Tuesday, May 5, 2015

অনু গল্প ............... জিনের বাদশা


রাত তিনটা আমি লিখছি । তখন মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল । একটা খুব সুন্দর নাম্ভার , এতে রাতে কে ফোন দিল একটু চিন্তা করে সেল ফোনটা হাতে নিলাম । ভাবছি রিসিভ করব কি না! লাইন কেটে গেল । আবার ফোনটা বাজতে লাগলো ।এবার রিসিভ করলাম । খুব সুন্দর করে বলল- আসসালামুয়ালাইকুম ওর রহমতউল্লাহ ওর বারাকাতউল্লাহ
আমি কণ্ঠ শুনে খুব মুগ্ধ হলাম। আমি ও বলাল - অলাউকুম সালাম । এখন সে আবার বলল - মা আপনার মন ও শরীরর ভাল আছে তো ?
-- হ্যাঁ আমি ভাল কিন্তু আপনি কে
-- মা জননী আপনি আমাকে চিনবেন না তবে পরিচিয় দিলে চীনতেও পারেন , মা জননী ।
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম কে আপনি! আমি তো আপনাকে চিনি না ।
-- মা গো আপনি আমাকে চিনবেন না । আমি হলাম জীন ।
-- কি জীন আপনি ! বাহ জিনেরা আবার সেল ফোন ব্যবহার করে
-- জি, মা জননী । মোবাইল হওয়াতে এখন আর মানুষের শরীররে ভর করতে হয় না ।
-- বাহ দারুণ তো । তা জীন চাচা কি মনে করে আমাকে ফোন দিলেন এত রাতে ।
-- মা জননী আপনি অনেক দুঃখী একজন নারী । আপনার দুঃখ দেখে আমি ফোন না করে পারলাম না।
-- ঠিক বলছেন , জীন চাচা , আসলেই আমি দুঃখী একজন নারী । আমার দুঃখ গুলো কি আপনি জানেন ?
-- কি যে বলেন মা জননী । আমার বয়স এখন সাত শত বছর । আপনার জন্য আমার অনেক মায়া হয়।
মা জননী । আমি আপানার সব দুঃখ বালামুসিবত সব দূর করে দিতে চাই ।
-- জীন চাচা, শুনে খুব খুসি হলাম । আপনি আমার দুঃখ গুলো দূর করে দেন ।
-- মা জননী , আপনি সহজ সরল নারী , যাকে বিশ্বাস করেন সেই , আপনাকে কষ্ট দেয় , আপন জন
আপনাকে কষ্ট দেয় । সবাই আপবাকে সামনে ভাল বলে পিছনে আপনাকে ক্ষতি করে , ঠিক কি না মা
জননী । মা জননী আমি আছি আপনি কোন চিন্তা করবেন না । আমি আপনার সব কাজ করে দেব।
আপনি আমার মেয়ের মত মা জননী ।
আমি একটু কান্না কান্না কণ্ঠে বললাম জীন চাচা- আপনি সত্যি একজন ভাল জীন । হয়ত আল্লাহ ইচ্ছা আপনি আমাকে ফোন করেছেন । তা জীন চাচা আপনি কোথায় থাকেন একটু বলবেন ।
-- মা জননী আমি কয়েকাফ ছিন ছিন নগরীতে থাকি ।
-- জীন চাচা আপনার দেশ টা কেমন । আমাদের দেশের মত কি- চোর বাটপার, টাউট আছে ।
-- নাউজুবিল্লা এটা কি বল মা । জিনরা খুব ভাল তবে কিছু খারাপ জীন আছে ।
-- জি, জীন চাচা , শয়তান তো খারাপ জীন ছিল! তাই না চাচা।
-- জী, মা জননী । তবে আমি একজন নেক ফরেজগার জীন ।
রাত তিনটা থেকে জীন চাচা আমার সাথে কুরান হাদিস অনেক বুঝাল । আমাকে বলল মা জননী তোমার সামনে ভয়ানক বিপদ । আল্লাহ তোমার হেফাজত করুন । আমি একটু মনে মনে হাসলাম । আমার কথা শুনিয়া আমার স্বামী ও হাসিতে লাগিল । জিনের সাথে খুব শান্ত ভদ্র ভাবে কথা বলে যাচ্ছিলাম । আমি যে খুব ভয় পাইছি এমন একটা ভাব ধরলাম । জীন চাচা বলল - মা জননী তোমার স্বামী কোথায় । আমি জীন চাচার সাথে একটু মজা করার জন্য বললাম-
-- জীন চাচা ও তো বিদেশ থাকে। আমেরিকায় । শুধু ডলার পাঠায় কিন্তু দেশে আসে না। কিন্তু গত
কয়েক মাস যাবত ডলার পাঠাচ্ছে না।
-- কোন চিন্তা করিও না মা। আমি তোমার স্বামী কে দেশে আনার ব্যবস্তা করে দেব ।
-- জীন চাচা সত্যি আসবে তো
-- হ্যাঁ মা জননী আলবৎ আসিবে । কিন্তু মা তোমার স্বামী কে এক বিদেশী যাদু করেছে । সব টাকা ঐ
মহিলার পিছনে খরছ করছে ।
-- এখন আমি কি করব জীন চাচা
-- মা জননী আল্লাহর উপর ভরসা রাখ । আমি আগামী ৭ দিনের মধ্য তোমার অবাধ্য স্বামী কে তোমার
বাধ্যগত স্বামী বানিয়ে পাঠিয়ে দিব।
-- সত্যি জীন চাচা । আমার বিশ্বাস হয় না।
এদিকে আমার স্বামী হাসতে হাসতে পাশের রুমে চলে গেল । আর জীন চাচা বলতে লাগলো
-- মা জননী কিছু মনে নিও না । সব কাজ করতে হাদিয়া লাগে ।
-- চাচা কত হাদিয়া লাগবে । আপনি টাকার চিন্তা করবেন না। আমার কাজ টা করে দেন । জীন চাচা আমার কাজ টা করে দিতে রাজি হল । হাদিয়া চাইল এক লক্ষ এক টাকা আমি রাজি হলাম টাকা দিতে ।
এবার জীন চাচা বলল- মা জননী আমার এই নাম্ভার এ বিকাশ করলে হবে ।
আমি বললাম জীন চাচা আপনাদের দেশে ও কি বিকাশ চলে।
-- না মা জননী , আমি নিজেই মানুষের রুপ ধারন করে- তোমাদের মুল্লুক থেকে টাকা তুনে নেব ।
এখন আমি হাসিয়া বলিল্যা-জিন চাচা আপনি যদি মানুষের রুপ ধারন করে বিকাশ থেকে টাকা নিতে পারেন । তাহালে দয়া আমার বাসায় আসিয়া নিয়া জান । এই কথা বলা মাত্র আমাকে বলল- বেয়াদব মূর্খ বিকাশ করিতে না পরিলে আগেই বলিতে । শুধু শুধু আমার টাইম নষ্ট করিলে।
আমার স্বামী ফোন টা হাতে নিয়ে জীন চাচা কে বলল- চাচা আমি চলে আসছি আপানাকে আর কষ্ট করিতে হবে না। তার পর এই যে ফোন বন্ধ হল এখন পর্যন্ত জীন চাচার ফোন বন্ধ............।

0 comments:

Post a Comment