Thursday, April 23, 2015

টুনির বিয়ে .......................................... অনু গল্প


মেয়েটার বিয়ে হয় না তাই কত কানাকানি, বয়স আর কত কুড়ি , আশপাশ থেকে কত ঘর এলো, বাবা বিয়ে দিল না , মেয়েটা পড়ে তখন কেবল ক্লাস নাইনে। পরীক্ষায় পাশ হল না টুনি ।
পর পর দুই বার করল সে ফেল। লিখা পড়া কম বলে সম্বন্ধ আসে খুব কম। যাও আসে সম্বন্ধ
কিন্তু মেয়ে দেখা পর্যন্ত শেষ । টুনি খুব হাসি খুসি মেয়ে । সকালে বিকালে বাসায় কিছু ছোট বাচ্চাদের পড়ায় । টুনির বাবা আক্তার সাহেব ছোট ব্যবসা করে আর এক মাত্র ছোট ভাই সুজন এ বছর পলিটেকনিক কলেজে কম্পিউটারে ভর্তি হয়েছে । ভাই বোনের মধ্য ঝগড়াটা খুব মধুর প্রায় টুক টাক লেগেই থাকে । টুনি কে মহল্লার ছেলেরা বেশ ভয় পায় । টুনির অন্য সব বান্ধবীরা প্রেম করলেও সে ছিল একটু ভিন্ন। টুনির দাদী খুব নামাজি মানুস তা ছাড়া দাদী দাদা খুব ফরায মানুস ছিল । অবশ্য এখন শুধু দাদী বেচে আছে। আজ টুনি কে দেখতে আসবে ছেলে একটা প্রাইভেত ফার্মে জব করে । তাই টুনি কে পাশের একটা পার্লারে গেল একটু ফেসিয়াল করতে । বিকেলে আসলো পাত্র পক্ষের লোক জন । তাদের মেয়ে পছন্দ হল । ছেলে একটু শ্যামলা তবে কালো না। ছেলেদের তেমন ডিমান্ড নাই । টুনির মায়ের পাত্র পছন্দ । তাই টুনির বাবারও পছন্দ । টুনির মতামত জানতে চাইলো টুনির দাদী । দাদী কে টুনি বলল আচ্ছা দাদী তুমি ছেলে কে ভাল করে দেখ আমি এ ছেলে কে বিয়ে করব না । দাদী আমি লম্বা মেয়ে তা ছাড়া ছেলে তার বোন জামাইয়ের সাথে মোরের দোকান থেকে সিগারেট খেয়েছে । আমাকে বলল সুজন । সুজন কে দাদী ডাকল কথার সততা জানতে , জানার পর পাত্র পক্ষ কে না করে দিল । আসলে না করার জন্য টুনির ছিল একটা বাহানা কারন টুনির অ দাদির পাত্র পছন্দ হয় নাই । পাত্র পক্ষ বিদায়ের পর শুরু হল টুনির মায়ের টুনির সাথে টুকটাক । কারন টুনির মায়ের অন্য সব বোনের মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । একুশ বছরের মেয়ে ! মেয়ে মানুষ কুড়ি মানে বুড়ি। এর মধ্য আর টুনির বিয়ে নিয়ে পরিবারের কেউ কোন কথা বলে না। তিন মাস পরের কথা টুনির ভাই সুজনের বন্ধু সাফাত টুনির বাসায় এলো । টুনির সাথে কথা বলে বেশ একটা সুন্দর সম্পর্ক হল । সাফাতের কোন বোন নেই ওরা তিন ভাই । সাফাতের
মামার বিয়ে টুনির পরিবারের সবার দাওয়াত । তাই সন্ধ্যায় যথা সময়ে সবাই গেল শান্তি নগর একটা চাইনিজ হোটেলে গেল । সুজনের মামা একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারী চাকুরীজীবী ।বর্তমানে সে থানা নির্বাহীর হিসাবে আছে । বিয়ের সব মেহেমান চলে আসলো । কনে পার্লার গেছে সবাই কনের জন্য অপেক্ষা
এই বিয়েতে টুনি তার লাকি খালার একটা স্কিন কালার শাড়ি সাথে খুব সুন্দর হিজাব পড়ে এসেছে । টুনি একটু লম্বা হওয়াতে সবাই একবার তার দিকে একটু তাকাতে হয় ! রাত নয়টা কিন্তু কনে আসছে না । সবাই ছবি তুলা আর খাবার নিয়ে ব্যস্ত এর মধ্য খবর এলো পাত্রী নাকি এই বিয়ে করবে না। কারন পাত্রী যে ছেলে কে পছন্দ করত তার সাথে সে চলে গেছে । সারা চাইনিজে আসা অথিতিরা তো থ হয়ে গেল । এমন সু পাত্র রেখে মেয়েটা কি করল । সাফাতের মামা পরে গেল মহা লজ্জায় । এখন পাত্রী কোথায় পায় । এ অবস্তায় সাফাত একটু তার মাকে যেয়ে বলল । টুনি কিন্তু মা অনেক সুন্দর মামার সাথে মানাবে । যদিও আমি আপু ডাকি । যে কথা সেই কাজ । সাফাতের মা টুনির মাকে যেয়ে হাত ধরে বলল আপা আপনার মেয়েটা আমার ভাই এর জন্য দেন । টুনির মা, বাবা বলল পাত্র আমাদের তুলনায় অনেক ধনী ও অনেক বড় মাপের মানুষ কিন্তু এর ............... ভাই আর কোন কিন্তু নাই । মেয়ের মত নিতে হবে তো । ঐ চিন্তা আপনার না সাফাত আর সুজন করবে । লাকি অ্যান্টির স্কেন কালার শাড়ি পড়ে টুনির বিয়ে হয়ে গেল । তিন দিন পরে টুনির বাবা বিশাল অনুষ্ঠান করে মহল্লার সবাইকে দাওয়াত করে মেহেমান দারি করল ..........................................

Wednesday, April 22, 2015

যে ভাবে পীর হলেন আজিজ.......................( একটি গল্প )


