছেলের কাছে বিয়া দিবে । আমার নাতি নাত্নি হোক তাদের লাইন ধর ।
রঞ্জন অবাক হয়ে পরীর কথা শুনে । আসলে রঞ্জন আর পরী ক্লাসমেট তাই রঞ্জন একটু দুষ্টামি করে অন্য কিছু না। রঞ্জন জঙ্গল বাড়ি হাই স্কুলের খুব ভাল ছাত্র । খুব ভাল বল খেলে । বাবার অবস্তা মোটা মুটি ভাল । তবে নানা বাড়ির অবস্তা খুব ভাল । রঞ্জনের বাবা খুব রাগি মানুষ কিন্তু খুব সত্য বাদি ছয় নয় বুঝে না ।
পরী আর রঞ্জন স্কুল জীবন থেকে এক জন আরেক জনের সাথে দেখা হলে ঝগড়া হবেই । অনেক বার এই জন্য রঞ্জন কে শাসন করেছে মোতালেব মিয়া । এখন পরী বড় হওয়াতে আর বিচার সালিশ নাই । ঝগড়াটা একটা নীবির বন্ধুতে পরিণীত হয়েছে । এ দিকে রঞ্জন আর স্বপনের এক চাচাত ভাই সাজুর সাথে খুব মিল । সাজু আর্মিতে চাকুরি নিয়েছে এ দু বছর । বাড়িতে আসলে আড্ডা হয় রঞ্জনের সাথে । রঞ্জন রা আবার সাত ভাই । এদের মধ্য রঞ্জন ছয় নাম্বার ভাই । অন্য ভাইদের দাপটে রঞ্জন খুব দাপটে চলে ।
রবি বার স্কুল বন্ধ রঞ্জন প্রাইভেট পরতে যায় শঙ্কর বাবুর কাছে । শঙ্কর বাবুর মেয়ে লক্ষ্মী হল পরীর বান্ধবি । মাঝে মাঝে পরী আসে ।
রঞ্জন এসে দেখে স্যার নাই তাই অপেক্ষা করছে এমন সময় লক্ষ্মী বলল-
-- রঞ্জন ভাই পিসির ঘরে যান তারাতারি ।একটা সাপ পিসির ঘরে ।রঞ্জন একটা লাঠি নিয়ে পিসির ঘরে যায় ।
-- কি মারবে নাকি আমাকে
-- ওতুমি!!!ও যে বললা সাপ ।
-- মেয়ে মানুষ আর সাপের মধ্য তেমন কোন পার্থক্য নাই । মেয়ে মানুষ শুধু কানে শুনে । কিন্তু সময়
মত ঠিকেই ছুপ মারে ।
-- ইস কি যে সাপ । তা কোথায় কামড় দিবে ।
-- তোমার কলিজায় ।
-- আমার কলিজা তো নাই ।
-- কেন নাই । শুনি ।
-- কলিজা থাকলে তো তোমারে তুইলা আনতাম ।
-- তুইলা আনতে হবে না। আমার পা আছে । ডাক দিলে হাইটা আসতে পারব ।
-- তুমি আসতে চাইলে কিন্তু আমি কুলে করে আনব ।
-- কুলে করে আনতে হবে না । পারলে একটা সাইকেল নিয়া আইস । চাঁদনী রাতে কাচা রাস্তায় সাইকেল চড়তে অনেক মজা ।
-- সত্যি আইবা তো । মরিস খালি বাজারে যাত্রা আইসে যাইবা ।
-- দাদির ঘরে কিন্তু দাদি তো রাইতে আবার ঘুম থেকে ডাকে পানি চায় , বাথ রুমে যায় ।
-- শুন দাদিরে ৪ টা হিসটাসিন বড়ি বিকালে খাবার স্যালাইনের সাথে খাওয়ে দিও ।
-- সাহস আছে তো । আমি কিন্তু সত্যি আসবো । লক্ষ্মী বলে - কিরে আমারে নিবি । পরী বলে- নারে
লক্ষ্মী এক সাইকেলে দুই সাওয়ারি ভাল না।
-- পরী যাই করিস দেখিস তোর বাপে না আবার রঞ্জন কে ধুলাই দেয় ।
-- লক্ষ্মী দিদি চিন্তা কর না । ওর বাপরে আমি কিন্তু ডরাই না।পরী আমি রাতে পুকুরে একটা ঢিল পারলে তুমি জানালা দিয়া আইস ।
-- কয়টায় আসবা
-- রাত ১১ টায়
পরী কিন্তু দাদিরে ঠিকেই ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়েছে সন্ধ্যা ৭ টায় । দাদি রাত নয়টায় বলে -
-- পরী আমার মাথা জিম জিম করে কেন । দাদি মনে হয় প্রেসার লো চিন্তা কর না ।
-- আচ্ছা আমি ঘুমাইলে কিন্তু তাজ্জতের নামাজের সময় ডেকে দিস ।
