
তারপর কানের ফুল পরে রাজকন্যা ঘুরে বেড়ায়। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়। কিন্তু সওদাগর আর ফিরে আসে না। রাজকন্যা প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নদীর তীরে অপেক্ষা করে। রাজকন্যার অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। দিনে দিনে বেড়ে ওঠে বিরহব্যথা।
এদিকে রাজার চোখে ঘুম নেই দেখতে দেখতে তার ছোট্ট মেয়েটি বড় হয়ে গেছে। সুপাত্রে কন্যা দান করতে হবে। অবশেষে দেখে-শুনে রাজা তার কন্যার বিবাহ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যময়। এক কান, দুই কান, করতে করতে খবর শেষে রাজকন্যার কানেও আসে।
রাজকন্যা আর কি করে। বিরহব্যথায় কাতর হয়ে, অবশেষে নদীর পাড়েই কাঁদতে বসে। দিনে দিনে দিন চলে যায়। কান্না আর শেষ হয় না। জীবন থাকতে সওদাগর ছাড়া আর কাউকে মালা দিতে পারবে না রাজকন্যা। এদিকে সওদাগরও আসছে না। একদিন পাগলপারা রাজকন্যার কানের ফুল হারিয়ে যায় নদীর বুকে। খুঁজতে খুঁজতে অস্থির হয়ে পড়ে কন্যা। শেষ পর্যন্ত আর খুঁজে পায় না। রাজকন্যার মনে করে সওদাগর আর আসবে না কোন দিন। কানের ফুল হারিয়ে যাওয়া যেন তারই লক্ষণ।
হতাশ, ক্লান্ত রাজকন্যা আরেক কানের ফুল তীরে খুলে রেখে, গায়ের জড়ানো ওড়না খুলে নদীর বুকে আত্মাহুতি দিয়ে প্রেমের মর্যাদা দেয়। সকলেই পরের দিন এসে দেখে রাজকন্যার ওড়না আছে, কানের ফুল আছে কিন্তু রাজকন্যা নেই। কিছুই বুঝতে আর বাকী থাকে না কারো। রাজকন্যা আর নেই। শোকে পাথর হয়ে রাজাও রাজ্য ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকে এই নদীর নাম হয়ে যায় কর্ণফুলী।
0 comments:
Post a Comment