মনোবিজ্ঞানে পড়েন ইমু দারুন একজন মানুষ । কারো সাথে মজা করা, ফান করা বা কাউকে উপকার করা তার কাজ । পড়েন দেশের বাহিরে একটা বিশ্ব বিদ্যালয়ে । সময়টা শীত কাল , আর শীত কাল আসলে সে চলে তার প্রিয় গ্রামে বাড়ি ।
বাংলো ঘরে বসে কেরাম খেলায় মগ্ন ইমু এমন সময় আজিজ এলো একটু দেখা করতে । ইমু আজিজ কে দেখে বলে কিরে আজিজ চোখ মুখ এত শুকনা কেন ।
ইমু ভাই তোমার সাথে একটা জরুরি কথা আছে তবে এখানে বলা যাবে না ।
ওকে চল সিমুল তলা যাই একটা বিচার আছে যেতে যেতে শুনবো ।
না ইমু ভাই খুব জরুরি কথা আগে শুন একটু ।
আচ্চা বল আজিজ কি কথা - একটু আড়ালে গিয়ে আজিজ বল - আমি তোমার সাথে সিমুল তলায় যামু কিন্তু আমাকে শ খানেক টাঁকা দাও । ঘরে চাল নাই ।
বলস কি আজিজ তোমাদের এ অবস্তা । আরে আমাদের না, বল আমার । কেন তুমি বাড়িতে থাক না ।
না ইমু ভাই শিমুল তলা যেতে যেতে বলব । আজিজ টাকা নিয়ে চলে গেল । ইমু আবার কেরাম খেলায় মন দিল ।
বিকেল তিনটায় আজিজ এলো । আজিজ একটা মাদ্রাসায় পরত । খুব সান্ত ও ভদ্র , মাদ্রাসায় পড়ার সময়......বাড়ি বাড়ি থেকে খয়রাতি ধান তুলতে যেতে হত এটা আজিজের খুব লজ্জা লাগত । মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে সে আর লিখা পড়া করে নাই । নয়া বাজার মসজিতে সে সকালে ছেলে মেয়ে আরবি পড়ায় আর বাবার কৃষি কাজে সাহায্য করে ।
ইমু কে নেয়ার জন্য রিক্সা চলে এসেছে । ইমুদের বাড়িতে বাতেন ইমুর সব কাজ করে । গ্রামের বাড়ি বাতেন দেখা শুনা করে । বাতেন এই রিক্সা নিয়ে এলো । আজিজ আর ইমু রিক্সা নিয়ে রওনা দিল শিমুল তলা ।
এবার আজিজ বলল - ইমু ভাই আপনি নাকি মানুষ কে যে বুদ্ধি দেন তা সফল হয়। শহরে নাকি আপনার অনেক নাম । আমাকে একটা বুদ্ধি দেন । ইমু একটু হেসে বলে শুন আজিজ তোমার চেহারা বেস ভাল । খুব ভাল করে আরবি লিখতে ও পরতে পার উদু ও ফাঁসি একটু বেশ ভাল করে পার ! তাই না ।
আজিজ হ্যাঁ পারি কিন্তু এ গ্রামে আরবি উদু ফাঁসি ভাষা দিয়ে কি হবে ।
আজিজ হবে এখন বল তোমার এ অবস্তা কেন । গরিবি হাল কেন? তোমার বাবার ত জমির অভাব নাই!
ইমু ভাই আমার মামত ভাই সাথে একটা বিয়েতে যাই , একটা ইয়াতিম মেয়ের বিয়া , যেয়ে শুনি মেয়ের মামার দশ হাজার টাকা বিয়ের দিন দেয়ার কথা ছিল । দিতে পারে নাই মেয়ের মামা । মেয়েটা জেন চাঁদের আলো গরিবের ঘরে একটা পরী ! মেয়েটার একটু সমস্যা চোখ গুলো বিলাই চোখের মত ।
এখন টাকার জন্য ওরা বিয়ে করবে না । পরে দয়া হইল আমার আমি বিয়া কইরা নিয়া আইলাম কিন্তু আমার বাবা মা বড় দুই বোন আর বড় ভাবি ও ভাই বিষয়টা মেনে নিল না। বড় ভাই বিয়েতে সাইকেল ও নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ঘর পাইছে । শ্বশুরের অনেক জমি । আমার বউয়ের কিছু নাই ।
বাবা আলাদা করে দিল এখন রান্না ঘরে বউ নিয়া থাকি । আলাদা সংসার । কোন কাজ পাইলে করি না পাইলে নাই। আমিতো হজুর মানুষ মিলাদ পারাই । তাই মানুষ সহজে কোন কাজ ও দিতে চায় না ।
ইমু একটু হাসে আচ্ছা আজিজ তুমি কোন চিন্তা কর না । রাতে একটু বাড়িতে এসো আমি যে বিচারে যাচ্ছি সে খানে তোমার না যাওয়া ভাল । আজিজ কে রিক্সা থেকে নামিয়ে চলে যায় ইমু ।
আজিজ ঠিক সন্ধ্যায় চলে আসে । লিচু গাছ তলে বসে ইমু আর আজিজ কথা বলা সুরু করে । ইমু বলে শুন আজিজ আজ থেকে তুমি আমার পরিকল্পনায় চলবে ।
আমি তোমাকে চলার জন্য যা টাকা লাগে দিব । পরে তুমি তা আমাকে পরিশোধ করবে । কাল থেকে কাজ শুরু । আজ দশ হাজার টাকা নাও ঘরটা এই লিস্ট মতে ঠিক কর এক সপ্তাহের মধ্য ওকে ।
আজিজ বলে এত টাকা কি ভাবে পরিশোধ করব ।
ইমু বলে সময় বলে দিবে । আজ থেকে তোমার বউ বাড়ির সবার সাথে পর্দা করবে । তুমি তোমার বউ আর আমি ছরা কারো সাথে কথা বলবে না। জঙ্গল বাড়ি বাজার , নয়া বাজার , এমন কি কোন বাজারে কারো দোকানে বসবে না। গান শুনবে না । বাজারে যেয়ে ইসারায় জিনিসে দাম জিজ্ঞাসা করবে । এক দামে কিনতে চেষ্টা করবে । আগামি মাসে ঢাকা আসবে । বাকি কথা সে খানে হবে । এমন কি আমার সাথেও আজ থেকে গ্রামে কথা বলবে না। কাউকে সালাম দিবে না আর যদি সালাম দাও তাহালে শুধু শিশুদের সালাম দিবে । কারো বাড়িতে মিলাদ বা দোয়া পরতে যাবে না । আর প্রতি দিন বিকালে তোমাদের পুরান বাড়ির পুকুর টা চার বার চার দিকে হাঁটবে আর প্রতিদিন পুকুর পারে তাল গাছটার তালে আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বসবে । তবে তুমি নমাজ পড়বে মসজিদের বারান্দায় ইমামের পিছনে পড়বে কিন্তু কোন লাইনে দারিয়ে না। খুব সুন্দর দেখে সাদা কাবলি জামা পড়বে মাথায় পাগড়ি ।
আজিজ কে বলল আর প্রতিমাসে সদর পোস্ট অফিস থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়ে আসবে । মিথ্যা বলবে না । পুকুর পারে হাটার সময় তজবি ব্যবহার করবে ওকে । বাকি কাজ হল তুমি ঢাকা আসবে আমি কিছু বই কিনে দেব তা পড়বে ।
ইমু চলে গেল ঢাকা । আজিজ খুব সকালে মসজিদে গেল নামাজে কিন্তু সে নামাজ পড়ল । বারান্দায় । মাথা নিচু করে সে বাসায় চলে গেল । ঘর বানালও টিনের চার রুমের । আছরের নামাজ পরে সে রোজ পুকুর পারে চলে যায় । তাল গাছ টার তলে বসে হাতে তজবি নিয়ে খুব সুন্দর করে বসে হালকা জিকির করে । আজিজ কে মিলাদ পরাতে নিতে এলো আজিজ গেল না । ইশারায় না করে দিল ।
আজিজ বাজারে যায় কিন্তু কারো সাথে কোন কথা বলে না। গ্রামের মানুষ তার এ পরিবর্তন সবার চোখে পরতে লাগলো ।
যথা সময় সে চলে আসলো ঢাকা ইমুর বাসায় । ইমু দেখল সে আজিজ তার কথা রেখেছে । এক মাসে তার বিরাট পরিবর্তন । ইমুর মা বলে এই হুজুর কে ।
মা পরে বলছি উনি বেশ কয়দিন এখানে থাকবে । ইমু তার মাকে বলে মা জানো তুমি এই লোক অনেক কামিল মানুষ । সহজে কারো সাথে মিশে না । এই দিকে বিকেলে ইমুর মায়ের খুব মাথা ব্যাথা । একটু আগে সে ট্যাবলেট খেল ব্যাথার জন্য । ইমু বল মা দেখি আজিজ ভাই সাহেব কে বলে তোমার জন্য একটু তেল পারা দিলে হয়ত ভাল হয়ে যাবে ।