পরী কিন্তু এমন সাহস কখনো এর আগে করে নাই । এই সাহস টা পেয়েছে তার দ্বিতীয় মায়ের কাছ থেকে । ঐ মা গল্পের ছলে বলেছে আগে নাকি তার বাবা ওনাকে নিয়ে এভাবে করিম গঞ্জ যেত যাত্রা দেখতে ।
পরী মনি খুব অস্তির । একটা কান পুকুরে জলের দিকে । চেয়ে আছে ঘড়ির দিকে । রাত এগার টা । শব্দ পেল পরী মনি । শীতের চাদরটা ভাল করে শরীর মুরিয়ে ঢেকে নিল । সাইকেলে সামনে বসল ।
বেশি কুয়াসা নেই । রঞ্জন খুব সুন্দর করে সাইকেল চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । রঞ্জন বলল -
-- তুমি আসবা এই বিশ্বাস আমার ছিল ।
-- আমি অবিশ্বাসের কি করেছি শুনি ।
-- কিছু কর নাই আর বাকিও রাখ নাই । তোমার বাবা আমাকে যে কতবার বাবার হাতে মার
খাইয়েছে সে খেয়াল আছে ।
-- সে খেয়াল আছে বলেই তো আসলাম । যেন মাইরাটা ভাল করে খাও ।
-- দেখ কে জানি মুখে লাইট মারছে ।
-- ও রঞ্জন তুমি ভয় পাইয় না। আমরা এখন অন্য ইউনিয়ন এ । এখানে আমাকে কেউ চিনবে না।
-- রাস্তায় যদি ডাকাত ধরে পরী ।
-- চিন্তা কর না কমরে ওড়না দিয়ে একটা দাও সাথে আনছি ।
-- রঞ্জন তো অবাক সত্যি একটা দাও নিয়ে আসছে পরী মনি । তোমার তো অনেক বুদ্ধি ।
-- এটা কিন্তু আমি সৎ মায়ের কাছ থেকে সিখছি । অনেক কথায় কেটে যায় সময় । চাঁদের আলতে রঞ্জন আর পরী ঠিক যাত্রা দেখে চলে আসে । পরিকে রঞ্জন আর বলতে হয় না আমি তোমাকে ভাল বাসি বা পরীকেও বলতে হয় নাই । তারা কেউ কাউকে কোন দিন চিঠি লিখে নাই। শীত শেষ গরম পরেছে । মোতালব মিয়া একটু একটু খবর পায় যে পরী ও রঞ্জন কে মাঝে নাকি রাস্তায় বা মাঠের মধ্য একটা শিমুল গাছ তলে দেখা যায় । কিন্তু কেউ কোন প্রমান দিতে পারে নাই ।মোতালব মিয়া ও চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে । কিন্তু মোতালব মিয়াঁর চোখ গেল মেয়ের পায়ে , দেখল এক পায়ে চেইনের মত নুপুর পারা । আর সেই রকম একটা চেইন হাতে পরা রঞ্জনের । বুঝতে আর বাকি রইল না ।
ভোর বেলা মোতালব মিয়া চিল্লাতে লাগলো ডাকাত ডাকাত । ঘরের দরজা ভাঙ্গা মোতালবের হাত বাঁধা। মোতালবের বউ রাহেলা চিলাচ্ছে । সকালে পুলিশ আসলে মামলা হয় । তিন জন আসামি রঞ্জন সাজু ও কাঞ্চন । কাঞ্চনের বাবার সাথে মোতালব জমি নিয়ে বিরুধ । সাজু ছুটিতে বাড়িতে । গত কাল তিন জন কে একসাথে মোতালব দেখেছে বাজারে । আর যাই কই এক সাথে তিন পাখি । আসলে থানার এক পুলিশের বুদ্ধিতে মোতালব মিয়া এই নাটক করে করে তিন জন কে জেলে পাঠাল ।
রঞ্জন আর মেট্রিক দিতে পারলো না । ছয় মাস পরে জাবিনে বের হল দুই জন। মামলা চলছে । বাড়িতে আসতেই রঞ্জনের মা ছেলে কে ধরে কান্না । মাকে বলল আমি একটু আসি বলে সুজা চলে গেল শঙ্কর স্যারের বাড়িতে । লক্ষ্মী রঞ্জন কে দেখে কাঁদতে লাগলো । বলল
--রঞ্জন ভাই তুমি কি সব খবর জান । রঞ্জন বলল - আমি তো খবর নিতে আসছি ।
লক্ষ্মী বল না, কি খবর । আমি জানতে চাই পরী কেমন আছে । ওর সাথে আমার দেখা করার দরকার
