Wednesday, April 22, 2015

যে ভাবে পীর হলেন আজিজ.......................( একটি গল্প )


মনোবিজ্ঞানে পড়েন ইমু দারুন একজন মানুষ । কারো সাথে মজা করা, ফান করা বা কাউকে উপকার করা তার কাজ । পড়েন দেশের বাহিরে একটা বিশ্ব বিদ্যালয়ে । সময়টা শীত কাল , আর শীত কাল আসলে সে চলে তার প্রিয় গ্রামে বাড়ি ।
বাংলো ঘরে বসে কেরাম খেলায় মগ্ন ইমু এমন সময় আজিজ এলো একটু দেখা করতে । ইমু আজিজ কে দেখে বলে কিরে আজিজ চোখ মুখ এত শুকনা কেন ।
ইমু ভাই তোমার সাথে একটা জরুরি কথা আছে তবে এখানে বলা যাবে না ।
ওকে চল সিমুল তলা যাই একটা বিচার আছে যেতে যেতে শুনবো ।
না ইমু ভাই খুব জরুরি কথা আগে শুন একটু ।
আচ্চা বল আজিজ কি কথা - একটু আড়ালে গিয়ে আজিজ বল - আমি তোমার সাথে সিমুল তলায় যামু কিন্তু আমাকে শ খানেক টাঁকা দাও । ঘরে চাল নাই ।
বলস কি আজিজ তোমাদের এ অবস্তা । আরে আমাদের না, বল আমার । কেন তুমি বাড়িতে থাক না ।
না ইমু ভাই শিমুল তলা যেতে যেতে বলব । আজিজ টাকা নিয়ে চলে গেল । ইমু আবার কেরাম খেলায় মন দিল ।
বিকেল তিনটায় আজিজ এলো । আজিজ একটা মাদ্রাসায় পরত । খুব সান্ত ও ভদ্র , মাদ্রাসায় পড়ার সময়......বাড়ি বাড়ি থেকে খয়রাতি ধান তুলতে যেতে হত এটা আজিজের খুব লজ্জা লাগত । মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে সে আর লিখা পড়া করে নাই । নয়া বাজার মসজিতে সে সকালে ছেলে মেয়ে আরবি পড়ায় আর বাবার কৃষি কাজে সাহায্য করে ।
ইমু কে নেয়ার জন্য রিক্সা চলে এসেছে । ইমুদের বাড়িতে বাতেন ইমুর সব কাজ করে । গ্রামের বাড়ি বাতেন দেখা শুনা করে । বাতেন এই রিক্সা নিয়ে এলো । আজিজ আর ইমু রিক্সা নিয়ে রওনা দিল শিমুল তলা ।
এবার আজিজ বলল - ইমু ভাই আপনি নাকি মানুষ কে যে বুদ্ধি দেন তা সফল হয়। শহরে নাকি আপনার অনেক নাম । আমাকে একটা বুদ্ধি দেন । ইমু একটু হেসে বলে শুন আজিজ তোমার চেহারা বেস ভাল । খুব ভাল করে আরবি লিখতে ও পরতে পার উদু ও ফাঁসি একটু বেশ ভাল করে পার ! তাই না ।
আজিজ হ্যাঁ পারি কিন্তু এ গ্রামে আরবি উদু ফাঁসি ভাষা দিয়ে কি হবে ।
আজিজ হবে এখন বল তোমার এ অবস্তা কেন । গরিবি হাল কেন? তোমার বাবার ত জমির অভাব নাই!