বিকেলে শুরু হল আজিজ কে নিয়ে তার মনোবিজ্ঞানের কাজ। কি ভাবে মানুষ মানুষ কে বুঝতে পারে। কি করে মানুষের মনের ভাব আদান প্রদান করে । মেডিটেশন সিখাতে লাগলো । সাথে ভারতীয় জ্যোতিষী দের বই । রাশি মানুষের জন্ম লগ্ন । আর মানুষ কে কি করে হিপনোটাইস করে ।
আজিজ বলে ইমু ভাই আপনি মানুষের সামনে আমাকে আপনি করে বলেন কেন ।
ইমু হেসে বলে আজ থেকে আর তুমি করে বলব না । আপনি আমাকে আপনি করে বলবেন । এমন কি ছোট বড় সবাইকে । মানুষের সামনে আপনার বউ কেও আপনি করে বলবেন । আজিজ মাথা নাড়ায় বলে ওকে ভাইজ আজ থেকে তাই ।
ও আজিজ ভাই আমার মায়ের জন্য আপনি আজ তেল পড়া দিবেন । আর মাকে বলবেন । জেন গোসল করে ফরজ নামাজ । সুন্নত নামাজ শেষ করে অতিরিক্ত দু রাকাত নফল নামাজ শেষ করে যেন এই তেল মাথায় ডান হাতে দিয়ে লাগায় । আর বলবেন তিন দিন লাগালে ভাল ফলাফল হবে। আর মাকে বলবেন যেন ভাল হলে এক নিয়তে যেন আপনার কাজে কিছু দান করেন । সাধ্য মতো।
সন্ধ্যায় ইমুর মাকে সে তেল পড়া দিল । নিয়ম বলে দিল । রাতে নামজ শেষ করে নিয়ম মতে ব্যবহার করলো । সকাল থেকে আর ব্যথা নেই । ইমুর মা বেশ খুসি কামিল লোক । সকালে নাস্তা দিল খুব আদর করে ।
এখন ইমু বলল দেখলেন আপনার তেল পড়া কাজে লাগছে । আজিজ বলল কি করে ভাই জান । দেখুন আজিজ মানুষের বিশ্বাস হল খুব দামি । যদি একবার বিশ্বাস জন্ম দিতে পারেন । তাহালে হল । তবে সব বিশ্বাস কে ভাল কাজে ব্যবহার করতে হবে। জগতের সব সমস্যা আপনি ভাল করতে পারবেন না ।
ইমু বিকেলে আজিজ কে নিয়ে বের হল বাংলা বাজার সেখান থেকে কিছু তাবিজের দোয়া আর আমলের বই কিনে দিল । যা সব উর্দু কিতাব । আজিজ বলল ভাউই জান উর্দু কেন । ইমু বলল- আপনি যা পড়বেন তা শুধু আপনি জানবেন । এটাই নিয়ম। বই কিনা শেষ আজিজ কে নিয়ে বের হল হাই কোর্ট মাজার । সাহ-আলির মাজার , দেখল । বাসায় ফিরে দেখে ইমুর ছোট খালা তার দু বান্ধবী আসছে দুটা সমস্যা নিয়ে । ইমু বলল আছরের নামজের পর ছাড়া উনি কথা বলে না। যে কথা সেই কাজ । বেচারারা আছরের সময় নামজ শেষ করে দেখা করতে গেল আজিজের সাথে । কিভাবে কথা বলতে হয় তা তো ইমু তাকে ভাল করে শিখিয়ে দিয়েছে । আজ আজিজ পাশ , তার দুই খালা পানি পড়া নিয়ে গেল । তাবিজের জন্য বার জাহার টাকা দিয়ে গেল । এখন ইমু বলল জানতে হবে কথার মধ্য তার আর্থিক অবস্থা আর কাজটা তার কাছে কতটা জরুরি । এখন কি কাজ আজিজ ভাই জানেন । সবার নাম ঠিকানা আপনি ফাঁসি ভাষায় লিখেন। তাবিজ কি করে লিখতে হয় । এই গুলোর মধ্য আছে পরে পরে লিখে দিবেন। আর আজিজ ভাই আমার কথা মন দিয়ে শুনুন -
আপনার সাথে দেখার সময় বাদ ফরজ নারী পুরুষ বাদ আছর মহিলা বাদ মাগরেব শুধু মাত্র পুরুষ । তবে আপনি এখন গ্রামে যান আমি তিন মাস পরে আসছি । আবার দেশে আসার পর কাজ শুরু । এই তিন মাস আপনি এই বই গুলো পড়বেন । আর আজিজ ভাই আপনি যে গাছ তলে বসেন যদি কেউ আপনার এখানে আসে তাহেলে বসতে দিবেন । আর যদি কোন সমস্যা হয় চিঠি লিখে জানাবেন ।
বিকেলে বাড়ির পথে রওনা দেয়ার সময় ইমুর মা সালাম দিয়ে বলল- বাবা আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন । আপনি এই বাসায় আসার পর থেকে খুব ভাল লাগছে । আপনি যে সুন্দর করে নামাজ পড়েন । কুরান পড়েন । চুপচাপ থাকেন । শুধু আল্লাহ জিকির করেন । আমি আপনার নিয়ম মেনে চলব । আর বাবা এই প্যাকেট টা নেন । আপনি যখন ঢাকা আসবেন এই বাড়িতে উঠবেন ।
আজিজ কে এসে রেল গাড়িতে তুলে দিল । আজিজ জাওয়ার সময় তার চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো জিবনে সে এত সম্মান আর পাই নাই । আজিজ ইমুর মায়ের প্যাকেট টা ইমু কে দিল , ইমু আবার হাসল ! আজিজ ভাই এখনো সময় হয় নাই টাকা নেয়ার , সময় হলে নেব। ট্রেন ছাড়ল ইমু বিদায় নিয়ে চলে আসলো । আজ রাতেই ইমুর ফ্লাইট । ইমু চলে গেল লন্ডন । ট্রেন চলছে আজিজের বাড়ির দিকে । প্যাকেট খুলে আজিজ অবাক এত টাকা মানুষ মানুষ কে দেয় ।
বাড়ি ফিরে আজিজ তার বউকে প্যাকেট টা দিল । আজিজের বউ আজ অনেক খুসি । আজিজ ঢাকা থেকে শাড়ি নিয়ে আসছে । আরও কতকি ? আজিজে বউকে বলল মানুষের জিবনে লিখা পড়া জানলে অনেক কিছু করা সম্ভাব ।
আজিজ সকালে উঠে সেই আগের মত মসজিদের বারান্দায় নামাজ । বিকেলে পুকুর পার তাল গাছ তলে বসে থাকে । কারো সাথে কোন কথা বলে না । আজ কাল সে লক্ষ্য করলো যে তাকে সবাই ছালাম দেয়া শুরু করছে । কয়দিন আগেও যে পোলাপান তাকে দেখলে মশকরা করত তারাও সালাম দেয় । আজিজের বউকে আজিজের মা বলে- আমার আজিজ কি পাগল হয়ে গেল ! আর এত টাকা পয়সা সে কোথায় পায় । মেয়েটা খুব ভাগ্য বান মনে হয়।
কই আজিজের বউ শুনছ - আজিজ কোন কাম কাজ করে না । নতুন টিউবওয়েল বসাইল । পাকা বাথরুম । জমিও রাখল । আমাকে বল ও কি করে ? আজিজের বউ একটু হেসে বলে মা উনি তো গত তিন চার মাস যাবত কারো সাথে কথা বলে না। রাতে জিকির করে । জিকির করার সময় মাঝে মাঝ ঘর আলোকিত হয় , আমার মনে হয় মা উনার সাথে জিন আছে ।
আজিজ দুপুরে মসজিদে গেছে নামজ পরতে আজও সে অন্য দিনের মত বারান্দায় । সে দেখল তার পাসে অন্য গ্রামের ও তার নিজ গ্রামের কিছু ছেলে তার সাথে দারাইছে ।
আজিজ কাছে জিন আছে এ মন একটা খবর খুব তারারারি মানুষের মুখে মুখে রটে গেল । এর মাঝে কিছু কিছু ব্যাপার কাকতালীয় ভাবে গঠতে লাগলো । আজিজ যে সেলুনে চুল কাটাতে বসে ছিল সে নাপিত কে বলল যে নিছে আলাধা একটা সাদা কাপড় বিছিয়ে সেই কাপড়ের উপরে বসলো । নাপিত চুল কাঁটা শেষ হলে সে সব চুল একটা আলাদা কাপড়ে করে নিল । এই দিন বিকেলে এক বিদেশী লোক সেই সেলুনে চুল কাটে আর নাপিত কে এক হাজার টাকা দেয়। নাপিত বাড়ি গেলে জানতে পারে তার মেয়ে কে স্বামী এক বছর পরে সংসারে ফিরত নিতে আসছে ! আর কোন টাকা পায়সা দাবি করে না। নাপিত খুব সকালে গাভীর দুধ নিয়ে আজ আজিজের বাড়িতে আসে । আজিজ কোন কথা না বলে হাত উপরে তুলে দোয়া করে দেয় । নাপিত আজিজ সাহবের পা ছুয়ে সালাম করে আদবের সহিদ বিদায় নেয় ।