--- লক্ষ্মী কাঁদতে কাঁদতে বলল - কি ভাবে দেখা করবা । তোমাকে জেলে দিয়ে মোতালব চাচা তার
পরের মাসে পরী কে জোর করে করিম গঞ্জ উরদিঘি গ্রামে বড়বাড়িতে বিয়ে দেয় । ও কিছুতেই রাজি ছিল না। পরী বাবা তোমার মামলা তুলে নিবে এই সর্ত মতে বিয়ে করে । পরে জানতে পারে যে ওর বাবা তোমার মামলা শেষ করে নাই । পরে গত মাসে পরী ফাসি দিয়ে মারা যায় । এখন আবার মোতালব মিয়া ঐ পরিবারের লোক নামে হত্যা ও যোতুকের মামলা করেছে ।
রঞ্জনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে আসলো । মাকে জড়িয়ে ধরে আরও জোরে কাঁদতে লাগলো ।
রঞ্জন এখন নীরব একটা মানুষ হয়ে গেল । সাজু আবার চাকুরিতে যোগ দিল । কাঞ্চনের জেল থেকে বের হতে লাগল এক বছর । ঠিক তার দুই বছর পরের ঘটনা। । রঞ্জন গাজি পুর একটা গার্মেন্টস এ কাজ করে ।রমজান মাস । ঐ গার্মেন্টস একজন ভারতীয় বসের সাথে সে থাকে তাই বসের সাথে দু বার পাসপোর্ট ছারা ভারত গেছে । এবার বস পাসপোর্ট করে ভিসা লাগিয়ে দিয়েছে । রঞ্জন কিছু কাপড়ের ডিজাইন আইন তে ভারত যায়। যাওয়ার পর জানতে পারল তাকে আরও পনের দিন থাকতে হবে। রঞ্জনের মাথায় একটা কিরমিনাল বুদ্ধি চলে আসলো । পাসপোর্ট ছারা সে চলে আসলো বাংলাদেশে । সে জানে মোতালেব মিয়া রোজার দিন ফরজ নামাজ পরে মসজিদে । সন্ধ্যায় সে কিশোর গঞ্জ কাচারি বাজার থেকে একটা দা ও চাপাটি কিনে । এক বছরের মধ্য কিন্তু রঞ্জন আর গ্রামে আসে নাই । পাসপোর্ট করার পর থেকে সে লম্বা দাড়ি রেখছে । দা ও চাপাটি টা খুব ভাল করে দার দিয়ে নেয় । তার পর পুরান থানা এলাকা থেকে একটা সাইকেল কিনে ।একটা ছালার ব্যাগে দা ও চাপাটি ভরে রেল স্টেশনে যেয়ে বসে থাকে আর চা খেতে থাকে । রাত তিনটা বাজে। রেল স্টেশন থেকে সাইকেলে করে রওনা দেয় রঞ্জন
তার গ্রামের বাড়ির দিকে । শিমুল গাছ তলে সাইকেল টা রাখে । আর রাস্তার দিকে খেয়াল করে । দেখে টচ লাইট জালিয়ে মোতালেব মিয়া মসজিদের দিকে আসতেছে ।আর যাই কই পিছিন থেকে রঞ্জন বলল
-- বাবাজি আসসালামুলাইকুম
-- পিছনে তাকিয়ে মোতালেব অলাইকুম সালাম কে
-- আমি রঞ্জন কেমন আছেন
-- মোতালেব কোন কথা না বলে চুপ করে হাঁটতে লাগলো
-- মোতালেব তুই চুপ কইরা দারা কিন্ত
-- মোতালেব নিজের বুকে হাত দিয়ে দেখল যে তার বুক কাপতাছে । বাবা রঞ্জন তোমার হাতে কি
-- এক হাতে দা আর এক হাতে চাপাটি দেখতে পাচ্ছ না ।
-- রঞ্জন আমি ভুল করেছি । আমার মেয়েটা বেঁচে নাই। আমি তোমার মামলা এই মাসে তুলে নিব ঈদের আগে ।
-- মোতালেব চুপ কইরা আমার সাথে নাম ধান খেতে। না নাইলে কিন্তু কুপ দিমু ।মোতালেব রঞ্জনের কথা
মত ধান খেতে নামে শিমুল গাছটা নিছে যায় । মোতালেব ভয়ে কাঁপতে থাকে তাছাড়া রাতে খারাপ
স্বপ্ন দেখছে । রঞ্জন বলে মামলা তুই কি শেষ করবি হারাম জাদা । কেউ কি আমাদের বিপক্ষে সাক্ষী
দিবে মনে করছ । হাঁটু গেরে বস হারামি হাত দুটা পিছনে দে।
--- রঞ্জন বাবা আমাকে মাপ করে দাও ।আমাকে মেরে কি হবে বলল ।