ইমু ভাই আমার মামত ভাই সাথে একটা বিয়েতে যাই , একটা ইয়াতিম মেয়ের বিয়া , যেয়ে শুনি মেয়ের মামার দশ হাজার টাকা বিয়ের দিন দেয়ার কথা ছিল । দিতে পারে নাই মেয়ের মামা । মেয়েটা জেন চাঁদের আলো গরিবের ঘরে একটা পরী ! মেয়েটার একটু সমস্যা চোখ গুলো বিলাই চোখের মত ।
এখন টাকার জন্য ওরা বিয়ে করবে না । পরে দয়া হইল আমার আমি বিয়া কইরা নিয়া আইলাম কিন্তু আমার বাবা মা বড় দুই বোন আর বড় ভাবি ও ভাই বিষয়টা মেনে নিল না। বড় ভাই বিয়েতে সাইকেল ও নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ঘর পাইছে । শ্বশুরের অনেক জমি । আমার বউয়ের কিছু নাই ।
বাবা আলাদা করে দিল এখন রান্না ঘরে বউ নিয়া থাকি । আলাদা সংসার । কোন কাজ পাইলে করি না পাইলে নাই। আমিতো হজুর মানুষ মিলাদ পারাই । তাই মানুষ সহজে কোন কাজ ও দিতে চায় না ।
ইমু একটু হাসে আচ্ছা আজিজ তুমি কোন চিন্তা কর না । রাতে একটু বাড়িতে এসো আমি যে বিচারে যাচ্ছি সে খানে তোমার না যাওয়া ভাল । আজিজ কে রিক্সা থেকে নামিয়ে চলে যায় ইমু ।
আজিজ ঠিক সন্ধ্যায় চলে আসে । লিচু গাছ তলে বসে ইমু আর আজিজ কথা বলা সুরু করে । ইমু বলে শুন আজিজ আজ থেকে তুমি আমার পরিকল্পনায় চলবে ।
আমি তোমাকে চলার জন্য যা টাকা লাগে দিব । পরে তুমি তা আমাকে পরিশোধ করবে । কাল থেকে কাজ শুরু । আজ দশ হাজার টাকা নাও ঘরটা এই লিস্ট মতে ঠিক কর এক সপ্তাহের মধ্য ওকে ।
আজিজ বলে এত টাকা কি ভাবে পরিশোধ করব ।
ইমু বলে সময় বলে দিবে । আজ থেকে তোমার বউ বাড়ির সবার সাথে পর্দা করবে । তুমি তোমার বউ আর আমি ছরা কারো সাথে কথা বলবে না। জঙ্গল বাড়ি বাজার , নয়া বাজার , এমন কি কোন বাজারে কারো দোকানে বসবে না। গান শুনবে না । বাজারে যেয়ে ইসারায় জিনিসে দাম জিজ্ঞাসা করবে । এক দামে কিনতে চেষ্টা করবে । আগামি মাসে ঢাকা আসবে । বাকি কথা সে খানে হবে । এমন কি আমার সাথেও আজ থেকে গ্রামে কথা বলবে না। কাউকে সালাম দিবে না আর যদি সালাম দাও তাহালে শুধু শিশুদের সালাম দিবে । কারো বাড়িতে মিলাদ বা দোয়া পরতে যাবে না । আর প্রতি দিন বিকালে তোমাদের পুরান বাড়ির পুকুর টা চার বার চার দিকে হাঁটবে আর প্রতিদিন পুকুর পারে তাল গাছটার তালে আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বসবে । তবে তুমি নমাজ পড়বে মসজিদের বারান্দায় ইমামের পিছনে পড়বে কিন্তু কোন লাইনে দারিয়ে না। খুব সুন্দর দেখে সাদা কাবলি জামা পড়বে মাথায় পাগড়ি ।
আজিজ কে বলল আর প্রতিমাসে সদর পোস্ট অফিস থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়ে আসবে । মিথ্যা বলবে না । পুকুর পারে হাটার সময় তজবি ব্যবহার করবে ওকে । বাকি কাজ হল তুমি ঢাকা আসবে আমি কিছু বই কিনে দেব তা পড়বে ।