মসজিদের সভাপতি আর ইমামের মাঝে কি নিয়া ঝমেলা আছরের নাজের পর সবাই বসছে কিন্ত আজিজ কে সবাই ধরল একটা ফাইসালা দেয়ার জন্য । আজিজ সবার মুখে দিকে তাকিয়ে নিল একবার ।এখন আজিজ বলল আমি একটাই কথা বলব যদি রাখেন তাহালে বলল আর না রাখলে এ মসজিদের ব্যাপারে আর কোন কথা আমি বলব না কোন দিন । আপনারা কি রাখবেন আমার কথা । আমি সিদান্ত দিলে পরে না বলা যাবে না । যদি কেউ না বলে তার কোন খতি হলে আমি দায়ি না । সবাই বলল- হ্যাঁ আপনার কথা রাখব বলুন ! আজিজ বলল আমার সাথে সবাই হাত তুলে দোয়া করুন এই দোয়ার পরে ফাইসালা । দোয়া শেষ করে আজিজ বলল ... ইমাম সাহেব রিজেকের মালিক যদি আল্লাহ হয় তবে আপনি কোন চিন্তা কইরেন না। আগামি একমাসের মধ্য আপনি অন্য এটা চাকুরী খুজে নেন । আর সভাপতি সাহেব আপনি এই একমাস ইমাম সাহেবের তিন বেলা বাসায় খাওবেন । আজিজ এ কথা বলে বিদায় নিল । সাত দিন পর ইমাম সাহেবের কাছে সভাপতি মাপ চেয়ে বলল ইমাম সাহেব আপনি ই থাকেন ।
ইমুর খালার বান্ধবী ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে সুজা আজিজের গ্রামের বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে বাজারে এলো । সবাইকে বলল ভাই আজিজ পীরের বাড়ি কোনটা গ্রামের বাড়ির মানুষ তো অবাক । আজিজ আবার পীর হয়ে গেল ।
আজিজের তাল গাছ তলে প্রতিদিন মানুষ ভীর করে । সেই গাছ তলায় ভদ্রমহিলা এসে আজিজ কে সালাম করল । সবাই অবাক । আজিজ কে বলল বাবা আপনার দোয়ায় আমার স্বামী একটা বড় কাজ পাইছে । কিছু দিনের মধ্য আজিজের নাম গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল ।
খুব ভোরে মানুষ আসে আজিজ পানি পড়া দেয় , ফু দেয় , আছরের সময় মহিলারা আসে পানি পড়া দেয় ফু দেয় । যেই আসে বাবার দরবারে টাকা দিয়ে যায় ।
করিম গঞ্জ থানার ওসির মেয়ের খুব জর ওসি সাব মেয়ে নিয়ে আসলো আজিজ সাহেব একটা তাবিজ দিল
পানি পরে দিল । মেয়ে ভাল ,জর কমে গেল । আস্তে আস্তে আজিজ পুকুর কিনে নিল । তালগাছ তলে এখন কত রকমের মানুষের আনা গুনা ।
আজিজ ভাল করে শিখে গেছে মানুষ কে কি করে বশীকরণ করা যায় । এখন অনেক মানুষ তার খেদমত লেগে গেছে ।
তিন বছরের মধ্য ইমু আর দেশে আসতে পারে নাই । ১৯৮০ সাল আজিজ বিকালে তার আশেকান নিয়ে কুরান হাদিস আলোকে জিবন নিয়া কথা বলছিল । বিশাল মিলাদ হয় প্রতি শুক্র বার আজও মিলাদ । আজিজ সাহেব আজ একটা সবপ্নের কথা বলল - যে দেশের মধ্য একটা সূর্য স্বপ্নে দেখলাম একটা অজগর সাপ গিলে খেল । ঠিক আর কয় দিন পর প্রেসিডেন্ট জিয়া সাব মারা গেল । আজিজ কি আর আজিজ রইল । তার সাথে দেখা করতে এখন খুব ভাগ্যের ব্যাপার । যে টাকা আসে প্রতিদিন টা চিন্তা করা যাবেনা । দেশের আনাছে কানাছে তার মুরিদান আছে । আজিজ নিজেও অনেক লিখা পড়া করে জানার জন্য ।
ইমু দেশে আসছে বাতেন তার জন্য বিকেলে চা নাস্তা নিয়ে আসছে । এর মধ্য কেটে গেছে তিন বছর । ইমু বাতেন কে বলল - বাতেন আজিজের কি খবর জানিস । ভাই জান কোন আজিজের কথা বলছেন ঠিক চিনলাম না ।
আরে জঙ্গল বাড়ির আজিজ ।
ভাই জান ওনার নাম এভাবে নিয়েন না ! উনি অনেক বড় মাপের মানুষ । তাছারা উনি আল্লাহ ওয়ালা মানুষ ।
তাই নাকি
জি ভাই জান । উনি জীন পালেন । দেশের কত মানুষ তাকে মানে জানেন । ও আচ্ছা ঠিক আছে বাতেন ! তা আজিজ ভাই কে কি ডাকা যাবে এই খানে । বাতেন হাসি দিয়া বলে ভাইজান যে কি বলেন আমাদের থানার ওসি সাহেব নিজে সাহস পাবে উনাকে ডাকতে । আচ্ছা বাতেন তুমি যেয়ে কি বলতে পারবে যে আমি আসছি । বাতেন আবার ও হাসে ভাই জান যে কি বলেন তবে আমি চেষ্টা করব আপনার কথা উনাকে বলার জন্য ।
বাতেন হাতের কাজ শেষ করে তাল তলা গেল । এখানে এখন একটা মসজিদ বেশ কয়টা পাকা ঘর বাজারের পাশে হওয়ায় মানুষ জন থাকে প্রচুর । আজিজ তার ভক্তদের পানি পড়া ফু তেল পড়া তাবিজ দিচ্ছিল । এ কাজ এখন খাদেম রা করে উনি শুধু কিতাব দেখে লিখে দেয় । অনেক ক্ষণ পরে বাতেন হুজুরের সামনে গেল । হুজুর কি ব্যাপার বাতেন তুমি । বাতেন হুজুরে কানে কানে বলল । হুজুর আমার ভাই জান জিনি লন্ডন থাকে ঐ আরেক বার আসছিল আপনি যে রিক্সা দিয়া গেছিলেন । হুজুর একটু হাসল আর বলল উনাকে বল বাতেন কোন চিন্তা না করতে তুমি যাও । বাতেন চলে আসলো তখন মাগরিব প্রায় ।
কিরে বাতেন আজিজ সাহবের কি খবর দেখা হল ।
হ্যাঁ ভাই জান তাজ্জব ব্যাপার শুধু বলল আপনার আশা পুন্য হবে । আমার কাছ থেকে কিছু শুনল না !
পীর আজিজ হুজুর ঘরে এসেই বউ কে বলল- ভাল একটা দামি শাড়ি পড় । দুবাই এর বোরখা টা পড় ।
আমি আমার বাবা হুজুর কে দেখতে যাব । বউ কয় তোমার বাবা হুজুর আছে কই আগে তো বল নাই । সব কথা কি বলা দরকার । আজ যে আমার জিবনে এত টাকা পয়সা , আমার যে সম্মান টা সব আমার বাবা হুজুরের জন্য । উনার নিষেধ ছিল তাই বলি নাই । রাত নয়টায় রওনা দিল ইমুদের বাড়ির দিকে । যাওয়ার সময় একটা কাপড়ের বড় ব্যাগ ভরে টাকা নিল । হারিকেন নিয়া আজিজ হুজুর এলো ! বাতেন তো আকাশ থেকে পড়লো বাবারে কত বড় কামেল ভাই জান দেখা করতে চাইলো আর চলে আসলো । বাতেন আজিজ হূজুর তার বউ কে নিয়া ইমুর ঘরে গেল । বউ দেখে পেন্ট সার্ট পরা এক মানুষ । আজিজ ঘরে প্রবেশ করেই ইমুর পা ছুয়ে ছালাম করল , আরে আজিজ ভাই কি করেন । আজিজের বউ ছালাম করল । আজিজ কে বুকে জরিয়ে ধরল । বাতেন তো আবাক হয়ে গেল ! বাতেন কে বলল যা দেখছ এটা বন্ধুত আর কিছু না । ইমু বলল আমি লন্ডনে একটু ঝমেলায় ছিলাম । তাই যোগাযোগ করতে পারি নাই । তোমার কাজ তুমি খুব সুন্দর করে শেষ করেছ । ঢাকার খালারা তো আজিজ হুজুর বলতে অন্ধু ।
আজিজ টাকার একটা ব্যাগটা দিল- এটা কি আজিজ ভাই? ভাই জান এটা দেখতে নাই এটা আপনার ।আছা ওকে বাতেন ব্যাগটা আলমারিতে রাখ । আজিজ ভাই আপনার জন্য কিছু বই আর এই নেন একটা নোট যাতে যাতে আপনার বাকি কাজ লিখা আছে । আজিজ নোট টা ভাল করে পড়লো । রাত এগারোটা দিকে আজিজ বিদায় নিল । এখন প্রতি বছর ওরস হয় । আজিজের নামে গান হয় । আজিজের কাছে কত নেতা কত আর্মি পুলিশ আসে । সবাই আজিজ বাবা ডাকে ............................................. আজিজ আজ অনেক বড় পীর ।
একজন মনো বিজ্ঞানী ইমু সমাজে কি দিল বুঝ না ভাল কিছু .................................??