---- মোতালেব আমি কি বলছি তরে মারব হারাম জাদা । আজান দিলে তরে জবাই করমু ।
মোতালেবের কোন আকুতি শুনল না রঞ্জন । চিৎকার দিতেই গামছা দিয়া মুখ বেদে মোতালেব কে কুপিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলল । রঞ্জনের সারা শরীর রক্তে ভরে গেল । দা আর চাপাটি নিয়ে আবার সাইকেলে চালাতে লাগলো গ্রামের ভিতর দিয়ে । একটা পুকুরে এসে দা আর চাপাটি ফেলে দিয়ে ছালার ব্যাগ থেকে সাবান বের করে ভাল করে গোসল করল । কটিয়াদি হয়ে চালাক চর বাজারে এসে সাইকেল টা রাস্তায় ফেলে ঢাকা হয়ে আবার ভারতে ।
পনের দিন পরে আবার রঞ্জন গ্রামে এলো । অজ্ঞাত লোকের নামে মামলা হয়েছে । পরীর কবরের কাছে গিয়ে বলল পরী আমাকে মাপ করে দাও । তিন বছরের মাথায় রঞ্জন কিন্তু একে বারে পাগল হয়ে যায় ।
কিন্তু কোথায় রঞ্জন হারাল আজও কেউ জানে না । হয়ত এমন হাজার পাগলের ভিড়ে আছে ঐ পরীর রঞ্জন ।।
কারো জীবনের সাথে কিছু মিলে গেলে দুঃখিত । এটা একটা গল্প

এই বেশ ভালো আছি


------------------------------- সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি নোনা জলে সিক্ত আঁখিতে চিৎকার করে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে একবার নিশ্বাস ভরা বুকে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায়।
আমি সমুদ্রতীরে গোধূলী লগ্নে একচিলতে শেষ রোদকে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমার প্রতিটি হৃদকম্প তোমাকে বুকে জড়িয়ে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায়
আমি মাঝে মাঝে কবিতার সিক্ত নীলাম্বরীকে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি মধ্য রাতে ডুকরে কাঁদার কারণ তোমাকে বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি তোমার 'সেই কথা' যা কাউকে বলা বারণ তা বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি তোমার ভাগ্য রেখা আমিই সেই হাতের গণক তা বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি তোমার প্রতি ফোঁটা অশ্রু জলের সেই লবণ তা বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি থেমে থাকি পথের প্রান্তে নিশ্চুপ উত্তরহীন চোখে কিছু বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি নিঝুম রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তোমাকেই শুধু বলতে চাই
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
আমি বৃষ্টির জল চোখ ছুয়ে দেখছি সেটা মনের হাজার অনুভুতির যোগফল
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায় ।
তোমার জন্য আমার আমার শেষ অনুরোধ কখনো পারলে ভালবেসো আমায়
তবে তোমার মত করে না ! আমার মত করে
যেখানে চাওয়া থাকবে না, থাকবে না কোনো প্রাপ্তি
থাকবে শুধুই প্রতিক্ষা অনেকটা পথ বাকী
তোমার জন্য এখন আমি কারো প্রশ্নের জবাবে
ঠোঁটের কোণে নিষ্প্রাণ হাসি ঝুলিয়ে বলি,
" এই বেশ ভালো আছি... ভালবাসার মানুষটার জন্য