ইমু চলে গেল ঢাকা । আজিজ খুব সকালে মসজিদে গেল নামাজে কিন্তু সে নামাজ পড়ল । বারান্দায় । মাথা নিচু করে সে বাসায় চলে গেল । ঘর বানালও টিনের চার রুমের । আছরের নামাজ পরে সে রোজ পুকুর পারে চলে যায় । তাল গাছ টার তলে বসে হাতে তজবি নিয়ে খুব সুন্দর করে বসে হালকা জিকির করে । আজিজ কে মিলাদ পরাতে নিতে এলো আজিজ গেল না । ইশারায় না করে দিল ।
আজিজ বাজারে যায় কিন্তু কারো সাথে কোন কথা বলে না। গ্রামের মানুষ তার এ পরিবর্তন সবার চোখে পরতে লাগলো ।
যথা সময় সে চলে আসলো ঢাকা ইমুর বাসায় । ইমু দেখল সে আজিজ তার কথা রেখেছে । এক মাসে তার বিরাট পরিবর্তন । ইমুর মা বলে এই হুজুর কে ।
মা পরে বলছি উনি বেশ কয়দিন এখানে থাকবে । ইমু তার মাকে বলে মা জানো তুমি এই লোক অনেক কামিল মানুষ । সহজে কারো সাথে মিশে না । এই দিকে বিকেলে ইমুর মায়ের খুব মাথা ব্যাথা । একটু আগে সে ট্যাবলেট খেল ব্যাথার জন্য । ইমু বল মা দেখি আজিজ ভাই সাহেব কে বলে তোমার জন্য একটু তেল পারা দিলে হয়ত ভাল হয়ে যাবে ।
বিকেলে শুরু হল আজিজ কে নিয়ে তার মনোবিজ্ঞানের কাজ। কি ভাবে মানুষ মানুষ কে বুঝতে পারে। কি করে মানুষের মনের ভাব আদান প্রদান করে । মেডিটেশন সিখাতে লাগলো । সাথে ভারতীয় জ্যোতিষী দের বই । রাশি মানুষের জন্ম লগ্ন । আর মানুষ কে কি করে হিপনোটাইস করে ।
আজিজ বলে ইমু ভাই আপনি মানুষের সামনে আমাকে আপনি করে বলেন কেন ।
ইমু হেসে বলে আজ থেকে আর তুমি করে বলব না । আপনি আমাকে আপনি করে বলবেন । এমন কি ছোট বড় সবাইকে । মানুষের সামনে আপনার বউ কেও আপনি করে বলবেন । আজিজ মাথা নাড়ায় বলে ওকে ভাইজ আজ থেকে তাই ।
ও আজিজ ভাই আমার মায়ের জন্য আপনি আজ তেল পড়া দিবেন । আর মাকে বলবেন । জেন গোসল করে ফরজ নামাজ । সুন্নত নামাজ শেষ করে অতিরিক্ত দু রাকাত নফল নামাজ শেষ করে যেন এই তেল মাথায় ডান হাতে দিয়ে লাগায় । আর বলবেন তিন দিন লাগালে ভাল ফলাফল হবে। আর মাকে বলবেন যেন ভাল হলে এক নিয়তে যেন আপনার কাজে কিছু দান করেন । সাধ্য মতো।
সন্ধ্যায় ইমুর মাকে সে তেল পড়া দিল । নিয়ম বলে দিল । রাতে নামজ শেষ করে নিয়ম মতে ব্যবহার করলো । সকাল থেকে আর ব্যথা নেই । ইমুর মা বেশ খুসি কামিল লোক । সকালে নাস্তা দিল খুব আদর করে ।
এখন ইমু বলল দেখলেন আপনার তেল পড়া কাজে লাগছে । আজিজ বলল কি করে ভাই জান । দেখুন আজিজ মানুষের বিশ্বাস হল খুব দামি । যদি একবার বিশ্বাস জন্ম দিতে পারেন । তাহালে হল । তবে সব বিশ্বাস কে ভাল কাজে ব্যবহার করতে হবে। জগতের সব সমস্যা আপনি ভাল করতে পারবেন না ।