Sunday, April 19, 2015

অমরত্বের স্বপ্ন

কবিতার ভাঁজে ভাঁজে জারুল কৃষ্ণচূড়া কদম মেলা
কাব্য জন্ম নেয় চায়ের কাপে আদাকুঁচি ভেসে বেড়ায়
বাতাসে গড়ায় কিছু ভাঙ্গা বাদামের খোসা জীবনের মতো
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ফেরত শেষ অব্ধি ঝরেই যায় সব নিয়তি !!
মধ্যবর্তী ব্যাস্ততায় কাঁচের জানালায় বিদ্যুতের ঝলকানি
টেরাকোটায় প্রত্নতাত্বিক নারীর চিবুক ছুঁয়ে দেয় নিঃশব্দ চাঁদ
শেষ অব্ধি ঝরেই যায় যত বৃক্ষ দেখি চার পাশে কবিতার ভাঁজে
পেঁজা পেঁজা হীম বাতাস কুঁকড়ে আছে নিঃসাড় হাতে পায়ে ।
রাত শেষে আসে ভোরের আভাষ,সচ্ছ আলো রং হঠাৎ শব্দ হারায়
ঈশ্বর আজীবন পর্দার পেছনেই থাকেন নেপথ্যের সেই জীবনে,
মায়াবতী জীবন আর মৃত্যুর মাঝে জাল বোনে বোবা কবিতার ।
পাথরের শহরে টুপ টাপ ঝরে পরে নিঃশব্দ ঘামের ফোঁটা
বিকিয়ে যাওয়াই নিয়তি যখন র্নিমেষে তাকিয়ে ধুধু মরুর মতন
ভালবাসার স্বীকারোক্তিতে ঝুলে থাকে গোপন ইশায় অদৃশ্য খেলায়
মুখ,মুখোশ,আগন্তক আর আততায়ীর নেপথ্যের সেই জীবন আমার।
সেই রক্তরাঙা পথে তোমার পদচিহ্ন রোমের ক্যাপিটোলাইন গিরির মতো
আজও আমার বুক চিরে কথা বলে বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে রক্তরাঙা পথে
প্রেম ও প্রত্যাশার স্বপ্ন সাহিত্য ও সভ্যতার স্বপ্ন সৃষ্টি ও অমরত্বের স্বপ্ন

Tuesday, April 14, 2015

কথায় বলে হুজুকে বাঙালি (অনু গল্প)


সাহাজালাল বিমান বন্দরের পাশের লেকে এক লোক ঝাকি জাল ফেলছে আর তুলছে !
কওতুহলি জনতা বলছে কি মাছ ধরেন ভাই! আর একজন মশকরা করে বলল কয়টা ইলিশ ধরলেন?
জেলে একটু মুছকি হেসে বললেন ভাই এখন নদীতে ইলিশের চেয়ে সাহাজালালে সোনা বেশি পাওয়া যাই !
তাই ইলিশ ধরে সময় নষ্ট না করে জাল ফেলে সোনা ধরছি ! সুনলাম চোরা কারবারিরা কয়েক মন সোনা নাকি লেকে ফেলে গেছে । এই কথা শুনা মাত্র, সোনার লোভে , সোনার দেশের ,সোনার ছেলেরা,ঝাকে ঝাকে পেন্ট শার্ট কোট টাই লঙ্গি গামছা পরা লোকেরা সেই লেকের নোংরা কাদা পানিতে নামছে সোনার খুজার জন্য ।
কয়েক ঘণ্টার মধ্য আশপাশের সব লেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল।
তার পর মিডিয়া পুলিশ আর কত গল্প!! কথায় বলে হুজুকে বাঙালি !!
কার কাছ থেকে শুনল এই লোকের আর কেউ মনে রাখল না।
কিন্তু জেলের ছেলে একটা টেনিস বলে কসটেপ পেছানো ছিল। যা দিয়ে ক্রিকেট খেলত তা পানিতে পরে আর পাচ্ছিল না। তাই জেলে জাল ফেলেছিল ছেলের ক্রিকেট বল মুলত খুজছিল ।

Sunday, April 12, 2015

দীর্ঘশ্বাসের সমষ্টি!




ভরদুপুরে আমার ভেতরে শব্দগুলো উথলে ওঠে
চুল্লীর ভেতরের তপ্ত তরলের উন্মত্ততা আচ্ছন্ন করে
আমি নিঃশব্দ বয়ে চলি কেউ বোঝে না, জানে না আমাকে।
আমার শব্দ আর অনুভূতি ওরা বুঝতেও পারে না
একসময় হৃদয়ের চেপে রাখা আর্তনাদগুলোকে শব্দ দিতাম
আমি হতাশ হই প্রায়ই, তখন পাথরের মত বসে থাকি কবিতা হয়ে।
আঙ্গুলগুলো একে অপরের মাঝে প্রবেশ করিয়ে সময় ক্ষেপন করি
আঙ্গুলগুলো প্রবলভাবে অবাধ্য হতে চায় তবু আমি নির্বিকার।
কী হবে লিখে?  কিছুই হবে না! আমি তো জানি, এই শহরের অন্য সবার মতই ?
আমিও একদিন টুপ করে চলে যাব। অনন্তের জগতে, অজানা জগতে।
আমি প্রায়ই নিঃশ্বাস নিই বড় করে, চলে যাব বলে যখন ভাবি, খারাপ লাগে,
আমার কথা কাউকে কষ্ট দিলো কিন্তহ! মনে হয়,ভুল কথা বলে ফেলেছি কিনা।
আমি থাকব না, তখন তাদের হৃদয়ের ক্ষতগুলো আমি মুছে দিতে পারব না।
এই প্রতিদিনের নিঃশ্বাস আমার অনেকগুলো দীর্ঘশ্বাসের সমষ্টি।
কেউ আমাকে তাচ্ছিল্য করে! আমি নির্বিকার বেঁচে থাকি।
কেউ বলে কল্পনার ‘রোমান্টিকতা’ ফেলে বাস্তবে পা দিতে।
অথচ, আমি একজন মানুষ যে শুধু অনুভব করি দৃষ্টি ছাড়িয়ে একটু বেশি।
বাস্তববাদীদের বাস্তব চোখের চাইতে বড় বাস্তব দেখতে পাই।
 রোমান্টিক হিসেবে যারা ভাবে তার চাইতে বেশি
কী হবে আমি যদি অন্য সবার মত না হই?
চলে যাওয়াই সবচাইতে বড় বাস্তব! এগুলো কিছুই আমার নয়।
আমার এই শব্দগুলো হয়ত রয়ে যাবে যেদিন আমি থাকব না।
কেউ হয়ত পড়বে আমার কথা, তখন আমি থাকব না।
তারা জানবে, আমার হৃদয়ে অনুভূতি ছিলো, যেমনি তাদের আছে।
আমি নেই, আমি বাস্তব পৃথিবীতে চলে গেছি। এই পথে যাবে সবাই।
লিখতে ইচ্ছা হয় না আর, ক্লান্ত লাগে। ক্লান্ত লাগে নগর জীবন।
ক্লান্ত লাগে এই তপ্ত দুপুর।
ঝরে যাওয়া বৃষ্টির জলধারা, কচুপাতার উপরে পানির ফোঁটা, ভেজা কাক,
ভেজা রাস্তায় ছুটে যাওয়া বৃষ্টিস্নাত শিশুর দৌড়ে চলা এই তো জীবনের গল্প !
এই তপ্ত রোদ সবই আমার বেঁচে থাকার প্রাপ্তি।
প্রাপ্তির আর কোন মাত্রা জানিনা, ইচ্ছেও হয়না।
ভরদুপুরে আমার ভেতরে শব্দগুলো উথলে ওঠে
আমার এই বেঁচে থাকা,
এই প্রতিদিনের নিঃশ্বাস আমার অনেকগুলো দীর্ঘশ্বাসের সমষ্টি!!!!


Saturday, April 11, 2015

ফাঁসি রশি ছারে দীর্ঘশ্বাস...............।


জীবন্ত কিংবদন্তী ফাঁসির আসামীর আজ ফাঁসি!!
এত শুনে বিজ্ঞ বিচারক বললেন অর্ডার অর্ডার
খাতা কলম কেড়ে নিয়ে কিংবদন্তী দাও কারাগার।

ক্ষমতার কুদরতি পালাবদলে ঝুলন্ত লাশ হবে
ইতিহাসের কিংবদন্তী নায়কেরা অন্ধকারের হাতে ।
কষ্ট পেলেও আজ চোখে জল নেই, নেই কোন কথা
তীব্র কষ্টগুলো যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিলে একটু হাসি
চোখের নোনা জল শুকিয়ে যায় সেই হাসিতে ফাঁসি ।
নিলাজ তৈল মর্দনে কাঠগড়ায় ঝুলন্ত আসামীর চোখ
দাম্ভিক চিৎকারে আমার কষ্টগুলো আবারও জমাট বেধে
পাথর হয়ে চাপা পড়ে এক পোষ্ট মর্টেমে আত্মঘাতী।
বিষাক্ত পূঁজিবাদী নিঃশ্বাস, দোঁহে দোঁহাকারে জড়াজড়ি
বিচারপতি বলেন নির্দয় উচ্চারণ ভিনগ্রহের প্রানী তুমি
যত নষ্টের কারন ধর্মে বেঁধে গলায় গেঁথে দিলে বিষ-শর।
লাল-সবুজের বিদ্রোহী কান্ডারী এখন বড্ড নিঃসঙ্গ
আত্মহুতি আমার ফাঁসি,জীবন্ত কিংবদন্তী ফাঁসি দাও ।
ভিঞ্চি কোডের অগ্নিকুন্ডে জ্বলছে যান্ত্রিক প্রতিশোধ
ইতিহাস পতিত ধর্ষক হবে ফাঁসি হওয়া একটি গোলাপ
গ্রিজ মাখানো ম্যানিলা রশি এখন বড় বেশি পিচ্ছিল
কিংবদন্তী ফাঁসির আসামীর আজ ফাঁসি রশি ছারে দীর্ঘশ্বাস.........
...............।

প্রিয়ার চাহনি একাকার


ব্যাবিলন,রোম কত সভ্যতার উত্থান পতন
দুরের আকাশ পথের মহাজাগতিক শূন্যতা
সমুদ্রের দিক হারা পথিকের হঠাৎ ব্যাকুলতা।
ঐ চোখেই দেখেছি আমারি প্রতিচ্ছায়া
কি অপার বিশ্বাস,প্রিয়ার চাহনি সুভ্র সাদা
অজানা আবেশে জড়ায় হিয়া, নিরবধি
চোখে চোখ পড়ে, দেখি নীলজল নদী
মনে কি পরে ওগো সেই ছোট্ট বেলা
সাঁঝের মায়ায় জমিত বরবধূ খেলা
বিনে সুতোর মালা গাঁথা দু'জনের জীবনে
কেমনে বাঁচিব আমি তোমার বিহনে?
শৈশবে অবুঝ প্রিয়ার লুকোচুরি চাহনি
কৈশোরে চঞ্চলা প্রিয়ার চাতক চাহনি
তারুণ্যে লাস্যময়ী প্রিয়ার হরিণী চাহনি,
যৌবনে লাবণ্যোজ্জ্বল প্রিয়ার অভিমানী চাহনি,
বাসরে অনন্যা প্রিয়ার সলজ্জ চাহনি,
এক্কা-দোক্কা ফুলটোকাটুকি কানামাছি ছোঁয়াছুঁয়ি
সর্বাঙ্গে ভালোবাসার থরথর কাঁপুনি!
স্মৃতির পাতা খুলে দেখি ছিলাম মোরা একই সাথে
হৃদয়ের তিলতিল ঘামে বিস্ময়ের পাঁজরে ঘুমায় আত্মার শান্তি !
গোধূলি পূর্ণিমায় দেখছিলে সন্ধ্যাময়ূখ চোখে কারুকার্যময় জমিন।
বর্ণহীন ভাষার আমাকে আমি করে তোলে জনসম্মুখে
সেই আমি'র দীপ্তি চমকায় ঐ চোখে ।
ভালোবাসা আর প্রেম উন্মাদনায়
রঙিন স্বপ্ন ধরা দেয় বাস্তব চেতনায়
সময়ের ছন্দপতনে একেকজন একেক পথে
ছেঁড়া ছেঁড়া অদ্ভুত মেঘেদের ভিড় চারপাশে,
চোখের তারায় নাচে বরফের কুচি নোনা জল
আমি অসুখে অসুখে বুনি প্রতারিত নীল কাতান
ঝাঁক ধরে চলে যায় সময়ের সুখ কল্পনার দেশে ,
নোনা জল সমুদ্র হয়ে বুকের পোতাশ্রয়ে করে খেলা
সন্ধ্যা-সমুদ্রে মৌনতার অবিরত ধারায় আমি চেয়ে দেখি
অশ্রু বিসর্জন অবিরত ধৈর্যের বাঁধন ছিঁড়ে আমাকে কাদায়,
তবুও প্রিয়ার চাহনি এখনও হৃদয়ে খেলা করে শৈশবে লুকোচুরি।