ইমু বিকেলে আজিজ কে নিয়ে বের হল বাংলা বাজার সেখান থেকে কিছু তাবিজের দোয়া আর আমলের বই কিনে দিল । যা সব উর্দু কিতাব । আজিজ বলল ভাউই জান উর্দু কেন । ইমু বলল- আপনি যা পড়বেন তা শুধু আপনি জানবেন । এটাই নিয়ম। বই কিনা শেষ আজিজ কে নিয়ে বের হল হাই কোর্ট মাজার । সাহ-আলির মাজার , দেখল । বাসায় ফিরে দেখে ইমুর ছোট খালা তার দু বান্ধবী আসছে দুটা সমস্যা নিয়ে । ইমু বলল আছরের নামজের পর ছাড়া উনি কথা বলে না। যে কথা সেই কাজ । বেচারারা আছরের সময় নামজ শেষ করে দেখা করতে গেল আজিজের সাথে । কিভাবে কথা বলতে হয় তা তো ইমু তাকে ভাল করে শিখিয়ে দিয়েছে । আজ আজিজ পাশ , তার দুই খালা পানি পড়া নিয়ে গেল । তাবিজের জন্য বার জাহার টাকা দিয়ে গেল । এখন ইমু বলল জানতে হবে কথার মধ্য তার আর্থিক অবস্থা আর কাজটা তার কাছে কতটা জরুরি । এখন কি কাজ আজিজ ভাই জানেন । সবার নাম ঠিকানা আপনি ফাঁসি ভাষায় লিখেন। তাবিজ কি করে লিখতে হয় । এই গুলোর মধ্য আছে পরে পরে লিখে দিবেন। আর আজিজ ভাই আমার কথা মন দিয়ে শুনুন -
আপনার সাথে দেখার সময় বাদ ফরজ নারী পুরুষ বাদ আছর মহিলা বাদ মাগরেব শুধু মাত্র পুরুষ । তবে আপনি এখন গ্রামে যান আমি তিন মাস পরে আসছি । আবার দেশে আসার পর কাজ শুরু । এই তিন মাস আপনি এই বই গুলো পড়বেন । আর আজিজ ভাই আপনি যে গাছ তলে বসেন যদি কেউ আপনার এখানে আসে তাহেলে বসতে দিবেন । আর যদি কোন সমস্যা হয় চিঠি লিখে জানাবেন ।
বিকেলে বাড়ির পথে রওনা দেয়ার সময় ইমুর মা সালাম দিয়ে বলল- বাবা আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন । আপনি এই বাসায় আসার পর থেকে খুব ভাল লাগছে । আপনি যে সুন্দর করে নামাজ পড়েন । কুরান পড়েন । চুপচাপ থাকেন । শুধু আল্লাহ জিকির করেন । আমি আপনার নিয়ম মেনে চলব । আর বাবা এই প্যাকেট টা নেন । আপনি যখন ঢাকা আসবেন এই বাড়িতে উঠবেন ।
আজিজ কে এসে রেল গাড়িতে তুলে দিল । আজিজ জাওয়ার সময় তার চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো জিবনে সে এত সম্মান আর পাই নাই । আজিজ ইমুর মায়ের প্যাকেট টা ইমু কে দিল , ইমু আবার হাসল ! আজিজ ভাই এখনো সময় হয় নাই টাকা নেয়ার , সময় হলে নেব। ট্রেন ছাড়ল ইমু বিদায় নিয়ে চলে আসলো । আজ রাতেই ইমুর ফ্লাইট । ইমু চলে গেল লন্ডন । ট্রেন চলছে আজিজের বাড়ির দিকে । প্যাকেট খুলে আজিজ অবাক এত টাকা মানুষ মানুষ কে দেয় ।
বাড়ি ফিরে আজিজ তার বউকে প্যাকেট টা দিল । আজিজের বউ আজ অনেক খুসি । আজিজ ঢাকা থেকে শাড়ি নিয়ে আসছে । আরও কতকি ? আজিজে বউকে বলল মানুষের জিবনে লিখা পড়া জানলে অনেক কিছু করা সম্ভাব ।