Friday, April 10, 2015

ভুল করে ভালোবাসি



অভিমান জেগে থাকে কান্না জাগায় কবিতার বুকে,
উচ্ছ্বল প্রকৃ্তি কবিতার চোখে আজ গুমোট গম্ভীর !
ভালোলাগা আর ভালোবাসার দোলাচলে আবেগময় মন
শব্দের ছন্দ বা ফুলের গন্ধ কোনটাই আজ শিরিরে সিক্ত নয়।
নরম চুলের হালকা সিঁথিতে সোনালি রোদ খেলে মনের উঠানে,
তোমার ভাগ্যে আমার জীবন শুরু হলো নারী জিবন বলে কথা
সবে তো তোমার ইচ্ছেয় আমার পথ চলা শুরু অজানায় আমি!
প্রতিবারই নিজেকে খুব সাধারণরূপে আবিষ্কার করি তোমার দর্পণে
যদি ঝগড়াবিলাসী হও তুমি,ভালবাসবে কখন আমার!!! বলবে কি একটু শুনি?
বন্ধুত্ত্বের উষ্ণতা আর ভালোবাসা সবেতো এলে শান্ত দু'চোখের পাতায় ,
বড্ড বেশিই তোমার অভিমান ভাঙাতে গিয়েই হয় আমার যত হয়রানি
খুব ছোট্ট করে বললেও বলতে হয় ভালোবেসে ভুল করি, ভুল করে ভালোবাসি !!
আজকের সকালটি আমার জীবনে অন্য রকম এক ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে ভরা।
ব্যালকনিতে নয়নতারার পাপড়িতে চুপটি করে বসে থাকা শিশিরে সিক্ত সকাল তুমি।
হালকা ঝিরঝির বাতাস যখন ঝুমকো লতাগুলোকে দুল দিয়ে যায় তখন
আমার খুব ইচ্ছে করে ওই বাতাসে অবাধ্য চুলের উড়াই তোমার নয়ন পানে
যখন চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যায় তখন দেখতে কি ঝরের মতো লাগে।
একটু একটু করে নরম রোদ ছড়িয়ে পড়েছে নীল আকাশে,
একইভাবে তোমার ভালোবাসা আমার নিউরনের প্রতিটি কণায় ছড়িয়ে দিচ্ছে
ভালোলাগার বার্তা নিজের অজান্তেই আবৃত্তি করে উঠেছিল প্রিয় কবিতার চরণ
অভিমান জেগে থাকে কান্না জাগায় প্রিয়ার বুকে কবিতা!!!!,

Monday, April 6, 2015

অভিশপ্ত নুপুর (ছোট গল্প)