আজিজ সকালে উঠে সেই আগের মত মসজিদের বারান্দায় নামাজ । বিকেলে পুকুর পার তাল গাছ তলে বসে থাকে । কারো সাথে কোন কথা বলে না । আজ কাল সে লক্ষ্য করলো যে তাকে সবাই ছালাম দেয়া শুরু করছে । কয়দিন আগেও যে পোলাপান তাকে দেখলে মশকরা করত তারাও সালাম দেয় । আজিজের বউকে আজিজের মা বলে- আমার আজিজ কি পাগল হয়ে গেল ! আর এত টাকা পয়সা সে কোথায় পায় । মেয়েটা খুব ভাগ্য বান মনে হয়।
কই আজিজের বউ শুনছ - আজিজ কোন কাম কাজ করে না । নতুন টিউবওয়েল বসাইল । পাকা বাথরুম । জমিও রাখল । আমাকে বল ও কি করে ? আজিজের বউ একটু হেসে বলে মা উনি তো গত তিন চার মাস যাবত কারো সাথে কথা বলে না। রাতে জিকির করে । জিকির করার সময় মাঝে মাঝ ঘর আলোকিত হয় , আমার মনে হয় মা উনার সাথে জিন আছে ।
আজিজ দুপুরে মসজিদে গেছে নামজ পরতে আজও সে অন্য দিনের মত বারান্দায় । সে দেখল তার পাসে অন্য গ্রামের ও তার নিজ গ্রামের কিছু ছেলে তার সাথে দারাইছে ।
আজিজ কাছে জিন আছে এ মন একটা খবর খুব তারারারি মানুষের মুখে মুখে রটে গেল । এর মাঝে কিছু কিছু ব্যাপার কাকতালীয় ভাবে গঠতে লাগলো । আজিজ যে সেলুনে চুল কাটাতে বসে ছিল সে নাপিত কে বলল যে নিছে আলাধা একটা সাদা কাপড় বিছিয়ে সেই কাপড়ের উপরে বসলো । নাপিত চুল কাঁটা শেষ হলে সে সব চুল একটা আলাদা কাপড়ে করে নিল । এই দিন বিকেলে এক বিদেশী লোক সেই সেলুনে চুল কাটে আর নাপিত কে এক হাজার টাকা দেয়। নাপিত বাড়ি গেলে জানতে পারে তার মেয়ে কে স্বামী এক বছর পরে সংসারে ফিরত নিতে আসছে ! আর কোন টাকা পায়সা দাবি করে না। নাপিত খুব সকালে গাভীর দুধ নিয়ে আজ আজিজের বাড়িতে আসে । আজিজ কোন কথা না বলে হাত উপরে তুলে দোয়া করে দেয় । নাপিত আজিজ সাহবের পা ছুয়ে সালাম করে আদবের সহিদ বিদায় নেয় ।
মসজিদের সভাপতি আর ইমামের মাঝে কি নিয়া ঝমেলা আছরের নাজের পর সবাই বসছে কিন্ত আজিজ কে সবাই ধরল একটা ফাইসালা দেয়ার জন্য । আজিজ সবার মুখে দিকে তাকিয়ে নিল একবার ।এখন আজিজ বলল আমি একটাই কথা বলব যদি রাখেন তাহালে বলল আর না রাখলে এ মসজিদের ব্যাপারে আর কোন কথা আমি বলব না কোন দিন । আপনারা কি রাখবেন আমার কথা । আমি সিদান্ত দিলে পরে না বলা যাবে না । যদি কেউ না বলে তার কোন খতি হলে আমি দায়ি না । সবাই বলল- হ্যাঁ আপনার কথা রাখব বলুন ! আজিজ বলল আমার সাথে সবাই হাত তুলে দোয়া করুন এই দোয়ার পরে ফাইসালা । দোয়া শেষ করে আজিজ বলল ... ইমাম সাহেব রিজেকের মালিক যদি আল্লাহ হয় তবে আপনি কোন চিন্তা কইরেন না। আগামি একমাসের মধ্য আপনি অন্য এটা চাকুরী খুজে নেন । আর সভাপতি সাহেব আপনি এই একমাস ইমাম সাহেবের তিন বেলা বাসায় খাওবেন । আজিজ এ কথা বলে বিদায় নিল । সাত দিন পর ইমাম সাহেবের কাছে সভাপতি মাপ চেয়ে বলল ইমাম সাহেব আপনি ই থাকেন ।