মায়ের হাতে এনে দিল নুপুর গুলো । সুজনের মা নুপুর দেখে হেসে ফেলল । কি রে সুজন কার জন্য নুপুর আর এত সুন্দর কারুকাজ নুপুরের মধ্যে, এক কথায় খুব সুন্দর! কিন্তু বাবা আমার তো নুপুর পরার বয়স নেই ।
আচ্ছা মা রেখে দাও । আমার খুব পছন্দ হল তাই নিয়ে এলাম । সুজনের বাবা হেসে বলল, ওগো নুপুর যখন এসেছে তাহালে সুজনের সখীও আসবে ।
সুজনের একমাত্র বোন বেড়াতে এসে মায়ের আলমারিতে নুপুর গুলো দেখে তার খুব পছন্দ হল ।কিন্তু মা বলল সুজন খুব পছন্দ করে নুপুর জোড়া এনেছে তাই তাকে দেয়া যাবে না । খুব যত্ন করে মা এগুলো রেখেছে ।
এর মধ্য কেটে গেল প্রায় তিন বছর খানেক সময় । সুজনের জন্য পাত্রী দেখা শেষ। যথা সময়ে সুজনের বিয়ে হল । পাত্রীর নাম ঝুমু । দেখতে যেমন সুন্দর কথা খুব আস্তে বলে । বিয়ে ঠিক ঠাক হবার পর সুজনের সাথে বেশ টেলিফোনে কথা হয়েছে । কথার ফাঁকে একসময় বলল সুজন , ঝুমু তোমার জন্য একটা রহস্যময় জিনিস আমি কিনেছি যা পুরাতন কিন্তু অনেক ভাল লাগার, তোমার দেখলেই পছন্দ হবে । ঝুমু জানতে চাইলে সুজন বলে সেই জন্য তোমাকে বাসার ঘরে অপেক্ষা করতে হবে ।
রাত একটা ঝুমু বাসার ঘরে আজ নববধূ সেজে বসে আছে । সুজন কে সে মাত্র দু বার দেখেছে কিন্তু ফোনে ফোনে খুব কাছের এক মানুস হয়েছে সুজনের কাছে । সুজন ঘরে প্রবেশ করে একটা লম্বা সালাম দিয়ে বলল , ঝুমু তুমি কি জান এই ঘরে একটা নীল পরী আছে । ঝুমা একটু হেসে আস্তে বলল , হ্যাঁ জানি নীল পরী নীল শাড়ি পরে বসে আছে । সুজন একটু হাসে বলল সত্যি তুমি ট্যালেন্ট ।
এবার ঝুমু বলল কোথায় পরীর জন্য কি জানি রহস্যময় জিসিস কিনে রেখেছেন তা দেখান !
সুজন- ও দুখিত আমি নিয়ে আসছি বলে সুজন আবার মায়ের কাছ থেকে নুপুর গুলো নিয়ে আসে ।
ঝুমু নুপুর গুলো দেখে অবাক হয়ে যায় । নুপুর জোড়া হাতে নিয়েই কাদতে থাকে হাউ মাউ করে । নব বধূর এই কান্না সুনে বাসার সবার ছুটে আসে । সুজন অবাক । কি হল ঝুমু তুমি এই নুপুর দেখে কেন কাদছ ! কাদতে কাদতে নুপুর গুলো বুকে জড়িয়ে বলে - সুজন আমার বাসায় একটা ফোন কর । আমি আমার বড় আপুর সাথে একটু কথা বলতে চাই ।
সুজন তারা তারি ঝুমুর বাসায় ফোন করে ফোনটা ঝুমুর কাছে দেয় ।
ঝুমু কাদতে কাদতে বলল - হ্যালো মা আপু কে একটু ফোনটা দাও । ঝুমুর আপু ফোনটা হাতে নিতেই ঝুমু বলল- আপু তুমি কেমন আছ, জানো আপু তোমার নুপুর পাওয়া গেছে । নুপুরের কথা শুনে দুই বোন একসাথে টেলিফোনে কাঁদতে লাগলো।
সুজন বলল - ঝুমু কি আছে রহস্য এই নুপুরে ।
ঝুমু আস্তে আস্তে বলতে লাগলো - আমার বড় আপু রিমুর বিয়ের দিন তার শাশুড়ি এই নুপুর গুলো আপু কে দেয় । আর বলে এটা তাদের পরিবারের পূর্ব পুরুষদের । খুব যতনে যেন রাখে । আপু ঐ পরিবারের বড় বউ। আবার আপুর যদি পুত্র হয় তাহালে সেই পুত্র বধূ এই নুপুর পাবে । তাদের পরিবারের এক রাজ পরিবার ছিল । অনেক যুগ আগে নাকি এই পরিবারের এক রাজার পুত্র সন্তান ছিল না । রাজাকে নাকি কোন নর্তকী অভিশাপ দিয়েছিল । কারন রাজা সেই নর্তকীকে খুব পছন্দ করত । কিন্তু রানি খুব গোপনে সেই নর্তকী কে হত্যার জন্য এক গুপ্তচর কে পাঠায় । গুপ্ত চর তাকে হত্যা করতে বিফল হয় কিন্তু তাকে খুব রক্তাক্ত করে ।
একদিন পরে গুপ্ত চর রাজার কাছে ধরা পরে যায় । নর্তকী জানতে পারে যে রানি এ কাজ করেছে তখন রাজার কাছে রানির প্রান দণ্ড চায় নর্তকী । কিন্তু রাজা নর্তকীর এ দাবী রাখতে অস্বীকার করে কারন সে রানি আর সে যা করেছে এটা রানির অধিকারের মধ্যে পরে । তখন নর্তকী প্রায় মরে যায় যায় অবস্তা । তখন নর্তকী তাকে তাকে অভিশাপ দেয় যদি আমি এই রানির আঘাতের জন্য মারা যাই তাহালে রানি কে আমার এ নুপুর পরে থাকতে হবে যদি নুপুর না পরে তাহালে সে মরা পুত্র সন্তান জন্ম দিবে । এ কথা বলার পরেই নর্তকী মারা যায় । তার পর পর রানি দুই বার মারা বাচ্চা জন্ম দেয় । শেষ পর্যন্ত রানি কে সেই নর্তকীর নুপুর পড়তে হয়েছিল । এর পর রাজার জীবিত পুত্র জন্ম দেয় । এ যাবত কাল এ পরিবারে বড় পুত্র বধূরা এ নুপুর পরে ।
সবাই এ কথা শুনে অবাক । কিন্তু সজল জানতে চায় এ নুপুর হারালো কিভাবে ।
ঝুমু বলল - আপু দুলাভাই আমাদের বাড়িতে বিয়ের সাত দিন পর বেরাতে আসে ঠিক এখন থেকে প্রায় তিন বছর আগের । আমদের এখানে বেড়ানো শেষ করে আবার দুলাভাইদের বাড়িতে যায় কিন্তু কোথায় কিভাবে হারায় তা জানিনা । আপু তার পর থেকে এ নুপুর জোড়া আর খুঁজে পাচ্ছিল না ।
সুজন খুব ভোরে তার পরিচিত এক দক্ষ স্বর্ণকারের নিকট গিয়ে ঐ নুপুর জোরার মত আরো এক জোড়া নুপুর বানায় । দেখলে কেউ সহজে চিনতে পারবে না ।
রিমুর নুপুর পাওয়ার খবরে রিমুর শ্বশুর বাড়ির লোক জন খুব সম্মানে রিমুকে তারা তিন বছর পর আবার গ্রহন করে । কিন্তু সুজন নুপুর দেয়ার সময় রিমুকে নকল নুপুর জোড়া দেয় ।
সময় গড়িয়ে আজ রিমুর খুব সুখের দিন কারন সে মা হতে চলছে । রিমু কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । ঝুমু সুজন রিমুর স্বামী সহ সবাই অপারেশন থিয়েটারের সামনে অপেক্ষা করছে এমন সময় ডাক্তার বের হয়ে এলো , সবাই ডাক্তারের কথা শুনার জন্য দাঁড়ালো ।
ডাক্তার খুব শান্ত ভাবে বলল- আমি দুঃখিত কারন রোগী একটা মৃত্যু সন্তান প্রসব করেছে । সবাই একদম চুপ হয়ে গেল । সুজনের চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পড়তে লাগলো । কারন সুজন সেই নুপুর জোড়া রেখে নকল নুপুর জোড়া দিয়ে ছিল । সুজনের কান্না দেখে ঝুমু বলল কেঁদো না আপু ভাল আছে । বৃক্ষ বেঁচে থাকলে একদিন ফল আসবে ।
সুজন রিমুর ক্যাবিনে গিয়ে দেখে রিমু ব্যাডে শুয়ে কাঁদছে । সুজন রিমুর মাথার কাছে গিয়ে কান্না করে দেয়। আর বলে আপু নুপুর গুলো কোথায় ? রিমু আপু কান্না ভরা চোখে বলে । ঝুমুকে একটা ব্যাগ দেখিয়ে বলে এই ব্যাগে । সুজন ব্যাগ থেকে নুপুর জোড়া বের করে বলে - রিমু আপু ,দুলাভাই , ঝুমু আমাকে সবাই আমাকে মাপ করে দাও । ঝুমু বলল - সুজন তুমি মাপ চাও কেন ? ঝুমু কারন আমি আপুর নুপুর গুলো বদল করেছিলাম । সুজন আসল নুপুর গুলো পেন্টের পকেট থেকে বের করে দেয় । রিমু আসল নুপুর গুলো হাতে নিয়ে আবারো কাঁদতে থাকে । তখন রিমু স্বামী বলে আমার ছোট বোন এই নুপুর চুরি করে বিক্রি করেছিল আমি গত কাল জানতে পারি । কারন আমার বোন মনে করত এ সব বিশ্বাস করা এক ধরনের কুসস্কার কিন্তু আমার বোন ও গত মাসে এক মৃত্যু মেয়ে জন্ম দেয় । যাই হোক আমরা এ অভিশাপ নিয়েই বাচতে চাই।
সুজন হাসপাতাল থেকে বের হয়ে একটা রিকসা নেয় তখন রাত ১১ টা, আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে জন্ম মৃত্যু আর বেঁচে থাকা এক রহস্য নকল নুপুর গুলো দিকে চেয়ে হাসতে থাকে এমন সময় চেয়ে থেকে রমনা পার্কের কোনে এক সুন্দরি তাকে ইসারায় ডাকে । সুজন রিকসা থেকে নেমে ঐ মেয়েটার হাতে নুপুর গুলো দিয়ে আবার রিকসা উঠে ।
মেয়েটা অবাক হয় কিছু না বলে এত সুন্দর নুপুর গুলো আমাকে দিয়ে গেল ।
মায়ের নাক ফুল ঠিক করাতে সুজন স্বর্ণ কারের দোকানে গেল । কিন্তু চোখ গেল এক জোড়া নুপুরের দিকে । নুপুর দেখেই পছন্দ হয়ে গেল সুজনের । কিন্তু তার নুপুর দেয়ার মত কেউ নেই । তবু সে রূপার নুপুর জোড়া কিনল ।অনেক পুরাতন রূপার নুপুর । আজকাল কেউ এত চওড়া নুপুর পরে না । তা ছাড়া নুপুর গুলোর মধ্য একটা জমিদারী খানদানি ভাব আছে ।