ইমুর খালার বান্ধবী ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে সুজা আজিজের গ্রামের বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে বাজারে এলো । সবাইকে বলল ভাই আজিজ পীরের বাড়ি কোনটা গ্রামের বাড়ির মানুষ তো অবাক । আজিজ আবার পীর হয়ে গেল ।
আজিজের তাল গাছ তলে প্রতিদিন মানুষ ভীর করে । সেই গাছ তলায় ভদ্রমহিলা এসে আজিজ কে সালাম করল । সবাই অবাক । আজিজ কে বলল বাবা আপনার দোয়ায় আমার স্বামী একটা বড় কাজ পাইছে । কিছু দিনের মধ্য আজিজের নাম গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল ।
খুব ভোরে মানুষ আসে আজিজ পানি পড়া দেয় , ফু দেয় , আছরের সময় মহিলারা আসে পানি পড়া দেয় ফু দেয় । যেই আসে বাবার দরবারে টাকা দিয়ে যায় ।
করিম গঞ্জ থানার ওসির মেয়ের খুব জর ওসি সাব মেয়ে নিয়ে আসলো আজিজ সাহেব একটা তাবিজ দিল
পানি পরে দিল । মেয়ে ভাল ,জর কমে গেল । আস্তে আস্তে আজিজ পুকুর কিনে নিল । তালগাছ তলে এখন কত রকমের মানুষের আনা গুনা ।
আজিজ ভাল করে শিখে গেছে মানুষ কে কি করে বশীকরণ করা যায় । এখন অনেক মানুষ তার খেদমত লেগে গেছে ।
তিন বছরের মধ্য ইমু আর দেশে আসতে পারে নাই । ১৯৮০ সাল আজিজ বিকালে তার আশেকান নিয়ে কুরান হাদিস আলোকে জিবন নিয়া কথা বলছিল । বিশাল মিলাদ হয় প্রতি শুক্র বার আজও মিলাদ । আজিজ সাহেব আজ একটা সবপ্নের কথা বলল - যে দেশের মধ্য একটা সূর্য স্বপ্নে দেখলাম একটা অজগর সাপ গিলে খেল । ঠিক আর কয় দিন পর প্রেসিডেন্ট জিয়া সাব মারা গেল । আজিজ কি আর আজিজ রইল । তার সাথে দেখা করতে এখন খুব ভাগ্যের ব্যাপার । যে টাকা আসে প্রতিদিন টা চিন্তা করা যাবেনা । দেশের আনাছে কানাছে তার মুরিদান আছে । আজিজ নিজেও অনেক লিখা পড়া করে জানার জন্য ।
ইমু দেশে আসছে বাতেন তার জন্য বিকেলে চা নাস্তা নিয়ে আসছে । এর মধ্য কেটে গেছে তিন বছর । ইমু বাতেন কে বলল - বাতেন আজিজের কি খবর জানিস । ভাই জান কোন আজিজের কথা বলছেন ঠিক চিনলাম না ।
আরে জঙ্গল বাড়ির আজিজ ।
ভাই জান ওনার নাম এভাবে নিয়েন না ! উনি অনেক বড় মাপের মানুষ । তাছারা উনি আল্লাহ ওয়ালা মানুষ ।
তাই নাকি
জি ভাই জান । উনি জীন পালেন । দেশের কত মানুষ তাকে মানে জানেন । ও আচ্ছা ঠিক আছে বাতেন ! তা আজিজ ভাই কে কি ডাকা যাবে এই খানে । বাতেন হাসি দিয়া বলে ভাইজান যে কি বলেন আমাদের থানার ওসি সাহেব নিজে সাহস পাবে উনাকে ডাকতে । আচ্ছা বাতেন তুমি যেয়ে কি বলতে পারবে যে আমি আসছি । বাতেন আবার ও হাসে ভাই জান যে কি বলেন তবে আমি চেষ্টা করব আপনার কথা উনাকে বলার জন্য ।
বাতেন হাতের কাজ শেষ করে তাল তলা গেল । এখানে এখন একটা মসজিদ বেশ কয়টা পাকা ঘর বাজারের পাশে হওয়ায় মানুষ জন থাকে প্রচুর । আজিজ তার ভক্তদের পানি পড়া ফু তেল পড়া তাবিজ দিচ্ছিল । এ কাজ এখন খাদেম রা করে উনি শুধু কিতাব দেখে লিখে দেয় । অনেক ক্ষণ পরে বাতেন হুজুরের সামনে গেল । হুজুর কি ব্যাপার বাতেন তুমি । বাতেন হুজুরে কানে কানে বলল । হুজুর আমার ভাই জান জিনি লন্ডন থাকে ঐ আরেক বার আসছিল আপনি যে রিক্সা দিয়া গেছিলেন । হুজুর একটু হাসল আর বলল উনাকে বল বাতেন কোন চিন্তা না করতে তুমি যাও । বাতেন চলে আসলো তখন মাগরিব প্রায় ।
কিরে বাতেন আজিজ সাহবের কি খবর দেখা হল ।
হ্যাঁ ভাই জান তাজ্জব ব্যাপার শুধু বলল আপনার আশা পুন্য হবে । আমার কাছ থেকে কিছু শুনল না !
পীর আজিজ হুজুর ঘরে এসেই বউ কে বলল- ভাল একটা দামি শাড়ি পড় । দুবাই এর বোরখা টা পড় ।
আমি আমার বাবা হুজুর কে দেখতে যাব । বউ কয় তোমার বাবা হুজুর আছে কই আগে তো বল নাই । সব কথা কি বলা দরকার । আজ যে আমার জিবনে এত টাকা পয়সা , আমার যে সম্মান টা সব আমার বাবা হুজুরের জন্য । উনার নিষেধ ছিল তাই বলি নাই । রাত নয়টায় রওনা দিল ইমুদের বাড়ির দিকে । যাওয়ার সময় একটা কাপড়ের বড় ব্যাগ ভরে টাকা নিল । হারিকেন নিয়া আজিজ হুজুর এলো ! বাতেন তো আকাশ থেকে পড়লো বাবারে কত বড় কামেল ভাই জান দেখা করতে চাইলো আর চলে আসলো । বাতেন আজিজ হূজুর তার বউ কে নিয়া ইমুর ঘরে গেল । বউ দেখে পেন্ট সার্ট পরা এক মানুষ । আজিজ ঘরে প্রবেশ করেই ইমুর পা ছুয়ে ছালাম করল , আরে আজিজ ভাই কি করেন । আজিজের বউ ছালাম করল । আজিজ কে বুকে জরিয়ে ধরল । বাতেন তো আবাক হয়ে গেল ! বাতেন কে বলল যা দেখছ এটা বন্ধুত আর কিছু না । ইমু বলল আমি লন্ডনে একটু ঝমেলায় ছিলাম । তাই যোগাযোগ করতে পারি নাই । তোমার কাজ তুমি খুব সুন্দর করে শেষ করেছ । ঢাকার খালারা তো আজিজ হুজুর বলতে অন্ধু ।
আজিজ টাকার একটা ব্যাগটা দিল- এটা কি আজিজ ভাই? ভাই জান এটা দেখতে নাই এটা আপনার ।আছা ওকে বাতেন ব্যাগটা আলমারিতে রাখ । আজিজ ভাই আপনার জন্য কিছু বই আর এই নেন একটা নোট যাতে যাতে আপনার বাকি কাজ লিখা আছে । আজিজ নোট টা ভাল করে পড়লো । রাত এগারোটা দিকে আজিজ বিদায় নিল । এখন প্রতি বছর ওরস হয় । আজিজের নামে গান হয় । আজিজের কাছে কত নেতা কত আর্মি পুলিশ আসে । সবাই আজিজ বাবা ডাকে ............................................. আজিজ আজ অনেক বড় পীর ।
একজন মনো বিজ্ঞানী ইমু সমাজে কি দিল বুঝ না ভাল কিছু .................................??

0 comments:

Post a Comment